রবিবার ● ৭ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » সাহিত্য ডাইরি » ঈগল_সন্ধি
ঈগল_সন্ধি
‘মেয়েমানুষ হলো ভো’গ করার সামগ্রী। এদের জন্ম-ই হয়েছে শ’রীর দেখিয়ে পুরুষ মানুষকে আ’নন্দ দেওয়ার জন্য।’
-সাহস কত! এই ভার্সিটির মধ্যে মেয়েমানুষকে ইভটি’জিং করে বেড়াচ্ছিস! এসব নোং’রা কথা বলেছিস মিরাকে। মানুষ চিনিস? বেয়াদব! মুড়োঝাটার বা’রি দিয়ে বে’য়াদবি একদম ছুটিয়ে দেবো। এই ইশা রোকেয়া হলের স্টোররুম থেকে তিন-চারটা মুড়োঝাটা নিয়ে আয় তো। কুইক।
চৈত্রের তেজদীপ্ত চিৎকারে রোকেয়া হলের দিকে ছুটে গেলো দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ইশা রহমান। এদিকে আকাশি রংয়ের গেঞ্জি পরিহিত হ্যাংলা গড়নের ব’খাটে হাবভাবপূর্ণ ছেলেটাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্ছের সামনে অবস্থিত বড় মাঠের মাঝখানে কলার ধরে টেনে নিয়ে ফেললো চৈত্র। আশেপাশে অনেক শিক্ষার্থীরা ওকে ঘিরে দাঁড়িয়েছে। সবার চোখেমুখে কৌতূহল। কী হচ্ছে এখানে অনেকেই বুঝে উঠতে পারছে না৷
-এই সুধা। এদিকে আসো।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সবসময় প্রথম হওয়া ছাত্র অভিক বিশ্বাস কিছুটা দূর থেকে চৈত্রের বান্ধবী সুধাকে নিচু স্বরে ডাক দিলো। ওর ডাকে চৈত্রের পাশ থেকে সরে ধীর পায়ে হেঁটে অভিকের সামনে এসে দাঁড়ালো সুধা।
-কী হয়েছে অভিক ভাইয়া। ডাকছেন কেন?
-এখানে কী হচ্ছে? চৈত্র এতো রেগে আছে কেন? মনে হচ্ছে আজকে এই ছেলেটা আর জ্যা’ন্ত থাকবে না!
-এখন বলার সময় নেই। দাঁড়িয়ে থেকে শুধু দেখুন কী হয়। আমি যাচ্ছি।
রাগের মাত্রা তরতর করে বেড়েই চলেছে চৈত্রের। ওর সামনে পড়ে থাকা ছেলেটার চোখেমুখে ভয়ের কোনো ছাপ নেই৷ বরং দাঁত বের করে কুটিল হাসি দিচ্ছে। ছেলেটার এরূপ হাসি যেন ওর সর্বাঙ্গে আ’গুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। কা’টা গায়ে নুনের ছিটা দেওয়ার মতো ব্যাপারটা।
-তুই মিরাকে বলেছিস, ‘কী হট তুমি। ওড়নাটা খু’লে দাও।’ ওর ওড়না ধরে টেনেছিস তুই! জানো*য়ার! আজ তোকে আমি এই ভার্সিটির মাঠে ওড়না দিয়ে ক’বর দেবো।
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা প্রত্যেকটা মেয়ের হাতে থাকা ওড়না গুলো নিলো চৈত্র। বোঝা-ই যাচ্ছে আগে থেকেই পূর্বপরিকল্পিত ছিলো। এবার বোধহয় বেশ ভয় পেয়ে গেলো ছেলেটা। চোখে ভয়ের আভাস পূর্ণরূপে স্প’ষ্ট। এরই মধ্যে ইশা চলে এসেছে। ওর হাতে চারটা মুড়োঝাটা। সাথে নিয়ে এসেছে হোস্টেলের আরও কিছু মেয়েকে।
ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মা’রধর করা হচ্ছে ছেলেটাকে। মুড়োঝাটার শলার আ’ঘাতে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে ছেলেটার শরীর। ওকে অনবরত মে’রে চলেছে চৈত্র। সাথে রয়েছে কয়েকটা মেয়ে। কেউ ওর বান্ধবী। একই ডিপার্টমেন্টের। আবার কেউ কেউ সিনিয়র ও জুনিয়র। ওদের থেকে কিছুটা দূরে উৎসুক শিক্ষার্থীরা গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভীড়ের মধ্যে থেকে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করছে অনেকে।
-ভাই। ভাই। শিগগিরই চলেন। ওইদিকে ভয়ানক কান্ড ঘটে যাচ্ছে! কয়েকটা মেয়ে মিলে ভার্সিটির একটা ছেলেরে মা’রতাছে। ছেলেটার অবস্থা..’
