শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Bojrokontho
শনিবার ● ১৫ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » বিশেষ » বাউল কামাল পাশা মননে ঈদুল আযহা
প্রথম পাতা » বিশেষ » বাউল কামাল পাশা মননে ঈদুল আযহা
২৩৯ বার পঠিত
শনিবার ● ১৫ জুন ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাউল কামাল পাশা মননে ঈদুল আযহা

::আল-হেলাল ::
বাউল কামাল পাশা মননে ঈদুল আযহা
“চল যাই নামাজ পড়তে ঈদুল আযহাতে
ওরে ঘরে ঘরে খুশির তুফান উঠলো সবার মনেতে।।
পড়িয়া ঈদেরী নামাজ দূর করিবো মনেরী লাজ
ঘরে তুলবো সুন্দর সমাজ বাসনা তাই মনেতে।।
ঈদুল আজহার নামাজ পড়ে বুকে বুক মিলন করে
দুঃখ ব্যথা দিয়ে ছেড়ে চলো মন সোজা পথে।।
শুনে আলাহর মহাবানী করবো তার নামে কুরবানী
মালদার আর জ্ঞানী গুনী কই সবার কাছেতে।।
গরীব মিসকীন এতিম যারা গোস্ত খাওয়ার মালিক তারা
গরীব আল্লাহর পিয়ারা লেখা নবীর হাদিসেতে।।
যত পারো জায় যাকাত তুলে দিও গরীবের হাত
তবে মমিন পাইবে জান্নাত (কবি) কামাল কয় আখেরাতে ”।।

ঈদ উল আযহা মানে আনন্দ-ত্যাগ-সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পবিত্র ঈদ উল আযহা আমাদের সামনে হাজির হয়েছে অনাবিল আনন্দ ও সুখ শান্তির বার্তা নিয়ে। মুসলিম জাতির জনক হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কে মহান আল্লাহতায়ালা স্বপ্ন যোগে তার প্রিয় বস্তুকে ত্যাগ করার আদেশ দিয়েছিলেন। মূলত স্রষ্টার এ আদেশ পালন করতে গিয়ে আল্লাহর নবী হযরত ইব্রাহিম (আঃ) আপন পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) কে বলি দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন। নিজের চোখ বেধে ধারালো ছূরি দিয়ে শিশুপুত্র ঈসমাইলের গলাকে তার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য নবী ইব্রাহিম (আঃ) বারবার ছুরি চালাচ্ছেন। কিন্তু তারপরও কোরবানি হচ্ছেন না ঈসমাইল (আঃ)। ইব্রাহিম মনে করলেন ছুরিতে ধার নেই। তাই রেগে ছুরিটিকে এক খন্ড পাথরের উপর নিক্ষেপ করলেন। পাথরটি হয়ে গেল দ্বিখন্ডিত। পরে পুত্রের পরিবর্তে কোরবানী হলো পশু। আল্লাহর জন্য পাগল (দেওয়ানা) নবী ইব্রাহিমের এহেন আত্মত্যাগের ঘটনাই কালক্রমে সমগ্র মুসলিম জাতির মাঝে কোরবানির ঈদ উৎসবে পরিণত হয়। সারা বিশ্ব ও দেশবাসীর ন্যায় এই সার্বজনীন ধর্মীয় উৎসবটি “৫ম রতœ বাউলের দেশ” সুনামগঞ্জের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে থাকেন। বৈষ্ণব কবি রাধারমন দত্ত.মরমী কবি হাছন রাজা,গানের স¤্রাট কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন),বাউল স¤্রাট শাহ আব্দুল করিম ও জ্ঞানসাগর দূর্বিণ শাহ হচ্ছেন সুনামগঞ্জের ৫ম রতœ বাউল। তাদের সকলের মধ্যমনি গানের সম্রাট বাউল কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন) নবী ইবরাহীম এর ত্যাগের ঘটনাটিকে ব্যাখ্যা করেছেন স্বরচিত মনশিক্ষা গানে।

