বুধবার ● ১৯ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » বিশেষ » কোকাকোলাকে পেছনে ফেলে ৪০ বিলিয়ন ডলার ছোঁবে গাঁজা শিল্প
কোকাকোলাকে পেছনে ফেলে ৪০ বিলিয়ন ডলার ছোঁবে গাঁজা শিল্প
মার্কিন গাঁজা শিল্প ২০২৪ সালেই ৪০ বিলিয়ন ডলার ছোঁবে, যা ২০১৬ সালে বৈধকণের শুরুর দিকে মাত্র ৭.৬ বিলিয়ন ডলার ছিল। আর ২০২৮ সাল নাগাদ তা ৬৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, সর্বশেষ ২০২৩ অর্থবছরে বিশ্বব্যাপী কোকা-কোলার আয় ছিল প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলার। এখন পর্যন্ত গাঁজা শিল্প থেকে আয় যুক্তরাষ্ট্রের চকলেট শিল্পের দ্বিগুণ এবং বিশ্বব্যাপী কোকা-কোলার মোট আয়ের কাছাকাছি। সে হিসেবে কোকা-কোলাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান গাঁজা শিল্প। কোকা-কোলার মোট আয়ের এক তৃতীয়াংশই আসে উত্তর আমেরিকা থেকে। ২০২৩ সালে কোকা-কোলার ব্র্যান্ড ভ্যালু ছিল মোট ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই গাঁজা অবৈধ। হাতেগোনা কয়েকটি দেশে ক্যানাবিসকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
চিকিৎসাজনিত ও বিনোদনের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যে গাঁজা-মারিজুয়ানার ব্যবহার এখন বৈধ। নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো, শিকাগো এবং আটলান্টার রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটলেই আপনার নাকে আসবে গাঁজার ধোঁয়ার গন্ধ।
বিনোদনের জন্য কলেরাডো রাজ্যে এক দশক আগে গাঁজাকে বৈধতা দেয়ার পর থেকে অন্যান্য রাজ্যগুলোও গাঁজার প্রতি সহনশীল হতে থাকে। একে একে ৪০টি রাজ্যে চিকিৎসার জন্য এবং ২৪টি রাজ্যে বিনোদনের জন্য গাঁজাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রথমবারের মতো এ বছরই যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি দিনের গাঁজার ব্যবহার অ্যালকোহলকে ছাড়িয়ে গেছে। চার দশক ধরে ন্যাশনাল সার্ভে অন ড্রাগ ইউজ অ্যান্ড হেলথের সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে অ্যাডিকশন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক গাঁজা সেবন করেন এমন মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় এক কোটি ৭৭ লাখ। এ সময় দৈনিক মদপানকারীর সংখ্যা ছিল এক কোটি ৪৭ লাখ। এ তথ্যানুসারে আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গাঁজাসেবীরা মদপানকারীদের টপকে গেছে।
গাঁজা বৈধকরণ অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই বয়ে এনেছে সুফল। গাঁজার বেচাকেনাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি, রাজস্বও আসছে প্রচুর।
স্ট্যাটিস্তার তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন গাঁজা শিল্প ২০২৪ সালেই ৪০ বিলিয়ন ডলার ছোঁবে, যা ২০১৬ সালে বৈধকণের শুরুর দিকে মাত্র ৭.৬ বিলিয়ন ডলার ছিল। ২০২৮ সাল নাগাদ তা ৬৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টাকার হিসেবে এটা আসলেই একটা বড় অর্জন।
অন্যদিকে, সর্বশেষ ২০২৩ অর্থবছরে বিশ্বব্যাপী কোকা-কোলার আয় ছিল প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলার। গাঁজা শিল্প থেকে সম্ভাব্য আয় (৪০ বিলিয়ন ডলার), যুক্তরাষ্ট্রের চকলেট শিল্পের দ্বিগুণ এবং বিশ্বব্যাপী কোকা-কোলার মোট আয়ের কাছাকাছি। কোকা-কোলার মোট রাজস্ব ২০০৭ সালে ২৮ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০১২ সালে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল। প্রতিষ্ঠানটির মোট আয়ের এক তৃতীয়াংশই আসে উত্তর আমেরিকা থেকে। ২০২৩ সালে তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু দাঁড়ায় মোট ৯৮ বিলিয়ন ডলারে।
বিভিন্ন রাজ্যে গাঁজার বৈধকরণের পর থেকে বিলিয়ন ডলারের এ শিল্প থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখযোগ্য হারে রাজস্ব আদায় করছে।
২০১৪ সালে, রাজ্যগুলো ওষুধি গাঁজা থেকে প্রায় ৭০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। অন্যান্য কিছু রাজ্যও গাঁজার বৈধতা দেয়ায় ২০২৩ সালের মধ্যে আয়ের পরিমাণ এক লাফে ৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
ভালো মুনাফা হওয়ায় গাঁজার পণ্য প্রচারে খুব একটা ইতস্তত বোধ আর কেউ করে না, বিশেষত এই শিল্পটি যেহেতু সারা দেশে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে।
পরিমিত গাঁজার ব্যবহার কঠিন ড্রাগ, অ্যালকোহল এবং তামাকের তুলনায় শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ।
বিষয়: #কোকাকোলা #গাঁজা #ডলার #বিলিয়ন #শিল্প