শুক্রবার ● ১৪ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিকাশের প্রতারণা পর এবার চুরি দায়ে গণপিটুনি খেলেন ইবু চৌধুরী।
বিকাশের প্রতারণা পর এবার চুরি দায়ে গণপিটুনি খেলেন ইবু চৌধুরী।
নিজস্ব প্রতিনিধি:-
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে বিকাশ প্রতারণার সপ্তাহ খানেক পর এবার শ্রীমঙ্গল থেকে ছাগল চুরি করে মৌলভীবাজার নিয়ে যাওয়ার পথে আবারও জনতার হাতে ধরাশায়ী হয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হন বানিয়াচংয়ের সেই আলোচিত বিকাশ প্রতারক যুবক ইবু চৌধুরী(২৫)নামের ওই ছাগল চোর।
জনতার হাতে আটক হওয়া ইবু চৌধুরী হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং উত্তর পূর্ব ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের চতুরঙ্গ রায়েরপাড়ার মরহুম মতিন চৌধুরীর সর্ব কনিষ্ঠ পুত্র।
বৃহস্পতিবার (১৩জুন) মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সখিনা সিএনজি পাম্পের পাশের একটি ফিশারীজ এর গরু ছাগলের খামার থেকে সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে ইবু চৌধুরী তার পছন্দ মোতাবেক দু’টি ছাগল চুরি করে
মৌলভীবাজারে যাওয়ার পথে জনতার হাতে ছাগলসহ ধরাশায়ী হয়।
এসময় উপস্থিত জনতা ইবু চৌধুরীকে উত্তম মধ্যেম দিয়ে ফিশারিজ এর নিকট খামারে নিয়ে এসে আটক করে রাখেন।
এবং খামার মালিক ইবু চৌধুরীর চুরি করা ছাগল দু’টি সহকারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম”ফেইসবুকে”তার পরিচয় চেয়ে পোস্ট করেন।
এমনকি এই বিষয়টি তাৎক্ষণিক অনেকেই শেয়ার করে তার ঠিকানা জানতে পারেন।
পরে ইবু চৌধুরীর আত্মীয় স্বজন তাদের সাথে যোগাযোগ করেন।
এবং বিকেল প্রায় ৩টার দিকে তার আত্বীয় স্বজন শ্রীমঙ্গল উপস্থিত হয়ে ইবু চৌধুরিকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান বলে জানান মালিক পক্ষের লোকজন।
উল্লেখ্য,২জুন আজমিরীগঞ্জ বাজারের এক বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ীর দোকান থেকে একটি নাম্বারে ২০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এই প্রতারক ইবু চৌধুরী।
এ সময় বাজারের আগত জনতা ইবু চৌধুরীর পাছনে পাছনে দৌড়ে দাওয়া করে তাকে ধরতে সক্ষম হন।
এসময় উৎসুক জনতার হাতে গনধোলাইয়ের শিকার হয় ইবু চৌধুরী।
পরে তাকে ধরে নিয়ে আসা হয় বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ীর দোকানে।
তাৎক্ষণিক এই দোকানে ও আশপাশে শত,শত লোকজন জুড়ো হতে থাকেন এক নজর দেখার জন্য।
এসময় তার পরিচয় জানার এবং এই ২০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম”ফেইসবুকে”
মুহূর্তের মধ্যে বিষয়টি তার পরিবারের লোকজনসহ আত্বীয় স্বজন জানতে পারেন এবং ভিডিওটি তাৎক্ষণিক ভাইরাল হয়ে পড়ে।
এবং এই বিকাশ প্রতারক ইবু চৌধুরীর আরও এমন কর্মকান্ডের তথ্য উপাত্ত আসতে থাকে।
সে বানিয়াচং উপজেলার সদরের বড়বাজারের কয়েক ব্যবসায়ী,
কামালখানী সাড়ং বাজারের এক ব্যবসায়ী ও বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পয়েন্টের এক ব্যবসায়ীর দোকান থেকে সেইভ ভাবে টাকা পাঠিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পরে।
পরে পরিবারের লোকজন থাকে উক্ত দোকান গুলোর টাকা পরিশোধ করে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।
অন্যদিকে ইবু চৌধুরীর প্রতারনা ও চুরির কর্মকান্ড সম্পর্কে জানাযায়,সে দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন জুয়া”ক্যাসিনোতে”আসক্ত হয়ে এসব করে বেড়াচ্ছে।