’’আমার মন পাগলরে আমার দিল পাগলরে / ও তুই পাগল হইলে কার লাইগারে ।।
আরেক পাগল ছিলেন আমার হযরত নবী মুসা / কুহেতুরে নিয়া আল্লায় দেখাইলেন তামেশা।
আরেক পাগল ছিলেন আমার দাউদ পয়গাম্বর / আঠারো বেটা মারা পড়লো তার সজিদার ভিতররে।।
আরেক পাগল ছিলেন নামে দানবীর হাতেম তাই/ নিজের ধন পরারে দিলেন করছইন না বাদশাই।
ঈমানকে পরীক্ষার জন্য ইব্রাহীমকে বলে / বাপ হইয়া চালাইলেন ছুরী ইসমাইলের গলেরে।।”

শুধুমাত্র নিছক ধর্মীয় অনুষ্টানই নয় ঈদুল আযহা এখন আমাদের মরমী সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। অতীন্দ্রিয় তত্বকে সামনে রেখে যিনি স্বকীয় সূর তাল লয় ছন্দে কথা গাথা কাহিনী কাব্য বা গীত রচনা করেন তিনি মরমী কবি। আর তাদের রচিত সংগীত কর্মকেই মরমী সংস্কৃতি বলে। ভাটি অঞ্চলের আবহমান কালের সংস্কৃতি ও সুফিবাদ মডেলের মরমী সংস্কৃতি এখন এক ও অভিন্ন। ওলি আউলিয়া পীর মাশায়েখ সাধক সন্নাসীগণের ইশক প্রেম মহব্বত ও পবিত্র ধর্ম ইসলামের কালজ্বয়ী আদর্শের মাধ্যমে এ অঞ্চলে উভয় সংস্কৃতি একই মোহনায় মিলিত হয়ে সুফিবাদ ও আবহমান কালের ঐক্যবদ্ধ মরমী সংস্কৃতির মজবুত ভিত্তিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। আমাদের মরমী
সংস্কৃতিতে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, সাফল্য-ব্যর্থতা, আশা-হতাশা, প্রশান্তি-উত্তেজনা সহ জীবন ও জগতের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্র সম্পর্কেই আলোচনা করা হয়েছে। এতে শুধু অধর্মের কথা নেই তবে ধর্মীয় কৃষ্টি সভ্যতা আচার ব্যবহার ইত্যাদি অনেক কিছুই এ সংস্কৃতির উৎস। মূলত একারণেই বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধের
সর্বশ্রেষ্ট মিলন মেলা পবিত্র ঈদুল আযহা উৎসবও আজ মরমী সংস্কৃতির একটি প্রধান ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পাশাপাশি ধর্মের শ্বাস্বত বানী ও দৈনন্দিন অনুষ্ঠান মালার ভাল দিকগুলোকে নিয়ে ইতিবাচক ঈদ গীত রচনায় ভাটি অঞ্চলে যিনি অমর হয়ে আছেন তিনিই হচ্ছেন মরহুম বাউল কামাল পাশা। খোদাপ্রেম নবীতত্ব ছাড়াও ঈদের আনন্দ উৎসবকে নিয়ে তিনি যেসব গজল সংগীত রচনা করেছেন তা
বর্তমান বিশ্বের মরমী সংস্কৃতির এক অমুল্য সম্পদ। দুই বাংলার সংস্কৃতানুরাগীরা ঈদুল আযহার এই সংগীতগুলোকে পরিবেশণ ও উপভোগ করে স্ব-স্ব সুর তাল লয় ছন্দ মাত্রায় উৎসবের আমেজে মেতে উঠেন। তাঁকে অনুসরন করে আধুনিক কবিতায় এখন অনেকেই ঈদের মাহাত্ম্য উপস্থাপন করেন স্বগৌরবে। নামাজ রোজা ও ঈদ উদযাপন নিছক শুধু অনুষ্ঠান নয় বরং এর মধ্যে দিয়ে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভই প্রকৃত মূলমন্ত্র। পবিত্র শবেবরাত, তারাবিহের নামাজ, সেহরী ইফতার লাইলাতুল কদর, ও ঈদুল ফিতর শেষে আসে ঈদুল আযহা। কেবলমাত্র ভোগের মাধ্যমে নয় ত্যাগের মহিমায় বলিয়ান হওয়ার নামই ঈদ। এজীবন শুধু জীবন নয় মৃত্যুর পরবর্তী জীবনই আসল জীবন। তাই দুই জীবনের জন্য কিছু করতে পারাটাই চরম সার্থকতা। আর এজন্য নামাজ রোজা পালন ও কোরবানিসহ ধর্মীয় ইবাদত বন্দেগীর কোন বিকল্প নেই। মূলত এ দৃষ্টিভঙ্গিকে সামনে রেখে
হেদায়েতের পথে সকল মুসলমানকে আহবান জানিয়েছেন গানের ওস্তাদ অগ্রজ বাউল শিল্পী সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের কৃতিসন্তান ঐতিহাসিক নানকার আন্দোলনের বিপ্লবী নায়ক, ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের মহাণ সংগঠক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সাংস্কৃতিক সহকর্মী গণসংগীত শিল্পী গানের সম্রাট কামাল উদ্দিন ওরফে কামাল পাশা। মৃত্যুভয় জাগানোর মধ্য দিয়ে রসুল (সাঃ) এর দেখানো সরল পথে আলোকিত জীবন অনুসরনের জন্য তিনি গেয়েছেন,“কবরেতে কবরেতে শুয়াইবে গহীন জঙ্গলে গো বুঝিবে মরিলে/ভাবনা তোমার নাই গো চিন্তা তোমার নাই গো বুঝিবে মরিলে।। নামাজ রোজা ছাইরা দিয়া মদ গাজা খাইলে/নামাজ রোজা সঙ্গের সাথী কি ধন দিবে চাহিলেগো।। যারে লইয়া রঙ্গ রসে এক বিছানায় শুইলে/দূরেতে সরিয়া যাইবে দুই চক্ষু মুজিলেগো।। সু-পথও ছাড়িয়া কেন কুপথে ঘুরাইলে/আসবে সমন করবে গমন আজরাইল আসিলেগো।। কবি কামাল বলেন ঠেকবে ফুলসিরাতের পুলে/কাটিয়া কাটিয়া পড়বে দুজখের অনলে গো।।”