বটতলার সামনে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে কথাটুকু বলে থামে তুরান। একপাশে কতগুলো বাইক স্ট্যান্ড করে রাখা। এখানে উপস্থিত রয়েছে প্রায় চৌদ্দ-পনেরো জন ছেলে। আজ বহুদিন বাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে ছাত্রলীগের সভাপতি দূর্জয় সেরনিয়াবাত। প্রফেসর সুদীপ্ত কুমারের সাথে একটা বিশেষ দরকারে দেখা করতে। তার সাথে দেখা করে বটতলায় এসে দলের ছেলেদের সাথে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলো। হঠাৎ তুরানের মুখে এমন কথা শুনে তড়িঘড়ি করে মুক্তমঞ্ছের সামনের মাঠ প্রান্তের উদ্দেশ্যে ছুটে গেলো দূর্জয়। ওর পেছন পেছন ছুটলো দলের সাথীরা।
-এখানে কী হচ্ছে এসব?
দূর্জয়ের গম্ভীর কণ্ঠস্বরে ভীড় সরিয়ে রাস্তা করে দিলো শিক্ষার্থীরা। ওকে দেখেই চিৎকার-চেঁচামেচি বন্ধ হলো। কিছু ছেলেরা মা’রধর দেখে উল্লাস করছিলো, তারা একেবারে নিশ্চুপ হয়ে গেলো। সাদা পাঞ্জাবি, সাদা ফ্রেম ও সাদা গ্লাসের সমন্বয়ে তৈরী চশমা পরিহিত এই গম্ভীর, তেজী শ্যামপুরুষকে দেখে যেমন পরিস্থিতিই থাকুক না কেন কেউ কোনোরকম আওয়াজ করার সাহস পায় না।
উপস্থিত সবার ফিসফিসানিতে ছেলেটাকে মা’র’ধর করার কারণ বুঝতে পারলো ওরা।
দূর্জয়ের পেছনে ওর দলের ছেলেগুলো এগিয়ে গেলো সামনে। মাটিতে পড়ে আছে প্রায় বেহুঁশ একটা ছেলে।
-আরে এতো কবির! শা’লা তোর মা’র খাওয়া-ই উচিত ছিলো।
তুরানের জমজ ভাই নিশান মাঠে পড়ে থাকা ছেলেটাকে দেখে অবাক ভঙ্গিতে চেঁচিয়ে উঠলো।
চৈত্র দাঁড়িয়ে থেকে কোমরে হাত রেখে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছে, ওড়নার কোণ দিয়ে মুখের ঘাম মুছছে। ওর আশেপাশের মেয়েগুলো ওড়না, মুড়োঝাটা ওঠাতে ব্যস্ত।
-এই দাঁড়া। মুড়োঝাটা রেখে যা একটা৷ ওকে আরও কয়েক দফা মা’র না দিলে শান্তি হবে না আমার।
কবিরকে আবারও মা’রার উদ্দেশ্যে মুড়োঝাটা উঁচু করে ধরতেই পেছন থেকে কেউ শক্ত করে হাত চেপে ধরলো চৈত্রের।
‘যথেষ্ট হয়েছে মেয়ে। এবার থামো।’
দূর্জয়ের চিৎকারে ভ্রু কুঁচকে পেছনে তাকালো চৈত্র। চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ।
-দেখুন, নেতা সাহেব। আমার কাজে ব্যা’ঘাত ঘটাতে আসবেন না একদম। নিজের কাজে মনোযোগ দিন। সভাপতি, সভাপতির মতো থাকবেন। মেয়েলি ব্যাপারে নাক গলানো আপনাকে শোভা পায় না। এই অ’সভ্য, বে’য়াদব ছেলেটাকে মা’রতে নিষেধ করছেন! অন্যায়কে সমর্থন করছেন?
