শুক্রবার ● ৯ আগস্ট ২০২৪
প্রথম পাতা » লাইফস্টাইল » আপনার কোন আচরণ সন্তানের মনে প্রভাব ফেলছে?
আপনার কোন আচরণ সন্তানের মনে প্রভাব ফেলছে?
সন্তানকে আদর করার পাশাপাশি শাসন করাও জরুরি। কিন্তু জ্ঞানত-অজ্ঞানত প্রত্যেক মা-বাবাই সন্তানকে এমন কিছু কথা বলে বসেন, যা তাদের মনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। অথবা সন্তানের সামনেই এমন আচরণ করেন যা সঠিক নয়।
অনেক বাবা-মাই তাঁদের ব্যক্তিগত সমস্যার কথা শিশুর সামনেই আলোচনা করেন অথবা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া, অশান্তি, কটূ কথা অবধি বলেন। পরিবারের অন্যদের নিয়ে সমালোচনাও যে হয় না তা নয়।
ফলে শিশু সেইসব দেখে ও শুনে নিজের মনে গেঁথে রাখে। পরবর্তী সময়ে তাদের আচরণে ও কথাবার্তায় সেইসব প্রকাশ পায়।
তাই শিশুর সামনে কোন কথাগুলি একেবারেই বলা উচিত নয়, তা প্রত্যেক বাবা-মায়েরই জেনে রাখা জরুরি।
১) মনস্তত্ত্বও কিন্তু বেশ জটিল। আপনার অসতর্ক হয়ে বলা কোনও কথাও কিন্তু ওর মনের মধ্যে বিরাট প্রভাব ফেলতে পারে। শিশুকে কোন কথা বলছেন তা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই খুদের সামনে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন তা-ও জরুরি। যেমন শিশুকে বকাঝকার সময়ে কখনওই অশ্রাব্য বা অশালীন ভাষার প্রয়োগ করবেন না। এমনকি শিশুর সামনে নিজেদের মধ্যেও কথাবার্তায় সংযম রাখুন। যে কোনও গালিগালাজ বা অশালীন কথা শিশুর মনে গভীর প্রভাব ফেলে। সেই কথাগুলিই তারা আগে আত্মস্থ করে নেয়। তাই সতর্ক থাকতেই হবে।
২) দিদি-দাদা বা ভাই-বোনের সঙ্গে কখনওই তুলনা করবেন না। এতে শিশুর মনে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। তার নিজস্বতাকেই স্বীকৃতি দিন। ভাল কাজের প্রশংসা করুন।
৩) দোষারোপ করে কোনও কথা বলবেন না। শিশু ভুল করলে তা ধরিয়ে দিন। কী ধরনের ভুল হচ্ছে তা উদাহরণ দিয়ে বোঝান। কখনওই এমন কথা বলবেন না যা তাদের আত্মবিশ্বাসকে ভেঙে দেয়। ইতিবাচক কথা বলেও ভুলের সংশোধন করা যায়।
৪) মা বেশি ভালবাসেন না বাবা— এই প্রশ্ন কখনওই করবেন না শিশুকে। কারণ মা ও বাবা দু’জনেই সমান গুরুত্বপূর্ণ সন্তানের কাছে। কে বেশি ভালবাসে এমন প্রশ্ন বার বার করতে থাকলে, শিশুর মধ্যে মিথ্যা কথা বলার প্রবণতা তৈরি হবে। সে বুঝতে পারবে, কার সামনে কী বলতে হবে। ফলে ছোট থেকেই গল্প বানিয়ে বলা, মিথ্যা কথা গুছিয়ে বলা শিখে যাবে।
৫) দাম্পত্যের সমস্যা, পরিবারের কারও সঙ্গে মনোমালিন্যের কথা ভুলেও শিশুর সামনে বলবেন না। কখনও ঘনিষ্ঠ জনেদের নিয়ে সমালোচনা বা আলোচনা খুদের সামনে করবেন না। এইসব কথা তাদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তখন শিশুর অন্যের প্রতি ব্যবহার ও আচরণও সঠিক হবে না।
৬) ছেলে ও মেয়ের মধ্যে তফাত করবেন না! দু’জনকেই একই চোখে দেখুন। ছেলেদেরকে যে সব কাজের জন্য স্বাধীনতা দিচ্ছেন, মেয়েদেরও তা থেকে বঞ্চিত করবেন না। তা হলেই শিশুর সকলের প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাব তৈরি হবে।
৭) সবসময়ে কাজে বাধা দেবেন না। সব কাজে ‘না’ করবেন না। স্বাধীনতা দিন নিজের মতামত দেওয়ার। তা হলেই দায়িত্ববোধ তৈরি হবে। ভুল থেকেই শিখতে দিন। কী কাজ করছে তা নজরে রাখুন। ভুল হলে শুধরে দিন। বার বার সব কাজে নিষেধ করতে থাকলে শিশুর আগ্রহই হারিয়ে যাবে। নতুন কিছু করার উৎসাহ পাবে না।
বিষয়: #আচরণ #আপনার #প্রভাব #সন্তান