কামাল উদ্দিন একজন রোমান্টিক কবি। বিষয়বস্তুকে সরাসরি দিক নির্দেশিত না করে রূপক অর্থে ব্যবহার করে তিনি তার গান ও কবিতায় আসল সত্যকে তুলে ধরে কিংবদন্তি হয়ে আছেন। ঈদ আসে ঈদ যায় রংঙ্গেরই দুনিয়ায় মানুষকে চেনা বড় দায়। ঈদ শুধু শুধু ধনকুবেরদের জন্য নয় বরং ধনী গরিব সকলের জন্য। তাই যারা বিত্তবান তাদের ধন সম্পদের উপর অধিকার রয়েছে রিক্ত নিঃস্ব সর্বহারা দরিদ্র মানুষদের। ধনীরা আজীবন ধনী থাকেন না। ধন দৌলত কারও স্থায়ী সম্পদ নয়। প্রকৃত হকদারদের মধ্যে এই আমানত বিলিয়ে দিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করার মধ্যে ঈদের তাৎপর্য নিহিত। তাইতো ঈদ উৎসবে আনন্দের প্রত্যাশি ভালবাসার কাঙ্গাল ভাবুক কবি কামাল পাশার ইতিবাচক কণ্ঠে ধ্বনীত হয়, “ঈদ আনন্দে সাজও বন্ধু রঙ্গিয়ারে বন্ধু তুই বড় কঠিন/আজ কেন আমারে বাসো বিন।। ও বন্ধুরে কার্ত্তিক মাসেতে ধানে ধরে খাটি রং/সন্তানের ভার মাথায় লইয়া অগ্রহায়নে মরন। কুল যুবতীর এমনি রীতি রূপ থাকে তার কয়েক দিন।। ও বন্ধুরে নিহরের পানি পড়ে বাঁশে ছাড়ে পাতা/আপন মনে নির্জরেতে সর্পে লয়রে ঘাতা। তুমি যেমনি চালাও তেমনি চলি দূঃখ কষ্টে যায় মোর দিন।। ও বন্ধুরে বারিষার আগমনে ব্যাঙ্গের কত রং/আপন মনে মুর্ছাঘাতে করে কত ঢং। আষাঢ়ে শান্তির ভবে জলছাড়া হইয়াছে মীন।। ও বন্ধুরে সন্ধ্যা কালে সূর্য্য সাজে সিন্দুরের রঙ ধরে/সূর্য্যরে তেজে সাগর শোষে ঝিলমিল ঝিলমিল করে। মরন কালে দেও
সাজাইয়া কান্দিয়া কয় কামাল উদ্দিন।।” ঈদ এলেই বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো সপ্তাহ ব্যাপী ভিন্ন বৈচিত্র্যময়
অনুষ্ঠানের পসরা সাজায়। বিশেষ অনুষ্ঠানের আওতায় বছরের পর বছর এসব চলচ্চিত্র নাটক ও ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান প্রত্যেক্ষ করলেও বাঙ্গালী শ্রুতা দর্শকরা নতুন করে কোন বিশেষ আনন্দ উপভোগ করেন বলে মনে হয় না। তাছাড়া এতে শহরের প্রিয় পরিচিত মুখগুলোই দর্শক চোখে ভেসে উঠে। অথচ স্বাধীনতা লাভের পূর্ববর্তী সময়ে ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে গ্রামে গঞ্জে স্থানীয় বাউল শিল্পীদের পরিবেশিত বাউল গান ও মালজোড়া গান শ্রুতা দর্শকরা গভীর আগ্রহ ভরে উপভোগ করতেন। এক গ্রামের একটি কলের গানের সেটের সামনে বসে দাড়িয়ে শত শত শ্রুতা দর্শকরা শুনতেন তাদের প্রিয় দেশী বাউলা গান। সে সময় “ঈদ আসিলরে বড় খুশির ঈদ/মাঠে হইবে জমাট যতসব মমিন ও ভাই ঈদ আসিলরে॥ সকালবেলা গোসল করে জামাতে সব যায়। দুই রাকায়াত নামাযের পরে ইমামে খোৎবা শোনায়।। ঈদের নামায পড়ে সবে বুকে বুকে মিলে। ঈদের নামায হইবে বাতিল হিংসা রাখিলে। বাড়িতে আসিয়া সবাই কোরবানি করে। কেউ গরু কেউ ছাগল মহিষ কত জনে।। কোরবানির ঈদের অপর নাম ঈদুল আযহার। ত্যাগ-সম্প্রীতির ভালোবাসায় জীবন জাগাবার।। আলাহু আকবার বলে কয় লিল্লাহীল হামদ। মুসলমানে বলা সুন্নত এ কামাল কইলাম।। ” এবং “ঈদের দিনে পূরস্কার পাবে যত রোজাদার/শপথ করিয়া বলছেন আল্লাহ পরোয়ার” ইত্যাদি কামাল সংগীতের জনপ্রিয়তা ছিল গগনচুম্বি। ইদানিং “ঈদের চাঁদ উঠিলরে রমজানের রোজার পরে/একে অন্যে ঈদ মোবারক জানায় ঘরে ঘরেরে।। ঈদ শব্দ হইল খুশি মিলে সব প্রতিবেশী/ একে অন্যেরে ভালবাসি বুকে বুক মিলন করেরে।। পড়ে সবে ঈদের নামাজ সুন্দর করে গড়ে সমাজ/তাতে নাই কোন লাজ দেখনা চিন্তা করেরে।। যারে বলে ঈদুল ফিতর কামালে কয় হাদিসে খবর/বলতেছি সবারই গোচর শুন কর্ণ ভরেরে”এসব জনপ্রিয় কামাল সংগীত গুলো আর সচরাচর শুনা যায় না। কিন্তু বিলুপ্ত হওয়া এই বাউল গানগুলোই গরীব মানুষের পক্ষে শ্রষ্টা ও বিত্তবানদের কাছে প্রানের আবেদন প্রতিষ্টিত করতো। সকলে মিলে পরিবেশন করতো “দয়াময় নামটি তোমার গিয়াছে জানা/যারা গরীব হয় তারা কি তোমার নয়/ তবে কেন দয়াময় তোর দয়া হয়না।। কেহ ভিক্ষা করে ফিরে দ্বারে দ্বারে/ তব নাম স্মরন করে নাম ভুলেনা। হলে দারুন ব্যধি মিলেনা ঔষাধি/ দারুন বিধিগো তোঁর বাও বুঝিনা।। ল্যাংরা লোলা কানা তোমার সৃজন সবজনা/ তুমি বিনে এ ভুবনে নাই আপনজনা। সবে ডাকে তোঁমারে তুমি শুন কর্ণভরে/ তাদের প্রতি কেন তোমার দয়া হয়না।। কেউরে দিলায় বাদশাহী কেউ শাহানশাহী/ কেউ মুসাফির রাহি গাছতলায় ঠিকানা। দিনওহীন জনে ডাকে আকুল প্রাণে/ দুঃখের আগুনে একটু জল ছিটাওনা।। করিম রহিম তোমার নাম রহম করা তোমার কাম/ অধম জানিয়া তুমি দয়া করোনা। হে দিনবন্ধু দয়া করো একবিন্দু/ কাজে আলাহ ধনীর বন্ধু গরীবের হইলোনা।। কয় কামাল উদ্দিন জেনে আমায় দীনওহীন/ বাসিওনা আমায় বিন জানাই প্রার্থনা। জীয়নও মরনে রাখো রাঙ্গা চরনে/ তুমি বিহনে কেউ নাই আপনজনা”।। আকাশ সংস্কৃতির ব্যাপক প্রসার ঘটলেও বিলুপ্তির অতল গহ্বরে এই ইতিবাচক সম্প্রীতির গানগুলো আজ হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতিতে পল্লী মায়ের ঐ গান গুলো নিঃসন্দেহে সর্বত্র প্রাণের সাড়া জাগাতে পারে।

