বুধবার ● ২১ আগস্ট ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় উন্নত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দাবি এবি পার্টির
সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় উন্নত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দাবি এবি পার্টির
বজ্রকণ্ঠ নিউজঃ
ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে যানজট কমানো ও উন্নত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি।
গত কয়েকদিন যাবত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অসহনীয় যানজটের প্রেক্ষিতে এক মিডিয়া ব্রিফিং থেকে এ আহ্বান জানায় দলটি।
২১ আগস্ট, বুধবার বিকেল ৪ টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
ব্রিফিংয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব এবিএম খালিদ হাসান ও মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন।
ট্রাফিক পুলিশের অব্যবস্থাপনা, নির্দিষ্ট বাসস্টপেজে যাত্রী ওঠানামা না করানো, মোড়ে মোড়ে পুলিশ ও তার সহোযোগিদের চাঁদাবাজি, মূল রাস্তায় যত্রতত্র পার্কিং ও রাস্তার উপর দোকান বসিয়ে রাজধানীসহ দেশের মূল শহরগুলোর পুরো পরিবহন ব্যবস্থাই ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে অভিযোগ করেন মজিবুর রহমান মঞ্জু।
তিনি বলেন, এর ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষের মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে। এই অব্যবস্থাপনা দূর করতে অবিলম্বে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় যানজট কমানো ও উন্নত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
মূল বক্তব্যে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, রাস্তায় ফুটপাত, ময়লার ভ্যান, যত্রতত্র গাড়ি রেখে রাস্তাকে সংকীর্ণ থেকে আরও সংকীর্ণতর করে ফেলা হচ্ছে। ট্রাফিক আইন অমান্য করার ফলে রাস্তার স্বাভাবিক শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ ছাড়া চালকের অদূরদর্শিতা, শহরমুখী মানুষের স্রোত, অপ্রশস্ত রাস্তা প্রভৃতি বিষয়ও যানজটের অন্যতম কারণ। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, রাস্তার স্বল্পতা, ব্যক্তিগত গাড়ি বৃদ্ধি, ফুটপাত ও রাস্তা দখল, গণপরিবহনের অব্যবস্থাপনা এবং সমন্বয়হীনতা-এসব মিলে এই যানজট পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০৩৫ সালের মধ্যে সবকটি মেট্রোলাইনের কাজ শেষ হলেও যানজট কমবে না, যদি বাস সার্ভিসের উন্নতি না হয়। কারণ, তখনো মোট যাত্রীর ১৭ শতাংশ মেট্রো ব্যবহার করবেন। অন্যদের ভরসা থাকবে বাস। ঢাকায় সড়ক আছে মোট ভূমির ৭-৮ শতাংশ, একটি মেগাসিটিতে শহরের আয়তনের ২৫ শতাংশ রাস্তা থাকতে হয়। এসব সড়কের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ আবার পার্কিং ও হকারদের দখলে থাকে। শহরের হাতে গোনা কয়েকটি সড়ক ছাড়া বেশির ভাগ সড়কের ফুটপাত দিয়েই হাঁটার জো নেই। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ, ট্রাফিক পুলিশ, বিআরটিএসহ নানা সংস্থার কার্যক্রম এর সঙ্গে জড়িত। শুধু মেট্রোর ওপর ভরসা না করে মূল সড়ক ও কমিউনিটিভিত্তিক সড়ক ব্যবস্থাপনার প্রতি জোর দিতে হবে।
মেট্রোর সঙ্গে মূল সড়কে উন্নত বাস সার্ভিস চালু করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, রাজধানীর তীব্র যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে, অতিরিক্ত প্রাইভেটকারের উপস্থিতি, রাস্তার যানবাহনের প্রায় ৮০ শতাংশ প্রাইভেট কার, মোট রাস্তার ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ। দীর্ঘক্ষণ গাড়ির ইঞ্জিন চালু থাকার ফলে নগরীর বায়ু দূষিত হচ্ছে। ফলে অ্যাজমা, হাঁপানিসহ নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন ঢাকার রাস্তায় নামছে প্রায় ২০০ ধরনের নতুন পরিবহন। ২০৩০ সালে ঢাকায় জনসংখ্যা হবে ৩ কোটি।
যানজটের সমস্যা নিরসনে তিনি কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন, যা বাস্তবায়িত হলে যানজটের সমস্যা থেকে নগরবাসী মুক্তি পেতে পারেন। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে;
১. যানজটের সমস্যা নিরসনে দেশি-বিদেশি সদস্যের সমন্বয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন গঠন করা যেতে পারে। এ কমিশন যানজটের প্রকৃত কারণ নির্ণয়সহ সমাধানের পরামর্শ দিতে ও প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের পরামর্শ দেবে।
২. রাজধানী ঢাকায় প্রাইভেট কারের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাধিক্য যানজটের একটি অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচ্য হয়।
৩ . শহরকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে।
৪ . সড়ক আইন ২০১৮ বাস্তবায়ন করতে হবে
৫ . ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজড করতে হবে।
৬ . ফুটপাত হকার মুক্ত করা ও হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
৭ . পার্কিং স্পেইস বাড়ানো।
৮ . পুলিশ/বিআরটিএ কে দুর্নীতি মুক্ত করতে হবে।
৯ . পরিবহন শ্রমিক/মালিক সমিতি নিয়ন্ত্রণ করা।
১০ .গাড়ি রেকার/তুলে নিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে হবে।
১১ . কোম্পানি ভিত্তিক রুটের বাস নামানো দরকার, তাহলে অসুস্থ প্রতিযোগিতা কমে যাবে
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আজকে আমরা যানজট নিয়ে কথা বলছি কারণ আপনারা দেখছেন গত সপ্তাহ খানেক যাবত পুরো ঢাকা অচল হয়ে পরেছে। মানুষ অত্যন্ত কষ্ট পাচ্ছে। আমাদের ছাত্ররা বেশ কয়েকদিন লেন মেইনটেইন করে সুন্দরভাবে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করেছে। বর্তমান সমস্যায় যেহেতু আমাদের সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে সেহেতু ছাত্রদের ও পুলিশের সাথে সেনাবাহিনী সমন্বয় করে পাইলট প্রজেক্ট আকারে তিন মাসের জন্য ঢাকার ট্র্যাফিক সিস্টেম সুশৃঙ্খল করা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা, ছাত্র নেতৃবৃন্দসহ সবাইকে ট্র্যাফিক সিস্টেম স্বাভাবিক করার স্বার্থে এবি পার্টি ঘোষিত প্রস্তাবনাসমূহ অবিলম্বে বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানান।
এসময় ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান, মোস্তফা বিন মালেক, যুবপার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার ফারুক, উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুনা হোসাইন, শাহিনুর আক্তার শীলা, রিপন মাহমুদ, শরন চৌধুরী, মশিউর রহমান মিলু, আমেনা বেগমসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বিষয়: #উন্নত #এবি #করার #ট্রাফিক #দাবি #নিশ্চিত #পার্টির #ব্যবস্থাপনা #সহযোগিতা #সেনাবাহিনী