বৃহস্পতিবার ● ১১ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » আবেদ আলীর ‘দোসর’ প্রিয়নাথও গড়েছেন সম্পদের পাহাড়
আবেদ আলীর ‘দোসর’ প্রিয়নাথও গড়েছেন সম্পদের পাহাড়
বজ্রকণ্ঠ নিউজ ডেস্ক:
বিসিএসসহ নানা পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপ্রত্র ফাঁসকাণ্ডের নাটের গুরু পিএসসির গাড়িচালক আবেদ আলীর অন্যতম ‘দোসর’ ঠাকুরগাঁওয়ের প্রিয়নাথ রায়। তিনি পরীক্ষায় পাস নিশ্চিত করা ও চাকরির দেয়ার নামে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা নিতেন।
তিনি এখন পর্যন্ত ৪৫০ জনকে প্রশ্নপত্র দিয়ে চাকরি জুটিয়ে দিতে সহযোগিতা করেছেন। ওই টাকায় দিনাজপুর ও ঢাকায় তার বাড়ি-গাড়িসহ অঢেল সম্পত্তির পাহাড় গড়েছেন প্রিয়নাথ রায়।
গত সোমবার (৮ জুলাই) সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে এক অভিযানে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। একইসঙ্গে পিএসসির দুই উপপরিচালক, একজন সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জন গ্রেপ্তার হন। তাদের মধ্যে একজন প্রিয়নাথ রায়।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের রাইতু রায় ও রাজবালা দম্পতির সন্তান প্রিয়নাথ রায়। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা প্রিয়নাথ এসএসসি পরীক্ষার সময় বাবাকে হারান। এইচএসসির পরে বন বিভাগে চাকরি নেন।
পরে ডিগ্রি পাস করে সেনাবাহিনীর অডিটর পদে যোগ দেন। এরপর ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করে চাকরি পাইয়ে দেয়ার অপরাধে। এ বিষয়ে প্রশ্নপ্রত্র ফাঁসকাণ্ডের জড়িত আবেদ আলী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সেখান থেকে জানা যায়, প্রিয়নাথ রায় চাকরিপ্রার্থীদের তার কাছে পৌঁছে দিতেন। চুক্তি হতো ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকায়, অগ্রিম নেওয়া হতো ২ থেকে ৫ লাখ। সেই অর্থের ভাগ নিতেন প্রিয়নাথ।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জয়দেব জানান, প্রিয়নাথ ও তার অন্যান্য ভাইবোন সবাই বাইরে থাকে। গ্রামের তাদের মা ছাড়া কেউ থাকে না। বিভিন্ন সময় তারা জেনেছেন, প্রিয়নাথ চাকরি দেয়ার নামে মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতেন। পুলিশও তাদের বাড়ি এসেছিল কয়েকবার। দীর্ঘদিন ধরে প্রিয়নাথ বাড়ি আসেন না।
জানা গেছে, চাকরি দেয়ার নামে অনেকের কাছ থেকেই টাকা নিয়েছিলেন প্রিয়নাথ। জড়িয়েছিলেন নানা মামলায়। এরপর থেকে তাকে নিজ গ্রামে কখনও দেখা যায়নি। প্রিয়নাথের বাড়ি গিয়ে তার মায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি ছেলের অপরাধের কারণ হিসেবে তার স্ত্রীকে দায়ী করেন।
রাজবালা জানান, স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে প্রিয়নাথ দিনাজপুরের বাড়িতে থাকেন। পুত্রবধূর কারণেই প্রিয়নাথ এমন অপরাধে জড়িয়েছে। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। স্ত্রীর পরামর্শে চলে তার ছেলে অপরাধ করেছে। দোষী হলেও সন্তানের মুক্তি কামনা করেছেন মা রাজবালা।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, চাকরি দেয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে বিভিন্ন জেলায় প্রিয়নাথের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। কয়েক বছর ধরে তিনি বাড়িতে না আসায় এখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার সম্ভব হচ্ছিল না। গত সোমবার (৮ জুলাই) এক অভিযানে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
বিষয়: #ছবি #প্রিয়নাথ #রায় #সংগৃহীত