বুধবার ● ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » বরিশাল » একঝাঁক দুর্নীতিবাজে আচ্ছাদিত লালমোহন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি
একঝাঁক দুর্নীতিবাজে আচ্ছাদিত লালমোহন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি
বজ্রকণ্ঠ নিউজঃ
ভূমিদস্যু ক্লাবদস্যু শিক্ষাদস্যুসহ একঝাঁক দুর্নীতিবাজ সমন্বয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে লালমোহন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি।
আদর্শ সমাজ সমৃদ্ধ দেশ বিনির্মাণের জন্য যেখানে দরকার সৎ, যোগ্য ও দুর্নীতিমুক্ত সামাজিক নেতৃত্ব, সেখানে একঝাঁক দুর্নীতিগ্রস্ত ও দুর্নীতিবাজের সমন্বয়ে যদি গঠন করা হয় দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি; দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ভারী সংগঠনের সহযোগি নাগরিক সংগঠন ! জনজীবনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া না হয়ে যায় কোথায় !!
দেশের একমাত্র দ্বীপজেলা ভোলার মধ্যবর্তী উপজেলা লালমোহনের ক্ষেত্রে এমন অপকর্মটি দুদক থেকে প্রাপ্ত হঠাৎ ক্ষমতাবলে এলাকার জনজীবননের জন্য উপহার দিয়ে গেছেন সাবেক লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনামিকা নজরুল । সুত্রমতে ইকোনমিক ক্যাডারের এই ভদ্রমহিলা (!) লালমোহন উপজেলায় দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটিসহ বেশ কয়েকটি বিতর্কিত কর্মকাণ্ড উপহার দেয়ার পরেই ভোলার পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালী জেলার দুমকীতে ইউএনও হিসেবে ট্রান্সফার হয়ে যান । লালমোহনে তার সবচেয়ে বিতর্কিত আয়োজন ছিল উপজেলা সাহিত্য মেলা ২০২৩ । জাতীয়ভাবে খ্যাত লালমোহনে জন্মগ্রহণকারী দুই গুণী লেখক : কথাসাহিত্যিক কালাম ফয়েজী এবং বীরমুক্তিযোদ্ধার সন্তান কবি রিপন শান কে বাদ রেখেই স্হানীয় একটা সো-কল্ড ধান্দাবাজ টিমকে দায়িত্ব দিয়ে তিনি বাস্তবায়ন করেন উপজেলা সাহিত্য মেলা ২০২৩ । ঐ মেলার মূল সমন্বয়কারী হিসেবে তিনি দায়িত্ব দেন সবসময় প্রেজেন্ট গভর্নমেন্ট বেনিফিসিয়ারি সাংবাদিক মোঃ জসিম উদ্দিন জনিকে। যার আদৌ কোন সাহিত্যকর্ম বা প্রকাশিত কোন বই নেই। লালমোহন পৌরসভার অব্যবহৃত গোল মার্কেটের তিনটি ঘর দখল করে এই ‘সাম্বাদিক’ দীর্ঘদিন ধরে নির্বিবাদে চালিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল ব্যবসা । মেলায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন- ভাঙাপোলের দুর্ধর্ষ ক্যাডার স্বঘোষিত প্রাবন্ধিক সাংবাদিক মোঃ নুরুল আমিন। এই প্রাবন্ধিকের সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা আই.এ। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ এই সাংবাদিক প্রকাশ্য চাঁদাবাজি, সুপার ইয়োলো জার্নালিজমে ব্যাপকভাবে অভিযুক্ত এবং এলাকায় ‘ঘুটা নুরু’ হিসেবে পরিচিত।
লালমোহনের সাবেক ইউএনও অনামিকা নজরুলের ট্রান্সফার পূর্ববর্তী দ্বিতীয় সেরা অপকর্মটি হলো একঝাঁক দুর্নীতিবাজ ও দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত ব্যক্তিদের দিয়ে তিন বছরের জন্য লালমোহন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি পুনর্গঠন। এ কমিটির সভাপতি হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন : লালমোহন উপজেলায় বসবাসরত ঘরজামাই, পার্শ্ববর্তী বোরহানউদ্দিন উপজেলার স্হায়ী বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আব্দুর রব মাস্টারকে । লালমোহন পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের বেশকটি সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগে যার বিরুদ্ধে ভোলা জেলা জজ আদালতে দুটি দেওয়ানি মামলা চলমান। একটিতে তিনি আবার দোষী সাব্যস্ত। লালমোহন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষক পেশাজীবনে ছিলেন কোচিং বাণিজ্যের মহাতারকা। তার সাবেক ছাত্রীরা জানিয়েছেন- লালমোহন গার্লস হাইস্কুলে আমরা যখন নুর মোহাম্মদ স্যারের কাছে ইংরেজি প্রাইভেট পড়তাম, তখন পাশের রুমে রব স্যার একঘন্টায় তিনটি ব্যাচ শেষ করে ফেলতেন !
