রবিবার ● ১৪ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » কোটা নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করবেন না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কোটা নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করবেন না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বজ্রকণ্ঠ নিউজ :
কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত না করার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েই কোটা বাতিল করেছিল, আদালত সেটি পুনর্বহাল করেছিল। সুতরাং কোটা সমাধান আদালতের মাধ্যমেই হতে হবে। বিষয়টি যারা বোঝেন না বা বুঝেও বুঝতে চান না বা যাদের বিএনপিসহ অন্যরা ইন্ধন দিচ্ছে, তাদের বলবো, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করবেন না।
১৩ জুলাই, শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতৃবৃন্দকে সংবর্ধনা এবং মরণোত্তর সম্মাননা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সরকারি চাকুরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রসঙ্গে মন্ত্রী বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে বলেন, কোটা সরকার পুণর্বহাল করেনি। সরকার বরং শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করেছিল। বাতিলের পর কোটাহীনভাবে সরকারি ও অন্যান্য চাকুরিতে নিয়োগ হচ্ছে। হাইকোর্ট রায় দিয়েছে কোটা পুণর্বহালের জন্য। সুপ্রিম কোর্ট সেটি স্থগিত করেছে। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে বা বিচারাধীন বিষয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। তাহলে আদালত অবমাননা হবে।
এসময় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যখন ছাত্রদল কোটা আন্দোলনকারীদের সমর্থন দেয়, যখন রিজভী সাহেব, গয়েশ্বর বাবু, মঈন খান এটার পক্ষে সোচ্চার হন, তখন বুঝতে হবে ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। বুঝতে হবে এটার ভেতরে রাজনীতি ঢুকে গেছে। সুতরাং আমি ছাত্র-ছাত্রীদের অনুরোধ জানাব রাজনৈতিক অপশক্তির ফাঁদে যেন না পড়ে। সরকার তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তবে জনগণের ভোগান্তি বাড়ালে সরকারকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আশা করব তারা ক্লাসে ফিরে যাবে। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, মনে রাখতে হবে, সরকার শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েই কোটা বাতিল করেছিল, আদালত পুণর্বহাল করেছিল। সুতরাং কোটা সমাধান আদালতের মাধ্যমেই হতে হবে। সরকার আদালতকে উপেক্ষা করে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারে না, যেহেতু বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। এসব বুঝেও যারা জনভোগান্তি ঘটাচ্ছেন, জনগণের ভোগান্তি যাতে না ঘটে সেজন্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর এবং আশা করবো শিক্ষার্থীরা সুপ্রিম কোর্টের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন।
এসময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারি দল হিসেবে আমাদেরও দায়িত্ব আছে দেশে যাতে কেউ অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে। জীবনযাপনে যাতে কেউ ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে সেদিকে নজর রাখার দায়িত্ব সরকারি দলের নেতাকর্মীদেরও আছে। সুতরাং আপনারাও এ ব্যাপারে নজর রাখবেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে একটি পরিবার উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পাঁচবার রাষ্ট্র ক্ষমতায়। এর প্রথম কারণ হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনা। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে এ দলের কর্মীরা। কর্মীরাই এ দলের প্রাণ। শেখ হাসিনার ওপরে যখন বার বার হামলা হয়েছে তখন কর্মীরাই মানববর্ম সৃষ্টি করে গ্রেনেড-গুলি থেকে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছে। দলের দুঃসময়ে অনেক নেতাই দল ছেড়ে চলে গেছে, বেসুরে কথা বলেছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধাচারণ করেছে, দলের সাথে-শেখ হাসিনার সাথে বেইমানি করেছে। কিন্তু কর্মীরা কখনোই শেখ হাসিনার সাথে বা দলের সাথে বেইমানি করেনি। কাজেই সুবিধাবাদীদের চিহ্নিত করে তাদের হাত থেকে দলকে মুক্ত করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির তোষণ না করলে আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরের দীপ্ত পথচলায় দেশ আরও এগিয়ে যেতো। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) এসএম কামাল হোসেন, বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, বগুড়া-৬ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, বগুড়া-১ আসনের এমপি সাহাদারা মান্নান, বগুড়া-৭ আসনের এমপি ডা. মোস্তফা আলম নান্নু, বগুড়া-৩ আসনের এমপি খাঁন মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাঁধনসহ বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের আরও অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়: #কোটা #কোমলমতি #পররাষ্ট্রমন্ত্রী #বিভ্রান্ত #শিক্ষার্থী