শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Bojrokontho
বুধবার ● ১৬ অক্টোবর ২০২৪
প্রথম পাতা » ধর্ম » আল্লাহ অহংকারীদেরকে পছন্দ করেন না!
প্রথম পাতা » ধর্ম » আল্লাহ অহংকারীদেরকে পছন্দ করেন না!
৬৬ বার পঠিত
বুধবার ● ১৬ অক্টোবর ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আল্লাহ অহংকারীদেরকে পছন্দ করেন না!

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।
আল্লাহ অহংকারীদেরকে পছন্দ করেন না!

নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা গোপন ও প্রকাশ্যের সব বিষয়ে অবগত। নিশ্চয়ই তিনি অহংকারীদের পছন্দ করেন না। সূরা আন নাহল (আয়াত ২৩)। আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম আবিষ্কার ‘টাইটানিক জাহাজ’। এই নামটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। টাইটানিক জাহাজকে ঘিরে রয়েছে এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডিক ঘটনা । তারা সীমা অতিক্রম করে অহংকার করত। অহমিকা দ্বারা আল্লাহর ক্রোধকে কতটা কঠোর করেছিল যে, মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ তাদের পাকড়াও করে অহংকারের পতন ঘটিয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের হাজার হাজার মিটার গভীরে তলিয়ে গিয়েছিল শতাব্দীর প্রথম দিকের অন্যতম গৌরব পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং বিলাসবহুল ‘টাইটানিক জাহাজ’। আল্লাহ তায়ালাকে অসন্তুষ্ট করে প্রযুক্তি এবং বুদ্ধিমত্তার অহংকারে টাইটানিক নির্মাতারা জাহাজটি ডিজাইন করার পর এর বিশালতার শক্তি ও টেকনোলজির ওপর এত বেশি আস্থাবান ছিল যে, তারা ভেবেছিল ৮৮২ ফুট লম্বা ১৭৫ ফুট উচ্চ ৯২ ফুট চওড়া এই জাহাজ কখনো ডুববে না, কেউ ডোবাতে পারবে না। এমনকি স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা চাইলেও একে কখনোই ডুবাতে পারবে না। আর সত্যি সত্যি আল্লাহ তায়ালা এদের এত বড় স্পর্ধা দেখে যারপরনাই নারাজ হয়েছিলেন। এতটাই নারাজ হয়েছিলেন যে, তিনি তাদের দম্ভ ও অহংকারকে মুহূর্তেই আটলান্টিক মহাসাগরের পানিতে নিমজ্জিত করে হাজার হাজার মিটার গভীরে তলিয়ে দিয়েছিলেন এবং বিশ্ববাসীকে অহংকারের চূড়ান্ত করুন পরিণতির শিক্ষা দিয়ে আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনিই মহান শক্তিধর নভোমণ্ডল এবং ভূমণ্ডলের যা কিছু আছে সবকিছুই তার অধীনে, তারই হুকুমের ওপর সবকিছু নিয়ন্ত্রিত সুবহান আল্লাহ! টাইটান দেবতার নাম অনুসারে টাইটানিক জাহাজটি ভিআইপি প্যাসেঞ্জার নিয়ে মাত্র আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই ডুবে গিয়েছিল। কোনো আলৌকিক শক্তি বা পেশি শক্তির বলে নয় বরং পানির মধ্যে পানির জমাট করা বরফখণ্ডের সঙ্গে নিজেদের অবচেতনায় ধাক্কা লেগে শক্তিশালী স্বপ্নের সেই জাহাজটি খণ্ড খণ্ড হয়ে পানির নিচে তলিয়ে যায়। মহান স্রষ্টার সঙ্গে বেয়াদবির পরিণাম কী হতে পারে তা আমরা এ ঘটনা থেকেই শিক্ষা নিতে পারি। যুগে যুগে আমরা জেনে এসেছি, আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ইসলামের বিশাল ক্ষমতাসীন শত্রু নমরুদ, আব্রাহা, কারুন ও ফেরাউনদের চরম পরিণতি ঘটিয়েছেন সামান্য তুচ্ছ মশা, পাখি, মাটিতে দাবিয়ে এবং পানিতে ডুবিয়ে। সুবহান আল্লাহ! হজরত ইবনে আব্বাস (রহ.) বলেন, যে সরদার তার নেতৃত্ব, সংযম, বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা, শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার সমস্ত গুণাবলিতে সম্পূর্ণ পূর্ণতার অধিকারী তিনিই হলেন সামাদ। পবিত্র কোরআনে আরও এরশাদ হয়েছে, যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী, যাকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করতে পারে না, আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছুই তার মালিকানাধীন। তার হুকুম ব্যতীত এমন কার সাধ্য আছে যে, তার নিকট সুপারিশ করতে পারবে? সৃষ্টির সামনে-পেছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি অবগত। তার জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারবে না- কেবল যতটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন। তার আরশ কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে, আর সেগুলোর তত্ত্বাবধায়ন তাকে মোটেও ক্লান্ত করে না, তিনি সর্বোচ্চ ও মহান। মহিমান্বিত তিনি, সর্বময় কর্তৃত্ব যার নিয়ন্ত্রণাধীন এবং যিনি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান, যিনি জীবন ও মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন শুধু তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য যে, তোমাদের মধ্যে কে আমলে উত্তম? তিনি পরাক্রমশালী এবং অত্যন্ত ক্ষমাশীল ।

যিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সাত আকাশ। দয়াময়ের সৃষ্টিতে তুমি কি কোনো খুঁত দেখতে পাও ? তুমি আবার দেখ, অতঃপর তুমি বারবার দৃষ্টি ফিরাও তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে (সূরা মুলক ১-৪)। সুতরাং বান্দার জীবনের সার্থকতা হলো আল্লাহর পরিচয় জেনে আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করবে, আল্লাহকে ভালোবেসে আল্লাহর হুকুম পালন করবে। অতঃপর পরকালে তাকে দেখে সীমাহীন তৃপ্তি লাভ করবে।

ইনশাআল্লাহ অহংকারবসে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। (সূরা লোকমান- ১৮)

অহংকার ও দম্ভ সব আত্মিক রোগের মূল। আরবিতে একে উম্মুল আমরাজ বলা হয়।

আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ অহংকারীদের পছন্দ করেন না। (সূরা: নাহল, আয়াত: ২৩) রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (মুসলিম শরিফ)।

অহংকার ও বিনয়, কোনটি ভালো? এ প্রশ্নের উত্তর জানার আগে আপনি প্রশ্ন করতে পারেন অহংকারীদের নামের তালিকায় কে কে আছেন? আর বিনয়ীদের নামের তালিকায় কারা আছেন?

আমরা দেখতে পাই অহংকারীদের ভেতর শীর্ষে আছে ইবলিস। ইবলিস শয়তান বলেছিল, আমি আদমের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ বললেন, অহংকার করা তোমার উচিত নয়, যাও লাঞ্ছিত হয়ে বের হয়ে যাও এখান থেকে। (সূরা আরাফ)মানুষের ভেতর অহংকারী ছিল নমরুদ, ফেরাউন, আবু জাহেল। অহংকারে ফেরাউন বলেছিল, আমি তোমাদের বড় রব। নমরুদ আবু জাহেল আবু লাহাব উতবা শায়বা আরও অসংখ্য লোক দম্ভ ভরে সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল। এর বিপরীতে বিনয়ী ছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সব মনীষীরা। হযরত আদম (আ.) থেকে নিয়ে আখেরি পয়গম্বর পর্যন্ত সব নবী রাসূল অত্যন্ত বিনয়ী ছিলেন। সাহাবী তাবেয়ি ও আল্লাহর ওলিরা সবাই বিনয়ের চর্চা করতেন। অহংকার থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতেন।

