মঙ্গলবার ● ২৮ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » ধর্ম » জাতির শ্রেষ্ঠ তিন অভিভাবক যাদের শুণ্যতা আজও অনুভব করে এ জাতি
জাতির শ্রেষ্ঠ তিন অভিভাবক যাদের শুণ্যতা আজও অনুভব করে এ জাতি
হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী
১.হযরত আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী ছাহেব রাহিমাহুল্লাহ (১৯১৩-২০০৮)-
বিশ্ব নন্দিত আলেমে দিন শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব রাহিমাহুল্লাহ একজন যুগশ্রেষ্ট আলেম,বুযুর্গ ও পীর সাহেব ছিলেন। ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে তার অবদান সবার শীর্ষে ছিলো, দেশ-বিদেশে তাঁর হাতে গড়া প্রতিষ্টানের সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিকের উপরে। ইলমে তরিকত, ইলমে হাদীস, ইলমে কিরাতের খেদমতে তিঁনি ছিলেন এ যুগের একজন শ্রেষ্ট নায়েবে রাসুল। দেশ- বিদেশে তাঁর অসংখ্য ভক্ত-মুরিদান রয়েছেন। তিঁনি একাধারে একজন প্রতিথযশা শায়খুল হাদীস, শায়খুত তাফসীর ও শায়খুল কুররা ছিলেন।দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট, লতিফিয়া কারী সোসাইটি, আনজুমানে আল ইসলাহ, তালামিযে ইসলামিয়া, আনজুমানে মাদারিসে আরাবিয়া, জমিয়তুল মুদাররিসিন,লতিফিয়া এতিমখানা সহ অসংখ্য প্রতিষ্টানের জনক ছিলেন তিঁনি। বাংলাদেশের সকল আন্দোলন -সংগ্রামের সিংহ পুরুষ ছিলেন। আরবী ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্টার সফল রুপকার ছিলেন শতাব্দির শ্রেষ্ঠতম ইসলামি চিন্তাবিদ -আল্লামা ফুলতলী ছাহেব রহ:। আল্লামা ফুলতলী ছাহেব রাহিমাহুল্লাহ এর সবচেয়ে বড় কারামত হচ্ছে তাঁর সকল সাহেবজাদা এবং নাতিরা দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান যোগ্য আলেম এবং সুপ্রতিষ্ঠিত।
২.খতিব আল্লামা উবায়দুল হক রহ: (১৯২৮-২০০৭)-
জকিগঞ্জের আলোকিত সন্তান খতিব মাওলানা উবায়দুল হক রাহিমাহুল্লাহ একজন প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও ইসলামী শিক্ষাবীদ ছিলেন। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দীর্ঘ সময়ের খতীব (১৯৮৪-২০০৭) ও ঢাকা আলিয়া মাদরাসার হেড মাওলানা ছিলেন তিনি। এদেশের আপামর ইসলামপ্রিয় জনতার একজন সম্মানিত অভিভাবক ছিলেন। ইসলামী রাজনীতি ও ধর্মীয় ফেরকাবাজীর উর্ধে ছিলো তাঁর অবস্থান। বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব এবং বহু উচ্চ মানসম্পন্ন ইসলামী গ্রন্থাবলীর রচয়িতা ও সংকলক ছিলেন তিনি। তাঁর মতো একজন উম্মাহ প্রেমিক অভিভাবক আজ আমাদের জাতীয় জীবনে খুবই প্রয়োজন ছিলো। তিঁনি এদেশের ইসলামী দলের ও শীর্ষ ইসলামী চিন্তাবিদ ও রাজনীতিবিদদের একজন অভিভাবক ছিলেন।
৩.মাওলানা এম এ মান্নান রহ: (১৯৩৫-২০০৬)-
মাওলানা এম এ মান্নান এক কালজয়ী পুরুষেরই নাম। দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠতা, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের রূপকার, মসজিদে গাউসুল আযম ও জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কমপ্লেক্সের স্থপতি, অসংখ্য দ্বীনী প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক, সাবেক ধর্ম ও ত্রাণমন্ত্রী, এমপি আলহাজ মাওলানা এম এ মান্নান রহ: এক মহান কর্মবীর, এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।আলিয়া মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে তার ভূমিকা ছিলো সবার শীর্ষে।তারই আন্তরিক প্রচেষ্টার বিনিময়ে এদেশের আলিয়া মাদরাসা সমূহ সরকারী সুযোগ-সুবিধা লাভে ধন্য হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের অভিভাবক পর্যায়ের শীর্ষ আলেম, রাজনীতিবিদ,গবেষক ও সম্পাদক ছিলেন।
আল্লাহ তায়ালা তাদের সকলকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। আমিন।
(বি: দ্রষ্টব্য - এই ছবিটি ইরাকের উপর মার্কিন হামলার প্রতিবাদে সিলেট আলিয়া মাঠে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব রহ: এর ডাকে ঐতিহাসিক মহাসমাবেশ এর প্রদত্ত ছবি-২০০১) আমার সৌভাগ্য ছিল সেদিন সামনে বসেই তাদের বক্তব্য শুনেছিলাম, যা আজো মনে পড়ে আমার।
লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।
বিষয়: #আহমদ #দুধরচকী #মাছুম #হাফিজ