রবিবার ● ২ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » বিশ্ব » তীব্র তাপদাহে ভারতে একদিনে ৮৫ জনের মৃত্যু
তীব্র তাপদাহে ভারতে একদিনে ৮৫ জনের মৃত্যু
চলমান তাপদাহে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে দেশটির ওড়িশা রাজ্যে। সেখানে সর্বোচ্চ ৪৬ জন মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান এবং উত্তর প্রদেশে এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
কর্মকর্তাদের মতে, শুক্রবার সুন্দরগড়, সম্বলপুর এবং বোলাঙ্গির জেলার রাউরকেলা শহরে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ৪১ জনের মৃত্যু হয়। শুধুমাত্র রাউরকেলা সরকারি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে অন্তত আটজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয় জনস্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক নীলকান্ত মিশ্র জানান, যদিও মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্ত পরীক্ষার পরেই নিশ্চিত হওয়া যাবে, তবে প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে যে মৃত ব্যক্তিদের অধিকাংশই তীব্র তাপের সময় বাইরে কাজ করছিলেন। ‘সন্দেহজনক হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া লোকদের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে’ বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
ওড়িশ্যা
ভারতের কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, চলমান তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ওড়িশ্যার মানুষ। রাজ্যটিতে গত কয়েক দিন আগে থেকে বাতাসের আদ্রতা উল্লেখযোগ্যহারে কমে গেছে। সেখানে তাপমাত্রার পারদ গিয়ে ঠেকে ৫০ ডিগ্রিতে।
ওড়িশ্যা স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজ্যটিতে একদিনে হিট স্ট্রেসে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজন মারা গেছেন রোরকেলা শহরের সুন্দরগড়, সাম্বালপুর ও বোলানগির জেলায়।
গত বুধবারও ৪১ জন মারা যান। রোরকেলা সরকারি হাসপাতালে দুপুর দেড়টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আটজন মারা যান।
রাজ্যটির জনস্বাস্থ্য পরিচালক নীলাকণ্ঠ মিশরা বলেন, চলতি তাপপ্রবাহে রাজ্যটিতে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘গরমের কারণে যারা মারা গেছেন তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’
রাজ্যটির কিছু কিছু স্থানে গত শুক্রবার তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়। সাম্বালপুরে ৪৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঝারুসুগাদায় ৪৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি এবং হিরাকুন্ডে ৪৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে। উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে আদ্রতা ৮০ শতাংশে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ।
বিহার
চলমান তাপপ্রবাহে বিহার রাজ্যে মারা গেছেন ১৯ জন। রাজ্যটির আরওয়াল, বুক্সার, রোহতাস ও বেগুসরাই জেলায় আটজন মারা গেছেন। বোজপুরে নির্বাচনের কাজে যুক্ত পাঁচ ব্যক্তিসহ মারা গেছেন নয়জন। জাহানাবাদে এক সেনাসহ মারা গেছেন আটজন। কাইমুর জেলায় এক শিক্ষকসহ মারা গেছেন ছয়জন। গায়াতে মারা গেছেন তিনজন। শেখপুর ও মুঙ্গেরে দুজন করে মারা গেছেন।
হিটস্ট্রোকে একটি রেলস্টেশনে দুইজন ও একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন এক কৃষি কর্মকর্তা। এছাড়া গোপালগঞ্জ, জামুই, লক্ষ্মীসরাই ও পূর্ব চম্পারণ জেলা থেকেও গরমের কারণে মৃত্যুর খবর জানা গেছে। বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে তিন শতাধিক মানুষ ভর্তি হয়েছেন। অরঙ্গাবাদ জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় ২০০ জন।
ঝাড়খন্ড
প্রচণ্ড গরমে ঝাড়খন্ড চারজন মারা গেছেন। অতিরিক্ত রোগীর চাপে রাজ্যটির বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে কোনো স্থান নেই। খোলা জায়গায় রোগীর বিছানা বসিয়ে চিকিৎসা চলছে।
ঝাড়খন্ড জাতীয় হেলথ মিশনের পরিচালক ডা. অলক ত্রিবেদী বলেন, মারা যাওয়াদের হাসপাতালে আনার আগেই হিটস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে, বুধবার দিল্লিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এদিন শহরতলি মুঙ্গেশপুরে ৫২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা ভারতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বিষয়: #মৃত্যু