চৈত্রের কথায় চোয়াল শক্ত হলো দূর্জয়ের। হাত মুঠো করে চড়া গলায় বললো-
‘আমি এই ভার্সিটির সাবেক ছাত্র হলেও এখানকার ছাত্রলীগের সভাপতি। তাই ভার্সিটির যেকোনো ভালো-মন্দ ব্যাপার দেখাও আমার কর্তব্য। তোমাকে ঠিক চিনি না মেয়ে। তবুও বলবো, যতটুকু করেছো সেটা যথেষ্ট। এরপর আরো কিছু করলে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছাবে। ওর উচিত ব্যবস্থা করছি। তোমরা এবার যেতে পারো।’
দূর্জয়ের আদেশের সুরে এক ইঞ্চিও সরলো না চৈত্র৷ বরং ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো। তুরানের চোখের ইশারায় ওকে টেনে মাঠ থেকে নিয়ে গেল ইশা ও সুধা। ধীরে ধীরে মাঠের ভীড় কমে গেল। মাঠে আছে শুধুমাত্র দূর্জয় এবং ওর দলের ছেলেরা। হাঁটু গেড়ে ঘাসের ওপরে উবু হয়ে বসলো সেরনিয়াবাত। কপালে আঙুল ঠেকিয়ে রেখেছে। ওকে ঘিরে দাঁড়িয়েছে ছেলেরা।
‘নিশান, এটাকে হসপিটালে এডমিট করার ব্যবস্থা কর। আর প্রফেসরকে কল দে। বল, দূর্জয় ভাই বলেছে, দ্রুত ওর বরখাস্ত পত্র তৈরী করতে। এরকম নর্দমার নোং’রা কীট এই ভার্সিটি থেকে সাফাই করা-ই শ্রেয়।’
-ভাই বলছিলাম যে, কবিরকে মা’রছিলো যে মেয়েটা- চৈত্র। পুরো নাম চৈত্র রজনী। ল’ ডিপার্টমেন্টের থার্ড সেমিস্টারের ফার্স্ট গাল।
-আমি শুনতে চেয়েছি ঐ মেয়েটার ব্যাপারে?!
-না, মানে ভাই, আমার পুরো কথাটা একটু শোনেন। এর বাপে আলোর শিখা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাস্টার। মেয়েটা চিত্রণ খন্দকারের ছোট বোন।
রাতুলের শেষ কথাটুকু শুনে চোখ-মুখ শক্ত হলো দূর্জয়ের। কপালের শিরা ফুলে গেছে। হাত মুঠো করলো সেরনিয়াবাত। দাঁতে দাঁত খিঁচিয়ে বললো,
‘শত্রুর বোন! ওকে।’
মেয়েদের হোস্টেলর চতুর্থ ভবনের তেরো নম্বর রুমের বিছানায় হাত-পা ছ’ড়িয়ে শুয়ে আছে চৈত্র। এই রুমটাতে থাকে নিশি, ইশা, তুলি আর রিতু। আপাতত চৈত্রের সাথে রুমে অবস্থান করছে সুধা, তুলি এবং রিতু।
বিছানার এককোণে চুপ মে’রে বসে আছে মি’রা। ওর কাঁধে হাত রেখে বসেছে তুলি। রীতিমতো কাঁপছে মিরা। সকালে তার সাথে ঘটে যাওয়া ভয়ংকর ঘটনার প্রতিক্রিয়া এখনো অব্যাহত রয়েছে ওর ওপরে। ওর দিকে কিছুক্ষণ নিরবে তাকিয়ে থেকে বিরক্তিতে ‘চ’ উচ্চারিত হলো চৈত্রের মুখ হতে। মিরার কাছে এগিয়ে গেলো। ওর হাতদুটো মুঠোয় নিলো।