পরিশেষে আমার সবিনয় নিবেদন একদিন বা দু’দিনের জন্য নয় অথবা কেবলমাত্র ঈদ পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং ঈদ উৎসবের আনন্দকে আমরা যেন সারা জীবনের জন্য ধরে রাখি। অডিও ভিডিও
সিডি তথা আকাশ সংস্কৃতিতে যাদের স্বরচিত গীত শুনে ও দেখে আনন্দ উপভোগ করি তাদের সম্পর্কে যেন জানতে এবং কিছু করার চেষ্টা করি। কারণ বাংলার লোক সংস্কৃতির কত অমূল্য সম্পদ কালের গর্ভে আজ বিলীন হয়ে গেছে। এই অবক্ষয়ের মাঝে কামালগীতি সহ সকল প্রয়াত সংগীত স্রষ্টাদের লোক সংস্কৃতিকে ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থেই সংরক্ষন করতে হবে। এজন্য সাংবাদিক ও সংস্কৃতানুরাগীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য্য। মরমী সংস্কৃতির প্রচার প্রসার ও অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা উদযাপনের মধ্যে দিয়ে বাঙ্গালী জাতি
হিসেবে একই আনন্দে উজ্জীবিত হয়ে আমরা সকলে মিলে এক শোষণহীন সাংস্কৃতিক সমাজ কায়েম করতে পারলেই আমাদের এ প্রচেষ্টা সফল ও সার্থক হবে। উল্লেখ্য “দ্বীন দুনিয়ার মালিক খোদা এত কষ্ঠ সয়না/ তোমার দ্বীলকি দয়া হয়না,তোমার দ্বীলকে দয়া হয়না এবং প্রেমের মরা জলে ডুবেনা/ও প্রেম করতে দুইদিন ভাঙ্গতে একদিন ওমন প্রেম আর কইরোনা দরদী ”সহ দেশ বিদেশে সমাদৃত একাধিক গানের গীতিকার বাউল কামাল পাশা দীর্ঘ সাধনার জীবনে প্রায় ৬০০০ গান রচনা করেছেন। তার তাত্বিক গানের প্রশংসায় পঞ্চমুখর সাবেক
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদ,সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত,সাবেক এমপি আলহাজ্ব মতিউর রহমান,একুশে পদকে ভূষিত বাউল শিল্পী শাহ আব্দুল করিম ও শিল্পী ওস্তাদ রামকানাই দাশ যারা অত্যন্ত কাছে থেকে এই মহান সাধককে সাধনা করতে দেখেছেন। ২০১১ইং সনের ১৬ জুলাই সুনামগঞ্জের শহীদ আবুল হোসেন মিলনায়তনে দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলন ২০১১ ইং এর আওতায় দেশের মরমী সংস্কৃতিতে অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ বাউল কামাল পাশাকে মরনোত্তর সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়। দৈনিক ভোরের কাগজ ও দিনের শেষে পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত এর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত ঐ সম্মেলনে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান এমপি,মৌলভীবাজার সদর আসনের এমপি সৈয়দ মহসীন আলী,সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার এন এম জিয়াউল হক ও সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বাউল কামাল পাশার সঙ্গীত কর্মের উপর বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন। বাউল কামালপাশা ১৯০১ ইং সনের ৬ ডিসেম্বর জন্মগ্রহন করেন। প্রায় ৬ হাজার গানের রচয়িতা এই মরমী কবি ১৯৮৫ ইং সনের ৩রা মে মোতাবেক ২০ বৈশাখ গ্রামের বাড়িতে পরলোক গমন করেন। পরিশেষে বাংলা ও ভারতের চলচ্চিত্রে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই মহান মরমী কবির সৃষ্টিতত্ত্ব গানটি উপস্থাপনের মাধ্যমে আলোচ্য প্রতিবেদনের ইতি টানলাম।

