বৃহস্পতিবার ● ১১ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » সাহিত্য ডাইরি » পরকীয়া টরকিয়া বুঝিনা
পরকীয়া টরকিয়া বুঝিনা
পরকীয়া টরকিয়া বুঝিনা, আমি খুব সহজ সরল সমাধান বুঝি, এত জটিলতা আমার পোষায় না। যারা ফ্রাস্ট্রেটেড নিজেদের দায়িত্ব সামলাতে সামলাতে, যাদের বিয়ে হয়ে গেছে , বউ বাচ্চা বর সংসার অফিস নিয়ে যারা নাজেহাল,
যাদের জীবনে একঘেঁয়েমি এসে গেছে, যাদের কাছে বেঁচে থাকা মরে যাওয়া দুটোই সমান, যাদের জীবনে কোনো গল্প নেই, আনন্দ নেই, ব্যথা নেই, যারা মানুষ থেকে কবেই যেন যন্ত্রে পরিণত হয়েছে,
তাদের নতুন করে আরো একবার প্রেমে পড়া উচিৎ, একটা দুর্দান্ত প্রেম…
ঠিক কুড়ি বাইশ বছরের যুবক যুবতীর মতো সমাজের নীতি নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে, সবার আড়ালে আবডালে গিয়ে লুকিয়ে প্রেমে পড়া উচিৎ, যেভাবে বিপ্লব আসে, দিন পাল্টায় সেভাবেই ভেতর ভেতর পাল্টে যাওয়া উচিত।
আমি একবারও বলছি না, নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে, কাছের মানুষকে ঠকিয়ে, অন্য কারোর সাথে কমিটেড হওয়া উচিত বা চিরাচরিত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া উচিৎ।
কিন্তু প্রতিটা মানুষের একটা খোলা বারান্দার দরকার, যেখানে যখন ইচ্ছে বসা যায়, ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটানো যায়, হাওয়ায় হাওয়ায় একটা আলাদা গন্ধ ভাসে, পাশাপাশি দুটো টবে সুগন্ধি ফুলের গাছ দুলতে থাকে।
যে বারান্দায় কাগজ ছিঁড়ে কুটিকুটি করে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। অভিমান হলে কান্নাকাটি করা যায়, ভীষণ রকম আনন্দ পেলে চিৎকার করে হেসে নেওয়া যায়, এক কাপ কফি নিয়ে যে বারান্দায় বসে সামনের রাস্তাটা পরিষ্কার দেখা যায়….
যে রাস্তার মোড়ে মাধব কাকু ফুচকা নিয়ে বসে, যে রাস্তায় বৃষ্টি পড়লেই ছড়িয়ে যায় হলদে কদম ফুল, আর তার উপর দিয়ে হেঁটে যায় সদ্য একুশে পড়া তরুণ তরুণী, ওরা একটু আড়াল খোঁজে, বুকে হাত রেখে চুমু খাবে বলে….
কোথায় যেন ছিলাম আমরা! বারান্দার কথা বলছিলাম। যে বারান্দাটা তার একার হয় না, সম্পূর্ণ অধিকার থাকে না সেই বারান্দার উপর, কিন্তু যেটুকু মুহূর্ত সে কাটায়, সেই মুহূর্তটুকু আর কারোর হয় না, না তার বর বউ বাচ্চা সংসার শশুর শাশুড়ি কারোর নয়, স্রেফ তার একার….
সব সম্পর্কে প্রতিশ্রুতি দিতে নেই, আবেগ কমে আসে। সব সম্পর্ক অধিকার বোধ থাকতে নেই, যত্ন কমে আসে। সব সম্পর্কে অভিযোগ রাখতে নেই, অনুভূতি ছোট হয়ে আসে…
কিছু মানুষকে একার করে পেতে নেই, আবদার কমে আসে। এক একটা সম্পর্ক এক একটা মানুষকে খোলা বারান্দা ভেবে একটু শুয়ে বসে হাত পা ছড়িয়ে দুই এক পাতা কবিতা লিখে ফেলতে হয়, কিংবা গিটার হাতে একটা দারুণ গান গেয়ে ফেলতে হয়, কিংবা এক একটা বিকেল বেলায় স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হয় তার সাথে….
জীবনে বেঁচে থাকার কিছু কারণ বেড়ে যায়, ভালো থাকার একটা বাহানা একটা অজুহাত খুঁজে পাওয়া যায়, অভিমান করার জন্য একটা মানুষ পাওয়া যায়! জীবন এটুকুই, সবাই প্রেমে থাকুন, একাকীত্বে নয়….
পথিক যখন রাস্তা দিয়ে হাঁটে, সে পা মেপে মেপে হাঁটে না। এমনকি, তার মাথায় তখন নিউটনের গ্র্যাভিটিজ অফ ল এর সূত্রগুলোও কাজ করে না। যদি করত, তাহলে পথের দু-ধারে থাকা দৃশ্যগুলোকে উপভোগ করতে পারত না। পথের সৌন্দর্যকে নিজের অন্তরে অনুভব করতে পারত না।
সম্পর্কও এমন। স্বকীয়া হোক বা পরকীয়া। সম্পর্ককে সারাক্ষণ খুঁড়ে দেখতে নেই। সম্পর্কের ভিতর জোয়ারভাটা নিয়ে সবসময় অঙ্ক কষতে নেই। আর তা করতে গেলে পারস্পরিক নৈকট্য তেতো হয়ে ওঠে। বরং যখন, যেটুকু সময় কাছাকাছি থাকা যায়, যোগাযোগ গড়ে ওঠে, সেটাকেই উপভোগ করতে হয়। তা না হলে সম্পর্কের লাবণ্য ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়, সম্পর্ক বোঝা হয়ে ওঠে। ”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
বিষয়: #টরকিয়া #পরকীয়া #বুঝিনা