‘দেখ মিরা, এভাবে না এই নিষ্ঠুরতম জগতে বেঁ’চে থাকা যায় না। ইংরেজি একটা প্রবাদ বাক্য আছে~”ভিক্টরি অর ডেথ।” অর্থাৎ- বিজয় অথবা মৃ’ত্যু। এটি প্রশস্ত অর্থে বোঝানো হয়েছে, হয় স্বাধীনভাবে বাঁচো অথবা মৃ’ত্যুকে আলি’ঙ্গন করো।’
-তুই কবিরের এসব নোং’রা কথার কোনো প্রতিবাদ করিসনি। এমনকি আমাকে স্বেচ্ছায় জানানোর-ও প্রয়োজন বোধ হয়নি তোর। তুলি আমাকে না বললে তো কবিরের এমন নোং’রামি ধামাচাপা পড়তো। তুইও প্রতিনিয়ত ওর নোং’রামির শি’কার হতি! একসময় তোর ভার্সিটিতে আসা বন্ধ হয়ে যেত। বন্দীদের মতো বসবাস করতে হতো তোকে।’
-এই তুলি, এক গ্লাস পানি দে তো। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।
মিরাকে কথাগুলো বলে তুলিকে পানি আনতে বলে চৈত্র। ওর কথায় মিরার পাশ থেকে দ্রুত উঠে পানি নিয়ে আসলো তুলি। ঢকঢক করে খেয়ে বোতলের পানি সব শেষ করে ফেললো চৈত্র। সামনে বসে থাকা তার দুই বান্ধবী আর জুনিয়রের তাকানোর চাহনিতে বিরক্ত হলো, ভ্রু কুঁচকালো। ওদের ভাব-গতিকে বেশ বোঝা যাচ্ছে এখনই বকরবকর শুরু হবে।
-চৈত্র, তুই যে আজকে এতো বড় একটা ক্যাচাল করলি। আন্টি যদি জানে তখন কী হবে একবারও ভেবেছিস? তোর বাড়িতে তো তুলকালাম কান্ড ঘটে যাবে রে!
আশঙ্কিত স্বরে কথাগুলো একনাগাড়ে বলে সুধা। চোখে অতিসত্ত্বর ভবিষ্যতে সৃষ্ট ঝঞ্ঝা সম্পর্কে ভয়। কথাটা শুনে কিছুক্ষণ কপালে আঙুল স্লা’ইড করলো চৈত্র। হঠাৎ ধড়াম করে উঠে বসে ও। মুচকি হেসে বলে, ‘তেমন কিছুই হবে না। তুই একটা নেং’টি ইঁ’দুর। অযথা সবসময় ভয় পাস! আম্মু আমার ওপরে চেঁচালেও, ব্রাদার ঠিক-ই প্রটেক্ট করবে।
-তুই এখন বাসায় যা চৈত্র। সকাল গড়িয়ে বিকেল হতে চললো। আন্টি রাগ করবে তোকে।
-আচ্ছা আমি বাসায় যাবো। তার আগে ঐ জানো*য়ারটার খবর নিয়ে যাই। তুলি বাইরে গিয়ে দেখ তো কী অবস্থা।
চৈত্রের কথায় গলায় ওড়না ঝুলিয়ে হোস্টেল রুম থেকে বের হয় তুলি৷ উদ্দেশ্য কবিরের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খবর নেওয়া।
-চৈত্র আপা, কবিরকে হসপিটালে এডমিট করা হয়েছে।
হোস্টেল রুমে প্রবেশ করে বিছানায় বসতে বসতে কথাটা বলে থামে তুলি। ঘেমে-নেয়ে একাকার। বোঝা-ই যাচ্ছে খবর নিতে বেশ দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে ওকে। টেবিলে থাকা গ্লাস থেকে পানি খেয়ে নিলো। গলার ওড়না-টা আলনায় ঝুলিয়ে রাখে। শব্দ করে দরজা আটকে দিলো।
তুলির কথায় সবাই নড়েচড়ে বসে। চৈত্রের মুখের দিকে তাকায় ওর রিয়াকশন বোঝার জন্য।
‘কীহ! ঐ হা’রামিটাকে হসপিটালে এডমিট করলো কে? ওর তো ওখানে পড়ে পড়ে ম’রা উচিত ছিলো।’
