রবিবার ● ২৮ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » মেট্রোরেল স্টেশন হামলা-অগ্নিসংযোগ, গ্রেফতার ৪
মেট্রোরেল স্টেশন হামলা-অগ্নিসংযোগ, গ্রেফতার ৪
কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে রাজধানীর মিরপুর ১০ ও কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রদলের নেতাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়ান্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি বলছে, পরিকল্পিতভাবে মিরপুরে মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এই হামলায় এক থেকে দেড় হাজার মানুষ অংশ নেয়।
২৮ জুলাই, রবিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবি জানিয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে মেট্রোরেল স্টেশন ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ডিবির তথ্যানুযায়ী, হামলায় সমন্বয় করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আবু হান্নান তালুকদার। হামলার নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম আল নাসের (মিশুক)।
একই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বজলুল রহমান (বিজয়) ও ছাত্রদলের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি মো. ফেরদৌসকে (রুবেল)।
ডিবিপ্রধান বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুর করায়। বিশেষ করে আমাদের স্বপ্নের মেট্রোরেলে যারা আগুন লাগিয়েছে, সেতু ভবনে আগুন লাগিয়েছে, পুলিশ সদস্যদের ওপর যারা হামলা চালিয়েছে ও হত্যা করেছে, আমরা তাদের যেখানেই থাকুক একে একে সবাইকে গ্রেফতার করবো।
তিনি বলেন, যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ হত্যার ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ১৯ জুলাই কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা মিরপুরের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ নম্বর স্টেশনে অগ্নিসংযোগ করে, সেই ঘটনায় জড়িত থাকার ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছি।
হারুন দাবি করেন, মেট্রো স্টেশনে হামলার মাস্টারমাইন্ড ও নেতৃত্বদাতা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আবু হান্নান। হান্নান তার সহযোগীদের নিয়ে বিএনপি নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাইফুল ইসলাম নিরবের নির্দেশনায় মেট্রো স্টেশনে আগুন দেয়। এই ঘটনায় আরও দুই নেতার নাম প্রকাশ করেছে তারা। যাদের মধ্যে বিএনপি নেতা শ্রাবন আগেই গ্রেফতার হয়েছেন। বিএনপির নেতারা চার-পাঁচজনকে দায়িত্ব দেয়। মেট্রোস্টেশনে আগুন দিয়ে ধ্বংস করার নির্দেশনা দেয়া হয়, সাধারণ মানুষ যেন মেট্রোতে আর চলাচল করতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, মেট্রোরেল স্টেশনে আগুন ও দায়িত্বরত পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় অনেকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে এই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে ডিবি অভিযান চালাচ্ছে।
গত ১৮ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রোরেল চলাচল। তবে কবে নাগাদ মেট্রোরেল আবার চালু হবে তা এখনো স্পষ্ট করে বলেনি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
উল্লেখ্য, কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে গত ১৬ জুলাই দেশব্যাপী সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে ১৮ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ছিল। তবে সীমিত পরিসরে চালু হলেও এখনও ইন্টারনেটসেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারফিউ জারির পাশাপাশি দেশব্যাপী সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
বিষয়: #অগ্নিসংযোগ #গ্রেফতার #মেট্রোরেল #স্টেশন #হামলা