এছাড়াও তার পরিবারের লোকজন সম্পর্কে অনেকেই জানান,তাদের পিতা মারা যাওয়ার পর ইবু চৌধুরীসহ তারা ৫টি ভাই সম্পত্তি নিয়ে প্রায়ই দাঙ্গা হাঙ্গামায় লিপ্ত হতো।
এক পর্যায়ে তারা ৫ ভাই’র মধ্যে দুটি পক্ষ হয়ে পড়ে।
এবং তাদের বড় ভাইকে মারপিট করে হাতের আঙুল পর্যন্ত দায়ের কুপ দিয়ে কেটে ফেলে।
ওদের হাত থেকে রেহাই পায়নি কলেজ পড়ুয়া একটি ছোট্ট বোন ও তাদের মা।
ছোট্ট বোনের একটি হাত পর্যন্ত ভেঙে ফেলে এই ইবু চৌধুরী ও তার পক্ষের ভাইয়েরা।
এই বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে তাদের মধ্যে মামলা মোকদ্দমা চলে আসছে।
এমনকি এই ঘটনায় ইবু চৌধুরী জেল হাজতে থেকে দীর্ঘদিন কারাভোগ করে জামিন লাভ করে।
এছাড়াও ইবু চৌধুরী বড় ভাই জেবু চৌধুরীও এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ ক্যাসিনো জুয়ায় আসক্ত হয়ে লোকজনের কাছ থেকে টাকা পয়সা মেরে দিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম অবস্থান করার খবর পাওয়া গেছে।
এই জিবু চৌধুরীর বড় ভাই বাবু চৌধুরী
বানিয়াচং উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক এ-র দায়িত্ব পালন করে আসার প্রভাব বিস্তার করে নিজে মাদক(ইয়াবা)সেবন সহকারে দালালী করার অভিযোগ রয়েছে।
এই বাবু চৌধুরী জোর পূর্বক তার পছন্দের লোকজনকে ১নং ইউনিয়নের ইউপি সদস্যদের নিকট হতে সরকারি উপহার সামগ্রী দিতে চাইলে এক ইউপি সদস্য বাঁধা দেন।
তাৎক্ষণিক বাবু চৌধুরী উপজেলা পরিষদ মাঠে শতশত লোকজনের সামনে এই ইউপি সদস্যকে শারীরিক লাঞ্ছিত করেন।
এই ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদ এর পক্ষ হতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলে,বানিয়াচং থানা পুলিশ গভীর রাতে বাবু চৌধুরীকে গ্রেফতার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করেন।
পরে দীর্ঘদিন কারাভোগ করার পর জামিন লাভ করে বাহির হয়ে আসে।
এই বাবু চৌধুরীর বড় ভাই সেবুল চৌধুরী সম্পর্কে এলাকার লোকজন জানান,সরকার দলীয় নেতা পরিচয় দিয়ে অসহায় লোকজনের সাথে নির্যাতনসহ দালালী বাটপারি এবং সুদের ব্যাবসা করে দাপটের সহিত চলাফেরা করে বেড়াচ্ছে।
এলাকার নিরীহ ব্যাবসায়ী লোকজন দেখে দেখে সুদের উপর টাকা দেয়।
এবং এসব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বছরের পর বছর ধরে লাখ,লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই সুদখোর সেবুল চৌধুরী।
আবার অনেকেই টাকার জন্য শারীরিক নির্যাতনও করে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে সেবুল চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
এমনকি রাতের আধারে একটি মোটরসাইকেলের মধ্যে পুলিশের হরণ বাজিয়ে বিভিন্ন জুয়ার বোর্ড থেকে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে হাজার হাজার টাকা উঠিয়ে যাচ্ছে।
এমনকি বিভিন্ন লোকজনকে থানার ভয়ভীতি ও মামলা মোকদ্দমার কথা বলে তাদের কাছ থেকে থানা পুলিশকে টাকা দেওয়ার কথা বলে হাজার হাজার টাকা নিজে মেরে দিয়ে থানারও দালালী করে দিনপাত করে যাচ্ছে বলেও বহু অভিযোগ রয়েছে।
এই সেবুল চৌধুরীর বড় ভাই শ্যামল চৌধুরীকে ছোট্ট ছোট্ট ভাইয়েরা মারপিট করে এবং তার হাতের আঙুল কেটে দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
বর্তমানেও তাদের সবার বড় ভাই শ্যামল চৌধুরী হবিগঞ্জের একটি ভাড়া বাসা করে স্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করে যাচ্ছেন।
বিষয়: #বিকাশ