দাম্ভিকদের শেষ পরিণতি মোটেও শুভ হয় না। বিনয়ী মানুষকে সবাই ভালোবাসে। মানুষের এবং আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে আমাদের অবশ্যই বিনয়ী হতে হবে।

বিনয়ী বিনয় প্রকাশ করার কারণে তার সম্মান কমে যায় না। যে আল্লাহর জন্য বিনয় অবলম্বন করে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। (তাবারানি)

আর যারা অহংকার করে কাল কেয়ামতে তাদেরকে বিন্দুর আকৃতি দেয়া হবে, সব মানুষ তাদেরকে পদদলিত করবে। আল্লাহর কাছে দাম্ভিক লোক এতটাই অপছন্দের।

অহংকার থেকেই হিংসা, ক্রোধ, বিদ্বেষ ও শত্রুতার দোষ ঘর করে মনের ভেতর। আভ্যন্তরীণ এমন অসংখ্য রোগ অহংকারীর ভেতরটাকে শেষ করে দেয়। ভালো কোনো গুণই আর সে ধরে রাখতে পারে না।

কারো কাছ থেকে ভালো কোনো উপদেশ গ্রহণের মত তার অবস্থা থাকে না। সবাইকে সে নিজের চেয়ে ছোট মনে করতে থাকে। নিজেকে বড় মনে করার রোগ একবার গেড়ে বসলে ধীরে ধীরে এটা বাড়তে থাকে।একপর্যায়ে সে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল সা.-এর নির্দেশনা মান্য করার গুণ থেকেও বঞ্চিত হয়।

অহংকার হৃদয়ের রোগ হলেও এর প্রকাশ বাহ্যিক আচরণের মাধ্যমেই হয়। অন্যদের প্রতি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য প্রকাশের মাধ্যমে সে তার অহংকার প্রকাশ করতে থাকে। কপাল কুচকে থাকে সব সময়। চেহারায় অন্য রকম একটা ভাব নিয়ে আসে। অন্যদের প্রতি চরম এক ঘৃণা ফুটে ওঠে তার কথাবার্তা ও আচরণে।

হযরত ইবন আব্বাস (রা.) বলেন, লোকে বলে আমি সম্ভ্রান্ত। অথচ সম্ভ্রান্ত হওয়া বা আভিজাত্য অর্জন করতে হয় তাকওয়ার মাধ্যমে।

আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেন, আল্লাহর নিকট তোমাদের ভেতর সবচেয়ে সম্মানিত হচ্ছে তাকওয়ার অধিকারী। (হুজুরাত, আয়াত: ১৩)

কেউ তাকওয়ার গুণ অর্জন ছাড়া অভিজাত হতে পারে না। সম্পদ, সৌন্দর্য, জ্ঞান, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি ও অন্য কোনো গুণ নয়, একমাত্র তাকওয়া মানুষকে অভিজাত করে।

আর তাকওয়া যার অর্জিত হবে সে কখনও অন্যকে তুচ্ছ জ্ঞান করবে না। নিজেকে সে কখনও অভিজাত বা সম্ভ্রান্ত দাবি করবে না। কারণ গর্ব করা ও দাম্ভিকতা প্রদর্শন আল্লাহর কাছে খুবই অপছন্দনীয়।

অবশ্য সুন্দর ভাবে চলা ও পরিপাটি হয়ে থাকার নাম অহংকার নয়। রাসূল (সা.) বলেন, আল্লাহ সুন্দর, তাই সৌন্দর্য পছন্দ করেন। সুন্দর পোষাক পরার নাম অহঙ্কার নয়, অহঙ্কার হচ্ছে, সত্য অস্বীকার করা আর মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা। (তিরমিযি)

রাসূল (সা.) খুব বিনয়ী ছিলেন। খুব সাধারণভাবে চলা ফেরা করতেন। খাবার খাওয়ার সময় গোলামের মত বসে খাবার খেতেন। দীর্ঘ দিন যাবৎ নিজের জন্য পৃথক কোনো আসনও তিনি গ্রহণ করেননি। যার ফলে দূর থেকে কেউ এসে সাহাবিদের থেকে রাসূলকে (সা.) আলাদা করতে পারত না।

