সোমবার ● ২৯ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রবাসে » “যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সংবাদ সম্মেলন; মহান মুক্তিযুদ্ধ আর স্বাধীনতার গৌরব টিকিয়ে রাখা, সহিংসতা ও অপপ্রচার রোধে সাংবাদিকদের সহযোগীতার আহ্বান
“যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সংবাদ সম্মেলন; মহান মুক্তিযুদ্ধ আর স্বাধীনতার গৌরব টিকিয়ে রাখা, সহিংসতা ও অপপ্রচার রোধে সাংবাদিকদের সহযোগীতার আহ্বান
সংবাদদাতা; বদরুল মনসুর, ওয়েলস, ইউকে
“কোটা বিরোধী আন্দোলনকে পুঁজি করে বাংলাদশে জামাত-বিএনপি‘র দেশব্যাপী সহিংসতা ও দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, বিদেশ থেকে তারেক রহমান সহ স্বাধীনতা বিরোধীদের অপপ্রচার এবং সোমবার (২৯ জুলাই) যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে লন্ডনে হাউজ অব কমন্সের সামনে সর্বস্থরের ব্রিটিশ-বাঙ্গালীদের সমাবেশ সফল করতে ২৭ শে জুলাই শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায় সেন্টাল লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ।
যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি জালাল উদ্দিন, সহ সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল আলী,সহ সভাপতি হরমুজ আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নইমুদ্দিন আহমদ রিয়াজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক আ.স. ম. মিসবাহ, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক সারব আলী, তথ্যও গণসংযোগ সম্পাদক রবিন পাল, প্রচার সম্পাদক মাসুক ইবনে আনিস, দপ্তর সম্পাদক শাহ শামীম আহমেদ , ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ছুরুক আলী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাওছার চৌধুরী, খসরুজ্জামান খছরু, আনসারুল হক, আহমদ হাসান, মোহাম্মদ মকিস মনসুর, যুক্তরাজ্য মহিলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আঞ্জু মান আরা অঞ্জু, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমদ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল আহমদ খান, লন্ডন মহানগর যুবলীগের সভাপতি তারিক আহমেদ, যুক্তরাজ্য ছাত্র লীগের সভাপতি তামিম আহমদ, সেক্রেটারী সজীব ভূইয়া প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, কোটা আন্দোলনকে পুঁজি করে বাংলাদেশে গত প্রায় এক মাস ধরে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো আপনারা নিশ্চয়ই জানেন এবং বুঝেন। ২০১৮ সালে আন্দোলনকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এক নির্বাহী আদেশ বলে কোটা প্রথা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করে দেন। পরবর্তীতে এই বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু সন্তানসন্ততি এবং হাইকোর্ট তাদের পক্ষে রায় দেয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। এই আপিলের শুনানির প্রক্রিয়া যখন চলছিলো ঠিক সেই মুহুর্তে দেশদ্রোহী কুচক্রীদের প্ররোচনায় আন্দোলনকারীরা সরকারকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলে, অথচ কোটার ব্যাপারে আন্দোলনকারী আর সরকারের অবস্থান ঐ সময়ে অভিন্ন ছিলো।
আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে যখনই ঐ পেছন থেকে ইন্ধনদাতারা সামনে চলে আসে তাদের রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের দুরভিসন্ধি হাসিল করার জন্য, তখনই আন্দোলনের নেতৃত্ব তাদের হাতে চলে যায় কিংবা তারা নিয়ে নেয়; সরকারের মাননীয় মন্ত্রীমহোদয়দের সাথে আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দের বৈঠকের সময় তারা নিজেরাই তা স্বীকার করেছেন।
তারপর শুরু হয় সেই ২০১৩ এবং ২০১৮ সালের কায়দায় ধ্বংসলীলা। দেশ ও জাতির স্বার্থে সরকারের তখন শক্ত হাতে এই ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলোনা। তাদের এই ‘পোড়ামাটি’ ক্যাম্পেইন যখন চুড়ান্ত পর্যায়ে চলে যায় তখন সরকার সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে বাধ্য হয়। প্রথমে পুলিশ, তারপর বর্ডার গার্ড, তারপর র্যাব এবং সর্বশেষ পর্যায়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে সরকার, আপনারা নিশ্চয়ই তা খেয়াল করেছেন। দুষ্কৃতিকারীদের এই তান্ডব সামাল দেয় সেনাবাহিনী সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সকল মৃত্যুই বেদনাদায়ক, সেটা হউক ছাত্রের, হউক রিক্সা শ্রমিকের, হউক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিংবা সাধারণ পথচারীর। যে ধ্বংসলীলা জামাত-বিএনপি ও জঙ্গিরা করেছে তা যেকোনো স্বাভাবিক মানুষেকে মূঢ় করে দেবার জন্য যথেষ্ট। মানুষ হত্যা করে গাছে কিংবা ফ্লাই অভারের উপর থেকে ঝুলিয়ে দেবার মতো পাশবিকতা তাদের ২০১৩/২০১৮ সালের কথা মনে করিয়ে দেয়। তারপরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই সময়ে যারাই মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সকলের দায়দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন এবং ইতোমধ্যেই আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে তাঁর বক্তব্যকে বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছে আন্দোলনকে রক্তাক্ত করবার জন্য। আপনারা নিশ্চয়ই তাদের শ্লোগানের ভাষা শুনেছেন যা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল মানুষকে বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বিস্মিত করেছে।
