

শনিবার ● ২৬ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ২৬ বছরে দু’পক্ষের ৯জনের মৃত্যু।।
২৬ বছরে দু’পক্ষের ৯জনের মৃত্যু।।
” হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জের নোয়াগড়ে ট্রলি আটক নিয়ে দু’পক্ষের ৩ ঘন্টা সংঘর্ষে অর্ধশত আহত ”
আকিকুর রহমান রুমন::
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ৩ নং জলসুখা ইউনিয়নের নোয়াগড় গ্রামে ধান বোঝাই এক ট্রলি গাড়ি আটক করা নিয়ে দু’পক্ষের লোকজনের ৩ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে অর্ধশত লোকজন আহত হয়েছেন।
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে এসআই জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেন।আজমিরীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এবিএম মাঈদুল ইসলাম ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়,নোয়াগড় গ্রামের ফসলের মাঠের ধানি জমিতে পানি সরবরাহে দু’টি হাওরের জন্য দু’টি প্রজেক্টে চুক্তি ভিত্তিক কাগজে দস্তখত রেখে তাদেরকে দেওয়া হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ দিয়ে পানি সরবরাহের হাওরে (২০০ আল) কের প্রতি ৩৭০ টাকা করে চুক্তি করা রয়েছে।
এছাড়াও ডিজেল চালিত অন্য হাওরের (১০০-আল) কের প্রতি ১১০০ শত টাকা চুক্তি করে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু চুক্তির ৩৭০টাকা না নিয়ে কের প্রতি ৫/৬শত টাকা ও ১১০০শত টাকার জায়গায় ২ হাজার টাকা কের প্রতি জোরপূর্বক ভাবেই কৃষকদের কাছ থেকে আক্তার মিয়া,লতিবুর ও কামালগং এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে।
কৃষকদের কাছ থেকে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার জুনাব আলী মেম্বারের বাড়িতে মুকিত মেম্বারসহ শত,শত কৃষক ও গ্রামবাসী নিয়ে বসলে সিদ্ধান্ত হয় চুক্তির চেয়ে বেশি কেউই টাকা না দেওয়ার জন্য মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়।
২৫এপ্রিল(শুক্রবার) সকাল ৮টার দিকে লতিফুর মিয়া ও তার লোকজন তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে ধান বোঝাই একটি ট্রলি নিয়ে চালক জুলহাস বাড়ি ফেরার পথে আটক হন। এই বিষয়টি ধান মালিক আতাবুর মিয়াকে জানান চালক জুলহাস মিয়া।
ঘটনাটি তাৎক্ষনিক উভয়ের মধ্যে জানাজানি হয়ে পড়লে সকাল ৯টার দিকে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে মধ্যে বাজার আক্তার মিয়ার লোকজনের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে।
এভাবে ৪টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বাজারের দক্ষিণ,বাজারের উত্তর পশ্চিম ও মাঠের পশ্চিমের রাস্তায় দু’পক্ষের টানা ৩ ঘন্টার মতো সংঘর্ষ হয়।
পরে ১২টার দিকে পুলিশ সংঘর্ষ সামাল দিতে সক্ষম হন।
এদিকে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশত লোকজন আহত হয়ে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে,হবিগঞ্জ আধুনিক হাসপাতাল ও সিলেটে চিকিৎসা নেওয়ার খবর পাওয়া যায়।
গুরুতর টেটাবিদ্ধ রাব্বি(১৮)কোহিনুর (১৮)ওয়াহিদুল(২৫)ওয়াসিম(২৫) তছকির(৩০) সাব্বির(২০)কে সিলেট এমএজি ওসমানী ম্যাডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। উল্লেখ্য, ১৯৯৫ ইং সনে ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার জুনাব মিয়ার ভাইকে হত্যার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় নোয়াগড় গ্রামের মরণ খেলা। এভাবে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন এনামুল,মাহমুদ, সাইফুল,জিয়াউর,অমিলা,মাজেদা, ফয়েজ ও সর্বশেষ ২০২১ইং সনে দু’পক্ষের সংঘর্ষে রনুয়ারকে নিয়ে ৯জন মৃত্যু বরণ করলেন।।
তারপরও থেমে থাকেনি আধিপত্য ও ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার। আর এসবের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন এক পক্ষের আওয়ামীলীগ নেতা শাহজাহান মেম্বার ও অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপি নেতা মোঃ আক্তার হোসেনগং।
আর ওদের এই নেতৃত্ব এবং ক্ষমতার দাপটে ১৯৯৫ইং থেকে শুরু করে ২০২১ইং পর্যন্ত গ্রামবাসীর মধ্যে দুটি পক্ষ হয়ে ২৬টা বছরে ৯ জনের প্রানহানীসহ হাজারো গ্রামবাসী আহত হয়েছেন সেইসব সংঘর্ষের ঘটনায়। আবার অনেকেই আহত হয়ে পুঙ্গত্ব বরণ করে দিনাতিপাত করছেন।
অন্যদিকে সংঘর্ষে নিহত ৯টি হত্যার ঘটনায় তাদের পরিবারের পক্ষ হতে হত্যাকারী ও সহযোগী আসামী করে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয় একের পর এক করে সংঘর্ষে নিহত হওয়া ৯টি পরিবারের লোকজন।
এসব বিষয়ে আরও জানাযায়,উভয় পক্ষের দীর্ঘ ২৬ বছর মামলা লড়াই করে ৮টি মামলা মিমাংসা হওয়ার কথাটি নিশ্চিত করা হয় পরিবারের সদস্যগন।
বর্তমানে রনুয়ার হত্যার মামলাটি বিচার পক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন।
বিষয়: #জন #দু'পক্ষ #বছর #মৃত্যু