“দ্বীন দুনিয়ার মালিক খোদা এত কষ্ট সয়না
তোমার দিলকী দয়া হয়না,তোমার দিলকে দয়া হয়না।।
সব কথায় যার ব্যাথায় ভরা কোন কথা সে বলবে
সব পথে যার কাটায় ঘেরা কোন পথে সে চলবে।
কাটার আঘাত সয় যার বুকে ফুলের আঘাত সয়না।।
বাতি ছাড়া এ রংমহল ঘর রুশনেআলা হয়না
আজকে বাদশাহ কালকে ফকির সমানে দিন যায়না
তুমি সব দিয়া যার সব কেড়ে নাও তাতো প্রাণে সয়না।।
যুগ যুগান্তর যে তোমারে করে এতই পছন্দ
কোন ধর্মে কোন মর্মে তারে বলে মন্দ।
বাউল কামাল শুনে হয় আনন্দ,তোমায় কিছু কয়না ”।।

লেখক ঃ আল-হেলাল গীতিকার,বাউল শিল্পী,সাংবাদিক ও লোকগীতি, সংগ্রাহক এবং সম্পাদক গীতিগ্রন্থ “গানের সম্রাট কামাল উদ্দিন”, সুনামগঞ্জ,



বিষয়: #  #  #  #  #


বিশেষ এর আরও খবর

যথাযোগ্য মর্যাদায় নৌ অঞ্চলসমূহে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন যথাযোগ্য মর্যাদায় নৌ অঞ্চলসমূহে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন
অসুস্থ রেজওয়ানুল ইসলাম রায়হানের শয্যাপাশে দুধরচকী অসুস্থ রেজওয়ানুল ইসলাম রায়হানের শয্যাপাশে দুধরচকী
হযরত  তালহা (রাঃ) কথা শুনে আল্লাহর রাসুল(সা.) দরদর করে কেঁদে ফেলেন! হযরত তালহা (রাঃ) কথা শুনে আল্লাহর রাসুল(সা.) দরদর করে কেঁদে ফেলেন!
হেক্সাসে চালু হলো ব্রিটিশ কাউন্সিল আইইএলটিএস রেজিস্ট্রেশন কর্ণার হেক্সাসে চালু হলো ব্রিটিশ কাউন্সিল আইইএলটিএস রেজিস্ট্রেশন কর্ণার
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করলো গ্রামীণফোন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করলো গ্রামীণফোন
লুটনে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ স্মরণে “সবার প্রিয় রাণী যে তুমি” প্রথম  বাংলা গান নিয়ে  আলোচনা অনুষ্ঠান লুটনে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ স্মরণে “সবার প্রিয় রাণী যে তুমি” প্রথম বাংলা গান নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান
বিশ্বনবীর প্রতি হজরত সাদ ইবনে মুয়াজের ভালোবাসা ও আবেগ! বিশ্বনবীর প্রতি হজরত সাদ ইবনে মুয়াজের ভালোবাসা ও আবেগ!
‘নেক্সট জেনারেশন বাংলাদেশ’ গবেষণা সিরিজের ফলাফল প্রকাশ করলো ব্রিটিশ কাউন্সিল ‘নেক্সট জেনারেশন বাংলাদেশ’ গবেষণা সিরিজের ফলাফল প্রকাশ করলো ব্রিটিশ কাউন্সিল
চীনরে বাজারে অত্যাধুনকি প্রযুক্তি পণ্য উন্মোচন করল শাওমি চীনরে বাজারে অত্যাধুনকি প্রযুক্তি পণ্য উন্মোচন করল শাওমি
ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি শক্তিশালী করতে কৃষকের জন্য আইফার্মার নিয়ে এলো “ফার্মার কার্ড” ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি শক্তিশালী করতে কৃষকের জন্য আইফার্মার নিয়ে এলো “ফার্মার কার্ড”