ভ্রু কুঁচকে কথাটা বললো চৈত্র। এই খবরটা মোটেও আশা করেনি ও। ভেবেছিলো- বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত করা হবে কবিরকে।চোখে-মুখে রাগ, ক্ষো’ভ প্রকাশ পাচ্ছে চৈত্রের।
-শুনলাম ছাত্রলীগের সভাপতি দূর্জয় ভাই ওকে এডমিট করার ব্যবস্থা করেছে চৈত্র আপা।
বিছানা ছেড়ে উঠে বসলো চৈত্র। বুকে দুই হাত গুঁজে বললো- ‘ঐ নেতাকে তো আমি পরে দেখছি। ভাইয়াকে একটা কল দেওয়া দরকার৷ একা বাসায় ফিরবো না। ওর সাথে গেলে জননী একটু কম চিল্লাবে।’
বিছানার এক কার্ণিশ ঘেঁষে বসে চৈত্র। চিত্রণের নাম্বার ডায়াল করে কল দিলো। দু-একবার রিং বেজে কল রিসিভ হলো।
-হ্যালো রজ্জ। কোথায় তুই?
-আমি ভার্সিটিতে এসেছি ব্রাদার। একটা কাজ কমপ্লিট করে এখন হোস্টেলর রুমে বসে আছি। তুমি জলদি নিতে আসো আমাকে।
কল কেটে দিলো চৈত্র৷ ও জানে যেখানেই থাকুক কিছুক্ষণের মধ্যে অবশ্যই চলে আসবে চিত্রণ।
ভার্সিটির গেইটের সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছে চৈত্র, সুধা আর তুলি। চিত্রণের আসার অপেক্ষা করছে চৈত্র। এখনো এসে পৌঁছায়নি ও। বিরক্ত হয়ে একটা বেঞ্চের উপর গিয়ে বসলো ওরা। চারিদিকে একবার চোখ বোলাতেই চৈত্রের নজর গেলো মুক্তমঞ্ছের প্রান্তরে। টানটান হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দূর্জয় সেরনিয়াবাত। সবসময়কার মতো দৃঢ় অঙ্গভঙ্গি। কতগুলো ছেলের সাথে কথা বলছে। দূর থেকে অল্প ভেসে আসা শব্দে বোঝা যাচ্ছে রাজনৈতিক আলোচনা চলছে। কথা বলতে বলতে দু-একবার চোখের সাদা গ্লাসের চশমাটা হাত দিয়ে ঠিক করে নিলো সেরনিয়াবাত। মুখে গাম্ভীর্যপূর্ণ ভাব। আবার মাঝে মাঝে ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি।
‘ছাত্রলীগের সভাপতি দূর্জয় ভাই কী সুন্দর তাইনা! হাসলে অমায়িক লাগে। উনি যদি একবার আমাকে বলতেন, ‘তোমাকে আমার চাই।’ তাহলে আমি স্বেচ্ছায় তার হয়ে যেতাম। হায়! মা’র ডালা।’
দূর্জয়ের হাস্যরত মুখপানে তাকিয়ে থেকে দাঁত কেলিয়ে একনাগাড়ে কথাগুলো বললো তুলি। ওর কথা শুনে দু’মিনিট ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকলো চৈত্র। অতঃপর তুলির মাথায় পড়লো গাট্টা।
‘এসব কী তুলি! লোকটার বয়স আর তোর বয়সের ডিফারেন্স মিনিমাম দশ বছরের হবে। তোর বাপের বয়সী হয়। আব্বা বল!’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
বিষয়: #ঈগল #সন্ধি