মঙ্গলবার ● ১ অক্টোবর ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » গোয়াইনঘাটে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ
গোয়াইনঘাটে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ
বজ্রকণ্ঠ অনলাইন ডেস্ক:
সিলেটের গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের অনিয়মিত শিক্ষার্থী আজমল হোসেনের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন উপজেলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করা হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নের সিমিরপাড় গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে ও গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আরজানুল আযহার জুনেদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গোয়াইনঘাট উপজেলায় কাউকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। উপজেলার গোয়াইন গ্রামের বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম স্থানীয়ভাবে এ আন্দোলনে সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, উপজেলায় কোনো সমন্বয়ক না থাকলেও লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের লেঙ্গুড়া গ্রামের ফয়ছলের ছেলে আজমল হোসেন (২২) নিজেকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে এলাকায় প্রকাশে চাঁদাবাজি করছেন।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর আজমল হোসেন ও তার সহযোগী কিবরিয়া আহমদ (২০), রুহুল আমিন (৩০), খসরুল আমিনসহ (২৮) আরও ৪/৫ জনকে নিয়ে লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের লেঙ্গুড়া গ্রামের বালুমহালে নৌকা আটকে কয়েকজন শ্রমিককে গালিগালাজ করেন এবং ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। বিষয়টি বালু ব্যবসায়ীরা গোয়াইনঘাট উপজেলার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে জানালে আজমল ও তার সহযোগীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ওই দিনই আরও একটি নৌকা আটকে ব্যবসায়ীদের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তারা। চাঁদা দিতে অসম্মত হওয়ায় তারা ব্যবসায়ীদের উপর বাঁশের লাঠি, স্টিলের পাইপ, লোহার রড নিয়ে হামলা চালান।
এসময় আজমল ব্যবসায়ী উজ্জ্বল মিয়ার (২৫) সঙ্গে থাকা সাড়ে ২৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় উজ্জল মিয়া গোয়াইনঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় একটি পত্রিকার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদ শেয়ার করায় গোয়াইনঘাট কলেজের ডিগ্রি ২য় বর্ষের ছাত্র বাবর উদ্দিন আজমল ও তার সহযোগীদের হামলার শিকার হন। বাবর উদ্দিনও গোয়াইনঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজমল ও তার সহযোগীদের কর্মকা-ের প্রতিবাদে গত ২৪ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) বেলা সাড়ে ১১টায় গোয়াইনঘাট উপজেলার অর্ধ-শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজে জড়ো হয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন। এ সময় আজমল হোসেন তার সহযোগীদের নিয়ে কলেজে এসে মানববন্ধনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালান ও ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। তখন শিক্ষার্থীরা তাদের ধাওয়া করে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেন। কিছুক্ষণ পর আবার কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে আজমল হোসেন ও তার সহযোগীরা ক্যাম্পাসে উপস্থিত স্থানীয় সংবাদকর্মী তানজিল হোসেনের হামলা চালান এবং ক্যাম্পাসে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সেনাবাহিনীর টিমের সহায়তায় তানজিল হোসেনকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তানজিল হোসেন গোয়াইনঘাটে থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, আজমল ও তার সহযোগীরা অনৈতিক সুবিধালাভের উদ্দেশ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক-নার্সদের সেবা প্রদান কার্যক্রমে অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করে আসছেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজমল হোসেন ও তার সহযোগীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তাদের গ্রেফতার এবং শাস্তির দাবিতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) গোয়াইনঘাটবাসীর ব্যানারে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে গণস্বাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। পরে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি স্মারকলিপিও প্রদান করেন সাধারণ জনতা। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজমল হোসেন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে প্রশাসন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেটের সমন্বয়কদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন-বাবর উদ্দিন, আমিরুল ইসলাম, নাজমুল ফাহিম, তানজিল হোসেন, ফখরুজ্জামান ফলিক, শামীম আহমদ সুমন, আশরাফুল আলম ইমন প্রমুখ।
বিষয়: #গোয়াইনঘাট #সমন্বয়ক