শুক্রবার ● ৫ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » সুনামগঞ্জ » ছাতকে নৌ পথে অবাধে চাঁদাবাজি
ছাতকে নৌ পথে অবাধে চাঁদাবাজি
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ::
ছাতকে সুরমা নদীতে আবারও চাঁদাবাজরা বেপরোয়া। ছাতক-কোম্পানীগঞ্জ নৌপথ থেকে প্রতিদিনই ৮,১০টি স্থান থেকে ৭-৮ লাখ টাকার মতো চাঁদাবাজরা আদায় করছে পাথর-বালু ও চুনাপাথরবাহী বার্জ-কার্গো ও নৌকা থেকে।উপজেলার ১নং ইসলাম পুর ইউনিয়নে পরিষদের টেন্ডার দিয়ে এসব নদ নদীতে ইজাদার নিয়োগ করে মনজুরুল ইসলামকে। সে ইজারা নিয়ে ইউপি পরিষদ নামে দিয়ে রশিদ দিয়ে চলমান নদীতে প্রকাশ্যে চাদা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় বি বাড়িয়া জেলা সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউপির রানিদিয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আবদুল গাফ্ফারকে গত ২৯ জুন প্রকাশ্যে চেলা নদী ফুলফুলি বিলে চলমান পাথরবাহী এম,বি শুভ সম্রাট বাল্কহেড আটকিয়ে এক লাখ টাকার চাদা দাবি করেন তিন চাদাবাজরা। চাদাবাজ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের কথামতো চাদা না দিলে মারপিট করে শ্রমিকদের কাছে মোবাইল ও নগদ টাকা পয়সা বাল্কহেড থাকা পাথর ও বালু মালামাল লুটপাট করে নেন।
এ ঘটনায় বি বাড়িয়া জেলা সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউপির রানিদিয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আবদুল গাফ্ফার বাদী হয়ে গত ২৯ জুন উপজেলার ইসলামপুর ইউপির ইসলাম পুর গ্রামের লিলু মিয়ার ছেলে রুহেল মিয়াকে প্রধান আসামী করে ছড়ার পাড় গ্রামের মৃত্যু জালাল উদ্দীনের ছেলে ফয়েজ মিয়া ও মৃত্যু তেরা মিয়ার ছেলে কামিল মিয়াসহ ৩ জনের নামে ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় পর ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চাঁদাবাজি ইঞ্জিল চালিত ব্যবহৃত নৌকাটি গত ৩ জুলাই চেলা নদী এলাকা থেকে ছাতক থানার পুলিশ আটক করেছে।
ছাতক ও দোয়ারাবাজার কোম্পানীগঞ্জের সন্ত্রাসীরা নৌপথে কার্গো জাহাজ বলগেট নৌকা মালবাহী থেকে চাঁদা রশিদের মাধ্যমে দীর্ঘ ৪-৫ মাস ধরে প্রতিদিন মাঝিদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। ছাতক কোম্পানীগঞ্জের নদীতে ৪-৫টি পয়েন্ট থেকে এসব চাঁদাবাজ চাঁদা উত্তোলন করে আসছে। ছাতক থানার কালারুকা বাজার ও ছাতক শহরে নৌযানচালিত ইঞ্জিন থেকে এলাকার অস্ত্রবাজ, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা আদায় করে আসছে।
তাদের কথামতো চাঁদা না দিলে বেঁধে নির্যাতন ও হামলার শিকার হচ্ছেন মাঝিরা। এছাড়া কালারুকা ইউনিয়নে মুক্তি কাবিলপুর গ্রামের নিকটবর্তী সুরমা নদীর সঙ্গে সিলেটের সালুটিকর থেকে ছেড়ে আসা নৌযান থেকে আটক করে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে। তাদের ইচ্ছামতো না দিলে মারধর চালায়। ছাতকে সুরমা নদীতে এভাবে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআইডব্লিউটিএ), ছাতক পৌরসভা এবং ইসলামপুর ইউপি পরিষদ সহ বিভিন্ন নামে। অথচ বিআইডব্লিউটিএর নিজস্ব কোনো ঘাটই নেই। ইসলামপুর ইউপি পরিষদে সহ চাঁদা আদায়কারী বিভিন্ন সংগঠনেরও কোনো বৈধতা নেই। এসব চাঁদাবাজির নেপথ্যে রয়েছেন পৌর সভার কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, যারা আওয়ামী লীগ-বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এরই মধ্যে পাথর ব্যবসায়ী সমিতি, শাহপরাণ ইঞ্জিন নৌকা মালিক সমিতি ও একতা বালু উত্তোলন এবং সরবরাহকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতিসহ পাঁচটি সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করেন।
চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় এমপি, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে ব্যবসায়ীরা আলাদাভাবে বৈঠকও করে। ছাতক ও কোম্পানীগঞ্জের সুরমা, চেলা এবং পিয়াইন নদীপথে বালু, পাথর, চুনাপাথর ও কয়লা নিতে আসে বাল্কহেড, বার্জ, কার্গো ও ইঞ্জিনচালিত নৌকাসহ শতাধিক বিভিন্ন ধরনের নৌযান চলাচল করে।
এসব নৌযান ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভাছড়া পাথর কোয়ারিসহ বিভিন্ন কোয়ারি থেকে পাথর সংগ্রহ করে। এছাড়া ভারত থেকে চুনাপাথর, বোল্ডার-সিঙ্গেল আমদানি করেও ছাতক নৌ-বন্দর এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ডাম্পিং করা হয়। এসব স্থানের ব্যবসায়ীদের নৌযানকে ছাতক ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মধ্যবর্তী নৌপথের ইছাকলস, চেলা নদীর মুখ, থানাঘাট, চাঁদনীঘাট, পেপারমিল ঘাট, নোয়ারাইঘাট ও বারকাপন এলাকায় চাঁদা দিতে।
এব্যাপারে ইজাদার মনজুরুল ইসলাম ও ইউপি চেয়ারম্যান সুফি আলমকে একাধিকবার তাদেরর মোবাইল ফোনে
যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে নৌ পুলিশের ইনচাজ আনোয়ার হোসেন এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন নৌ পথে চাদাবাজি বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছেন।
এব্যাপারে ছাতক থানা ওসি শাহ আলম জানান ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইউপি পরিষদ পক্ষে ইজারা দিয়ে চাদাবাজি চলছে। পুলিশ ও উপজেলার প্রশাসন যৌথ উদ্দ্যোগে চাদাবাজদের গ্রেপ্তারের অভিযান চালায়। এ ঘটনার ইউপি চেয়ারম্যান ইজারাদারের পক্ষে হাইকোটে একটি রিট পিটিশন দায়ের করায় এদের বিরুদ্ধে আইনানুগত ব্যবস্থা যাচ্ছে না। তবে নৌকা আটক করে রাখা হয়।
বিষয়: #অবাধ #চাঁদাবাজি #ছাতক