আর্কাইভ

--- --- --- --- --- আমি কয়েকটি লাইভ স্ট্রিমিং টক শো করব এবং আপনাদের সবাইকে আমার “কারেন্ট” অ্যাফেয়ার্সে অতিথি হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে চাই! আপনি কি আমার টক শোতে থাকতে আগ্রহী হবেন? --- বাঙ্গালী সাজে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বিদেশিনী! ???? --- ফেনী ও হবিগঞ্জে ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে কোস্টগার্ড। যোগাযোগ করুন ::- ফেনী:- ০১৭৬৯৪৪২৯৯৯,০১৭৬৯৪৪২৫৯১ , হবিগঞ্জ: - ০১৭৬৯৪৪১৯৯৯,০১৭৬৯৪৪১৩৩৩ --- আপনাদের লেখা আমাদের অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশ বা প্রচার করতে চান ? ই-মেইল ঠিকানা:: [email protected] ---

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
নবীগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা নাজিমের মামলায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক সাইফুল সহ ২জন জেল হাজতে
নতুন প্রেরণা বুকে নিয়ে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ঘুরে দেখলেন দর্শনার্থীরা
ড. ইউনূসের ৬ মামলা বাতিল করলেন হাইকোর্ট
ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র বিজয়নগর থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ জন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও মাধবপুর এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও গাঁজা সহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে র‌্যাব-৯ এর খাঁচায়
রানীগঞ্জ সেতুতে আলোচিত সিএনজি চালক সুজিত হত্যা মামলার ৩ আসামীকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে গাড়ি চালক হত্যা-কান্ডে জড়িত তিনজন গ্রেফতার,সিএনজি উদ্ধার।।
সিমেন্ট কারখানায় সিবিএ নেতা আব্দুল কদ্দুছ টাকার মেশিন!
১দিনের জিজ্ঞাসাবাদ জেলগেটে রেখাছ মিয়া…
সশস্ত্র বাহিনী দিবসে মোংলায় উন্মুক্ত রাখা হবে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ
দৌলতপুরে র‌্যাবের অভিযানে বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার।
দৌলতপুরে প্রবাসীর স্ত্রীর জমি দখলের অভিযোগ
“বুড়ি ডাকুয়া বিল’ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ইউএনও বরাবর দরখাস্ত
সিলেটের ওসমানীনগরস্থ সৈয়দপুর থেকে ১১,২৩৫ পিস ইয়াবা ও একটি কার সহ ১ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯
‘কথায় কথায়’ ঘুষ নেন বিদ্যুতের প্রকৌশলী, টাকা ছাড়া এখানে সেবা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা
সুনামগঞ্জে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা
চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে কোস্টগার্ডের অভিযানে ১৬ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ
রাণীনগরে বিএনপি নেতার ইন্তেকাল
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অফ গভর্ণর মনোনীত
নিষিদ্ধ সংগঠন সিলেট ছাত্রলীগের রাকিবুল ও মিঠুনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯
ব্রিকলেন মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে পূর্বলন্ডনের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহ মদরিছ আলী গার্ডেন অব পিসে সমাহিত
শাহপরীর দ্বীপে কোস্টগার্ডের অভিযানে ২ লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ
দৌলতপুরে বিদ্যুৎস্পর্শে শ্রমিকের মৃত্যু
দৌলতপুরে স্থায়ী বাধ নির্মানের দাবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মানববন্ধন
নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর প্রাণেশ দেব এর ভাই ও মা এর বিদ্যুৎ পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু।।
হবিগঞ্জের চাঞ্চল্যকর পান্না হত্যা মামলার প্রধান আসামী মান্নাকে ঢাকা থেকে র‌্যাব-৯ ও র‌্যাব-৪ এর যৌথ অভিযানে গ্রেফতার
ছাতকে ফেন্সিডিল ব্যবসায়ি জেল-হাজতে
দেশীয় অস্ত্রসহ কুখ্যাত ডাকাত জিয়া বাহিনীর প্রধানসহ দুইজন আটক
জামালগঞ্জে আগাম লাউ চাষে সফল নারী মর্জিনা
হ্নীলা ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান