বুধবার ● ২৮ আগস্ট ২০২৪
প্রথম পাতা » শিক্ষা » শিক্ষক বদলীর নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুস কেলেংকারি অভিযোগ
শিক্ষক বদলীর নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুস কেলেংকারি অভিযোগ
আনোয়ার হোসেন রনি, ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাসের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি,অনিয়ম ঘুষ ও শিক্ষক বদলী, ফাইল আটকে রেখে অনৈতিক শিক্ষক নিয়োগ ও পছন্দের বিদ্যালয়ে পোস্টিং দেওয়ার নামে শিক্ষকদের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষক শিক্ষিকাদের অনিয়মের অভিযোগ দায়ের করলে ও তদন্ত ছাড়াই রহস্যজনক কারনে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা মোহন লাল দাসের নিদের্শ অফিস থেকে একাধিক ফাইল গায়ের হয়ে গেছে বলে অভিযোগের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৮ ফেরুয়ারী ২০২৪ সালে সিলেটের উপ-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে একটি আদেশে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জয়ন্তী রানী দেবনাথকে বদলী করলে ও (জয় বাংলা শ্লোগানধারি ছাত্রলীগ) সহকারী শিক্ষক পংকজ দত্তকে ৭ মাসেও রহস্যহনক কারনে বদলী করা হয়নি। জয় বাংলা শ্লোগানধারী ভারতীয় দালাল (র)গোয়েন্দা সংস্থার সাবিক সহযোগিতার মাধ্যমে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা থেকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা হিসাবে প্রমোশন পেয়েছেন মোহন লাল দাস।সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক কর্মকতা হিসাবে যোগদান করেই (দেশে বির্তকিত বোমা মানিক) এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আওয়ামীলীগের দালালি করে অনেকেই বিদ্যালয়ে না গিয়ে বাসা বসে একাধিক শিক্ষক শিক্ষিকরা বেতন ভাতা উত্তোলন অভিযোগ রয়েছে। টেপুডেশন বদলী নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেযার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব শিক্ষক শিক্ষিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে জেলা শিক্ষা কর্মকতা কোনো ব্যবস্থা নেননি। এসব দুর্নীতির নানা অনিমের অভিযোগের ঘটনায় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম মাঠে কাজ শুরু করেছেন বলে সুত্রে জানায়।
এ শিক্ষা কর্মকতা বিরুদ্ধে রয়েছে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এর প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকে নিয়োগপ্রাপ্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগদান
করেছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পদায়নকৃতদের স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগদানের জন্য বলা হয়েছে। পছন্দের বিদ্যালয়ে পদায়নের জন্য প্রতি শিক্ষককে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা করে একটি সিন্ডিকেট চক্রের সহকারি শিক্ষক সমিতির সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক প্রনব দাস মিন্টু,পংকজ দত্তের মাধ্যমে এসব টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে প্রার্থীর বাছাই করা স্থানে পদায়ন করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা
মোহন লাল দাস বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন নিয়োগকৃত শিক্ষক ও অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। এসব নানা তথ্য-প্রমাণ দিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাসের বিরুদ্ধে একাধিক লিখিত অভিযোগ করেন। আরিফুর রহমান বাদী হয়ে মহাপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা, বিভাগীয় উপপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেট, দুর্নীতি দমন কমিশনার দুদক ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে।
জানা যায়, ২০২৩ সালে আগস্ট সুনামগঞ্জ জেলাধীন ছাতক উপজেলার শ্যামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়ন্তী রানী দেবনাথ ও সহকারী শিক্ষক পংকজ দত্তের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুনীতি ও গ্রামবাসী অভিভাবকবৃন্দ, এসএমসি এবং পিটিএ কমিটি সদস্যবৃন্দ কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করেন দোয়ারাবাজার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার দীন মোহাম্মদ। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষককে প্রশাসনিক কারণে বদলির সুুপারিশ প্রেরণ করা হয়। ভদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয় প্রধান শিক্ষক এ সহকারী শিক্ষক পংকজ দত্তের মধ্যে হাতাহাতি, গালাগালি ও চরম বৈরী সৃষ্টি করেন পংকজ দত্ত ও তার বোনও এ বিদ্যালয়ে চাকরি করায় স্থানীয় সরকার দলীয় ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়েছে।এদের কারনে বিদ্যালয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পরিবেশ একেবারে নেই বললেই চলে। লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তিনি প্রধান শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষককে প্রশাসনিক কারণে বদলির মতামত দেন।এ ঘটনায় উপজেলা উপজেলা শিক্ষা কমিটি গত ১৮ জুলাই ২০২২ সালে ২৯ নভেম্বর ২০২২ সালে সভায় উপজেলার শ্যামনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়ন্তী বানী দেবনাথ ও সহকারী শিক্ষক পংকজ দত্তকে এ বিদ্যালয় থেকে অন্য বিদ্যালয়ে বদলির সুপারিশ করেন।
উপজেলা সাবেক শিক্ষা ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মাসুম মিয়ার মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক কমকতা মোহন লাল দাসকে কে অনুরোধ করে কপি সংযুক্ত করে। এ অবস্থায়, বিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এড়ানো শিখন কার্যক্রমের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, সর্বোপরি কোমল শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়নে শ্যামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষককে জরুরি ভিত্তিতে বদলি করার সুপারিশসহ জেলা শিক্ষা কর্মকতার বরাবরে প্রেরণ করা হয়। এপরিপ্রেক্ষিতে শ্যামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জয়ন্তী দেবনাথ এ বিদ্যালয় থেকে উপজেলা উত্তর খুরমা ইউপির নাদামপুর সরকারি প্রাথমিক ও একই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পংকজ দত্তকে উপজেলার ইসলামপুর ইউপির বনগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির জন্য প্রস্তাবিত পাঠানো হয়। এ প্রস্তাবিত আদেশ করেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকতা মাহবুব জামান। এঘটনায় সিলেট বিভাগীয় উপপরিচালকের কার্যালয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ১৮ ফেরুয়ারী ২০২৪ সালে স্মারক নং (৩৮.০১.৬০০০.০০০.২৭.০২৯.১৮-১১৬) প্রশাসনিক বদলির জন্য বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন নিদেশ দিয়েছেন সিলেট বিভাগীয় উপ -পরিচালক। তার আদেশে বলা হয়, শ্যামনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষিকা জয়ন্তী রানী দেবনাথ ও একই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক পংকজ দত্তকে প্রশাসনিক বদলি জন্য প্রস্তাব পাওয়া গেছে। এমতাবস্থায়, সহকারি শিক্ষকের প্রশাসনিক বদলির বিষয়টির এখতিয়ার যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করেছেন বিভাগীয় উপ -পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জালাল উদ্দিন। এব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা মোহন লাল দাসের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন রিসিভ করে বলেন,পংকজ দত্তের বদলীর ফাইল পেনিংঙ্গে আছে ।তার বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেংকারি দুনীতি নিয়ে প্রশ্ন করলে মোবাইল ফোনের কল কেটে দেন। এব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর উপ-পরিচালককে একাধিক বার মোবাইল ফোন দিলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেনি।
বিষয়: #অভিযোগ #কেলেংকারি #কোটি #ঘুস #টাকা #নাম #বদলী #শিক্ষক