সোমবার ● ১ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » সাহিত্য ডাইরি » গল্প:- কাঁচের চুড়ি
গল্প:- কাঁচের চুড়ি
২ টি যমজ শিশু কোলে নিয়ে শাহানা তড়িৎ গতিতে হাঁটছে।তার স্বামী আসার আগেই চলে যেতে হবে ষ্টেশনে। সেখানে আহসান অপেক্ষা করছে তার জন্য। আহসান তার বাল্য কালের প্রেমিক। কিন্তু,সতেরো বছর হতে না হতেই শাহানার বাবা শাহানা কে বিয়ে দিয়ে দিলো ১ স্কুল মাস্টারের কাছে।তখন আহসান কোন কাজ করতো না বিধায় শাহানা তার সাথে পালিয়ে যেতে পারেনি। কিন্তু,এখন তাহসান শহরে বেশ ভালই ১টা চাকরি করে।যদিও, শাহানা এখন ২ সন্তানের জননী তবুও আহসান এখনো শাহানা কে গ্রহন করতে রাজি।তবে, আহসান কোনোমতেই বাচ্চা দুটোকে মেনে নেয়ার পক্ষে নয়।সে শাহানাকে একা আসতে বলেছে। কিন্তু,শাহানা তার পারেনি।সে তীর আর তরীকেও সঙ্গে নিয়ে এসেছে।তার ধারনা ছিল,সে অনুরোধ করলে আহসান বাচ্চাদেরও সাথে নিবে। কিন্তু,এমনটা হলো না।বাচ্চাদের দেখে আহসান মেঘস্বরে চিৎকার করে উঠল।সে সাফ জানিয়ে দিলো, শাহানা যদি তার সাথে সংসার করতেই চায় তাহলে একা যেতে হবে, বাচ্চাদের রেখে।
অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়েও আহসানকে রাজি করতে না পেরে শাহানা অবশেষে বাচ্চাদের ফেলে যাওয়ার সিদ্ধান্তই নিলো। শুধু বাচ্চাদের মুখের দিকে চেয়ে কেন সে তার জীবন নষ্ট করবে?এই ২ পয়সার স্কুল মাস্টার কোনো দিন তার মন বুঝেনি। পছন্দের কিছু কিনে দিতে পারেনি।দিন আনে দিন খায় টাইপ অবস্থা আবার এই লোকের বুদ্ধি-শুদ্ধিও নেই বললেই চলে।এর সাথে শাহানা বাকি জীবন কিভাবে কাটাবে।
তাই,তীর আর তরীকে ষ্টেশনে থাকা ১ পৌঢ়া মহিলার কাছে কিছু ক্ষন রাখার কথা বলে তারা ট্রেনে উঠে চলে গেলো নতুন গন্তব্যে। ততক্ষণে তীর আর তরীর ঘুম ভেঙ্গে গেছে।তারা, আশেপাশে মা-কে দেখতে না পেয়ে পাল্লা দিয়ে কাঁদছে।পৌঢ়া মহিলাটিও কি করবে বুঝে উঠতে পারছিলেন না।এমন সময় একজন পরিচিত লোক বাচ্চাদের দেখতে পেলো।এবং,সে-ই সবটা শুনে ওদের বাবার কাছে ফোন করলো।
তীর আর তরীর বাবা জামান ইসলাম প্রচার পেশায় ১ জন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক।তার পুরো জীবন জুড়েই রয়েছে স্ত্রী-পুত্র-কন্যা।স্ত্রী শাহানা তাকে বাজার করতে পাঠিয়েছে হাতে ১ টা লিস্ট ধরিয়ে। কিন্তু,জামান ইসলাম লক্ষ্য করলেন লিস্টের অনেক কিছুই তিনি কয়েক দিন আগেই কিনেছেন।তাহলে, হঠাৎ আবার সেইম জিনিস আনতে বললো কেন কে জানে?বাজার শেষে তিনি ২ ডজন কাঁচের চুড়ি কিনলেন। শাহানা কে তিনি কিছুই কিনে দিতে পারেননা। যদিও, তার সবসময়ই মন চায় পুরো বাজারটাই কিনে ঘরে নিয়ে যেতে।
তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।এমন সময় ই হঠাৎ একজন কল করে বললো,তার ছেলেমেয়েকে নাকি রেল ষ্টেশনে পাওয়া গেছে। তিনি কিছুই বুঝতে পারলেন না।তবুও, ছুটে গেলেন ষ্টেশনে। ততক্ষণে আরো অনেকেই ব্যাপারটা জেনে গেছে।জামান সাহেব বাচ্চাদের কান্না থামানোর চেষ্টা করছেন।অনেকে বলাবলি করছে শাহানা নাকি পালিয়ে গেছে।এক বয়স্কা মহিলা বলে উঠলো,জামান তোরে কত কইলাম বউ সামলা,তোর বউ সারাক্ষন কার লগে জানি ফোনে কথা বলতো।
কোনো কথাই জামানের মাথায় ঢুকছে না। শাহানা কেন তাকে ছেড়ে চলে যাবে?সে তো কোনো অপরাধ করে নি।আর,তীর-তরীরই বা কি অপরাধ…
জামান ২ ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বাড়ি এসেছে। শাহানা ঘরেই ফোন ফেলে গেছে।সবাইকে কল করেও শাহানার কোনো খবর পাওয়া গেলো না।
সে অসহায়ের মত বাচ্চাদের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। বাচ্চা রা বার বার মা-মা করছে।
তিনি বললেন,মা তোদের জন্য খেলনা কিনতে গেছে।একটু পর চলে আসবে।
বলতে বলতে তার চোখ ভিজে গেলো…পরের পর্ব গুলো পোস্ট করার সাথে সাথে পেতে এই পেইজে ফলো দিয়ে রাখুন ???? Single-লাইফ
গল্প:- কাঁচের চুড়ি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
বিষয়: #কাঁচের #গল্প #চুড়ি