সোমবার ● ১৫ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বাইরে অন্য প্রজন্মের জন্য কোটার প্রয়োজন নেই : সিপিবি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বাইরে অন্য প্রজন্মের জন্য কোটার প্রয়োজন নেই : সিপিবি
বজ্রকণ্ঠ নিউজঃ
সবার জন্য কর্মসংস্থান ও কোটা সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করা চলবে না। আবার মুক্তিযোদ্ধা কোটার নামে তার সন্তানের বাইরে অন্য প্রজন্মের জন্য কোটা রাখার প্রয়োজন নেই। এজন্য আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে যুক্তিসঙ্গতভাবে এর সংস্কার করতে হবে।
১৪ জুলাই, রবিবার সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এসব কথা বলা হয়েছে।
সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয় বিষয়ে বক্তব্য উত্থাপন করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন।
সিপিবির সভায় বলা হয়েছে, ব্যাংক সংকট, খেলাপি ঋণ, অর্থ পাচার বেড়েই চলেছে। ভর্তুকি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করলেও খেলাপি ঋণ আদায়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারের ভূমিকা নেই; বরং আইন পরিবর্তন করে এসব ঋণখেলাপিকে আরও সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি অব্যাহত আছে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। জ্বালানি, বিদ্যুৎ, পানির মূল্যবৃদ্ধি চলছে সমানতালে। সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই।
সভায় বলা হয়, দেশে দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র প্রকাশিত হচ্ছে, ছাত্রসমাজ রাজপথে, দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধিতে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের জীবনের সংকট বাড়ছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভয়াবহ সংকট দেখা যাচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ অনেক জায়গায় বেতন বঞ্চিত হচ্ছে। নীরবে কর্মহানি ঘটছে অনেক জায়গায়। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলাবদ্ধতা মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। সরকারি তথ্যই বলছে, দেশের ২৬ শতাংশ পরিবার ধার করে মৌলিক চাহিদা পূরণ করছে।
সিপিবির এ সভায় কোটা সংস্কারের আহ্বান জানানো হয়। সভায় বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করা চলবে না। আবার মুক্তিযোদ্ধা কোটার নামে তাঁর সন্তানের বাইরে অন্য প্রজন্মের জন্য কোটা রাখার প্রয়োজন নেই।
চীন সফরের আগে ভারত সফর ও ভারতকে রেলের করিডর দেওয়ার সমঝোতা চুক্তি সরকারের নতজানু নীতিরই বহিঃপ্রকাশ বলেও মনে করে সিপিবি।
সভায় তারা বলেছেন, বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী ও ভারতের শাসকগোষ্ঠীর ভূমিকা দেশের ওপর আধিপত্যের থাবা বাড়িয়ে তুলেছে।
সভায় বলা হয়, নানা সংকটের মধ্যেও মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর আঘাতে শ্রমজীবী-পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের রুখে দাঁড়ানোর প্রবণতা আগের থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের ক্ষুব্ধতার প্রকাশ একেক জায়গায় একেক রকমভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। সভায় চলমান দুঃশাসনের অবসান ও ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম অগ্রসর করতে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
সভায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ। এতে শোকপ্রস্তাব উত্থাপন করেন লাকি আক্তার।
সভায় বক্তব্য দেন অধ্যাপিকা এ এন রাশেদা, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, মোতালেব মোল্লা, পরেশ কর, অ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা, অধ্যাপক ডা. ফজলুর রহমান, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, রফিকুজ্জামান লায়েক, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, অধ্যাপক এম এম আকাশ, আহসান হাবিব লাবলু, জলি তালুকদার, মৃণাল চৌধুরী, অ্যাড. মণ্টু ঘোষ, ডা. দিবালোক সিংহ, মনিরা বেগম অনু, অ্যাড. সোহেল আহমেদ, কাজী রুহুল আমিন, এস এ রশীদ, রাগিব আহসান মুন্না, ডা. মনোজ দাশ, অ্যাড. হাসান তারিক চৌধুরী, ডা. সাজেদুল হক রুবেল, লুনা নূর, মো. কিবরিয়া, আবিদ হোসেন, অ্যাড. আইনুন্নাহার সিদ্দিকা, অ্যাড. মহসীন রেজা, প্রকৌশলী নিমাই গাঙ্গুলী, মানবেন্দ্র দেব, লাকী আক্তার, হাফিজুল ইসলাম, আশরাফুল আলম, মোহাম্মদ আলতাফ হোসাইন, মো. ইসমাইল হোসেন, ইদ্রিস আলী, জাহিদ হোসেন খান, মোসলেহ উদ্দিন, হাসিনুর রহমান রুশো, সাদেকুর রহমান শামীম, নলিনী সরকার, পিযূষ চক্রবর্তী, সাজিদুল ইসলাম প্রমুখ।
এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাড. মাকছুদা আখতার লাইলি, সংগঠক অ্যাড. রফিকুল ইসলাম, ফররুখ হাসান জুয়েল এবং কন্ট্রোল কমিশনের সদস্য কাজী সোহরাব হোসেন, অধ্যাপক ডা. এম এ সাঈদ ও সুজাত আলী।
সভায় রাজধানীর মিরনজিল্লাহ হরিজন সম্প্রদায়ের উচ্ছেদ ও হামলার নিন্দা জানিয়ে তাদের স্থায়ী আবাসনের নিশ্চয়তার দাবি জানানো হয়। এবং ন্যাশনাল কেমিক্যাল এবং এবিকো ইন্ডাস্ট্রিজের শ্রমিকদের আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে তাদের ৫ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি জানানো হয়।
বিষয়: #নিউজ #বজ্রকণ্ঠ #মুক্তিযোদ্ধা