বাঙালির হাজার বছরের সবচেয়ে বড়ো অর্জন আমাদের স্বাধীনতা, তারা সেই স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করেছে। সরকারের দায়িত্ব এই দুষ্কৃতকারীদের দমন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই কাজটিই করছেন এবং তারজন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে তিনি প্রস্তুত।
একটি গনতান্ত্রিক, অগ্রসর জাতি এবং দেশ গঠনে আমরা যখন অনেকটা পথ এগিয়ে গেছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে, ঠিক তখনই তারা অতীতের মতো তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু করেছে এগিয়ে যাওয়ার বাংলাদেশকে ধ্বংস স্তুপে পরিনত করবার জন্য।
আপনারা একটু খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন যে তাদের আক্রমণের টার্গেট ছিলো গত পনেরো বছরে আওয়ামীলীগ সরকারের যতো অর্জন যা বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে, সেই সব স্থাপনাগুলো।
আপনারা আরেকটি ব্যাপার নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে, দেশের এই সংকটময় মুহুর্তে যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগ পূর্ব লন্ডনের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এক সভার আয়োজন করে কিন্তু রক্তপিপাসু তারেক জিয়ার লেলিয়ে দেয়া পেটুয়া বাহিনীর হাত থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরও রেহাই পায়নি। তারা দেশে যেমন হাজার হাজার কোটি টাকা খরছ করে আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যায় মেতে উঠেছে, বৃটেনের মতো একটি গনতান্ত্রিক দেশেও দুর্নীতির বরপুত্র তারেক একই কায়দায় কমিউনিটিকে অশান্ত করে তুলছে যা বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আপনার-আমার সকলের জন্যই লজ্জার।
আমরা, আপনাদের সাহায্য চাই, এই দেশ আমাদের সকলের। ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দু’লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করে একটি গনতান্ত্রিক এবং অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা আমাদের অঙ্গীকার।
আপনারা সমাজের বিবেক, আপনারাই পারেন এই ক্রান্তিলগ্নে ন্যায় এবং সত্যের পথে দাঁড়িয়ে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ আর স্বাধীনতার গৌরব টিকিয়ে রাখার সংগ্রামে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সাহায্য করতে।
পরিশেষে, এই আন্দোলন চলাকালীন সময়ে যারাই মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি।
দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আপনারা আপনাদের মুল্যবান সময় আমাদেরকে দিয়েছেন, এইজন্য আবারও আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বাংলাদেশে হামলার জন্য সরকারকে দায়ি করে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারী কতৃক প্রদত্ত বিবৃতির ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে নেতৃবৃন্দ বলেন ক্লাবের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়ার পুর্বে তাদের উচিত ছিল আমাদের সাথে যোগাযোগ করা বা পুরো বিষয় অবগত হয়ে এজাতীয় বিবৃতি প্রদান করা। ব্রিটেন একটি গণতান্ত্রিক দেশ তারা যে কোন বিবৃতি দিতেই পারেন। লন্ডনবাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সেক্রেটারীর এজাতীয় বিবৃতি তাদের রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন ঘটেছে। আমরা জানি সাংবাদিকদের নিরপেক্ষ হওয়া উচিত, তারা তা না করে দলীয় ভুমিকা পালন করেছেন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে সোমবার হাউজ অব কমন্সের সামনে সর্বস্থরের ব্রিটিশ-বাঙ্গালীদের সমাবেশে উপস্থিত থেকে সত্য তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ ও অনুরুধ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামীলীগ-যুবলীগ,ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামীলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক্স ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়: #অপপ্রচার #আওয়ামীলীগ #আর #আহ্বান #গৌরব #মহান #মুক্তিযুদ্ধ #যুক্তরাজ্য #রোধ #সংবাদ #সম্মেলন #সহযোগীতা #সহিংসতা #সাংবাদিক #স্বাধীনতা