২০২৩ সালের ১৭ মে এক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় একমাত্র সন্তান হারান বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও লালমোহন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির জনপ্রিয় সাধারণ সম্পাদক কবি রিপন শান । একমাত্র কন্যা পরাণপাখিকে হারিয়ে তিনি যখন শোকের সাগরে নিমজ্জিত তখন তাকে এক গভীর ষড়যন্ত্র উপহার দিয়েছেন ভৃমিদস্যু আ: রব এবং রীতিমতো মানুষরুপী জানোয়ার জাহিদুল ইসলাম দুলাল । এই ষড়যন্ত্রকে তারা ফলপ্রসূ করেছে লালমোহনের ঘুষখোর সাবেক ইউএনও অনামিকা নজরুল কে দিয়ে ।
লালমোহন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির তিন বারের সাবেক সফল সাধারণ সম্পাদক, লালমোহন উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির নির্বাচিত জনপ্রিয় সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বীরমুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রভাষক শাহাবুদ্দিন রিপন শান কে কর্তন করে সাবেক ইউএনও অনামিকা নজরুল উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির নতুন সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছেন: লালমোহনের কুখ্যাত ক্লাবদস্যু ও লুম্ফেন সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম দুলালকে । মাদ্রাসা শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম দুলাল লালমোহনের নন্দিত গণমাধ্যম সংগঠন লালমোহন মিডিয়া ক্লাব ধ্বংসের খলনায়ক। দীর্ঘদিন এলাকার বাইরে এনজিও কর্মীজীবন অতিবাহিত করে লালমোহন ফিরে অতি অল্প সময়ে লালমোহন মিডিয়া ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হয়ে সামাজিক পরিচিতি অর্জন করে এই দুলাল । হঠাৎ করেই লালমোহনের বহুল বিতর্কিত পকেট সংগঠন লালমোহন রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যপদ গ্রহন করে। বিতর্কিত এমপি শাওনের আশির্বাদে চোখের পলকে রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক বনে যান। দুটি সাংবাদিক সংগঠনের সাথে সংঘর্ষ বাজিয়ে দিয়ে একটা ব্যাপক তালগোল পাকিয়ে ফেলেন পদলোভী বিতর্কিত সাংবাদিক জাহিদ দুলাল। এসময় সাবেক এমপি শাওনের সাথে লালমোহন মিডিয়া ক্লাবের ভূল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হলে অদৃশ্য ঈশারায় রাতের আঁধারে লালমোহন থানা রোডে অবস্থিত মিডিয়া ক্লাবের অফিস থেকে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার মালামাল সরিয়ে ফেলেন ক্লাবদস্যু জাহিদুল ইসলাম দুলাল।
ভূমিদস্যু আব্দুর রব এবং ক্লাবদস্যু জাহিদ দুলালের যোগসাজশে সাবেক ইউএনও অনামিকা নজরুল লালমোহন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহ-সভাপতি বানান- হামীম রেসিডেনসিয়াল একাডেমিখ্যাত শিক্ষাদস্যু মোঃ রুহুল আমিন কে । নামের আগে অধ্যক্ষ খচিত বিএ পাশ দাবীদার রুহুল আমিন এর পরিচালনায় পরিচালিত হামীম স্কুল এন্ড কলেজের ক্লাশ ফোরের একজন ছাত্র কে মাসে বেতন গুনতে হয় ছয় হাজার টাকা। দ্বীপজেলার মফস্বল শহরে যা নিতান্তই জুলুম এবং জবরদস্তি। বিশ্বস্ত সুত্রের বরাত : মো: রুহুল আমিন একসময় বিপিএড কোটায় বালুরচরহাট দাখিল মাদ্রাসায় চাকরি করতেন। মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির কাছে তার বিপিএড সনদ জাল প্রমানিত হলে তিনি সেখান থেকে কেটে পড়েন ।
২০০১ সালের দিকে তিনি লালমোহন উত্তর বাজারের চিপায় প্রতিষ্ঠা করেন হামীম একাডেমি শীর্ষক কোচিং সেন্টার। কালক্রমে ফুলেফেঁপে সেই কোচিং লালমোহন ওয়েস্টার্ন পাড়ায় বিশাল ভূমি নিয়ে পরিনত হয় হামীম রেসি: স্কুল এন্ড কলেজে । লালমোহনের শিক্ষাঙ্গন শিল্পকলা তথ্যকলা সর্বত্র এখন হামীমগ্রাসে জর্জরিত। দুপ্রকের বিধি অমান্য করে খালেক সওদাগর নামক একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে এই কমিটির সহ-সভাপতি বানানো হয়েছে। আরো তিনটি সদস্য পদে কোচিং বাণিজ্যের তারকাখ্যাতি সম্পন্ন তিন স্কুল শিক্ষক কে পদায়ন করে এক মহাবিতর্কিত লালমোহন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি পুনর্গঠন করেছেন সাবেক ইউএনও (লালমোহন) অনামিকা নজরুল। সচেতন মহল বলেছেন- একঝাঁক দুর্নীতিবাজ আচ্ছাদিত এই ধরনের কমিটির মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ তো নয় বরং বাস্তবায়ন হবে বেশি বেশি ।
বিষয়: #একঝাঁক #দুর্নীতিবাজ