একটা বাদিও রাসূলকে (সা.) যদি মদীনার পথের মাঝে দাঁড় করিয়ে কথা বলত; রাসূল (সা.) তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন।

হযরত আনাস বর্ণনা করেন, একবার মদীনা মুনাওয়ারায় এক সাধারণ দাসী রাসূলের (সা.) হাত ধরে তার একটি কাজে নিয়ে গেল, রাসূল (সা.) তার কাজ করে দিলেন। অহঙ্কারে হাত ছুটিয়ে নেননি।

মুহাদ্দিস ইবন ওয়াহাব বলেন, একবার আমি আব্দুল আযীয ইবন আবি রাওয়াদের (রহ.) মজলিসে বসলাম। তার পায়ের সঙ্গে আমার পা লেগে গিয়েছিল, আমি পা সরিয়ে নিলে তিনি আমার কাপড় ধরে তার দিকে টান দিলেন। আর বললেন, তোমরা আমার সঙ্গে এমন আচরণ করো কেন? আমি কি অহঙ্কারী রাজা বাদশাহদের মত? খোদার কসম, আমার চোখে তোমাদের ভেতর আমার চেয়ে অধম আর কেউ নেই।

মুসলিম মনীষীদের বিনয়ের অসংখ্য গল্প আছে। আজকে আমরা ইসলামের এ শিক্ষা কতটুকু ধারণ করতে পারছি?

কতটুকু বিনয়ের চর্চা রয়েছে আমাদের ভেতর? জান্নাত পেতে চাইলে অহংকার ত্যাগ করে বিনয়ী হবার বিকল্প কিছু নেই। আমাদের অবশ্যই বিনয়ী হতে হবে।

কারণ আমরা মুসলিম। আর একজন মুসলিম সবসময় উচু পর্যায়ের বিনয়ী ও বিনম্র।

আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ অহংকারিদের পছন্দ করেন না। (সূরা: নাহল, আয়াত: ২৩) রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (মুসলিম শরিফ)

আমরা আলোচনা করেছিলাম দাম্ভিক ও অভিশপ্ত নমরুদ এবং তার অকল্পনীয় পরিণতি সম্পর্কে।

ইনশাআল্লাহ এ অংশে আলোচনা করব দাম্ভিক ফেরাউন ও তার পরিণতি সম্পর্কে যথাসম্ভব সংশ্লিষ্ট আল্লাহর বাণী বা আয়াতগুলো উল্লেখ করে।

ফেরাউনের দম্ভ বা অহংকার অতুলনীয়, কারণ সে নিজেকে প্রভু বলে দাবি করেছে। তাছাড়া সে ছিল অত্যাচারী, অসংখ্য-অগণিত বনি ইসরাইলের পুত্রসন্তান হত্যাকারী। মূসা (আ.) ও দাম্ভিক ফেরাউন সম্বন্ধে পবিত্র কোরআনে ধারাবাহিকভাবে অনেক আয়াত উল্লেখ আছে, যা নিম্নে বর্ণিত হলো।

আল্লাহর নির্দেশে মূসা (আ.)-এর মাটিতে ফেলে দেওয়া লাঠি যখন সাপ হলো, ফেরাউন ও তার বাহিনী তাতে বিস্মিত হলো।

আবার আল্লাহর নির্দেশে মূসা (আ.) যখন সাপটিকে ধরলেন, তা পুনরায় লাঠি হয়ে গেল। এ দৃশ্য দেখে মূসা (আ)-কে ফেরাউন ও তার বাহিনী ‘জাদুকর’ আখ্যায়িত করল। পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিম্নরূপ, যা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে- আল্লাহর বাণী- সূরা আল কাসাস : ৩-১১ (কীভাবে শিশু মূসা আ. ফেরাউনের গৃহে স্থান পেল)। ‘আমি মূসা ও ফেরাউনের কাহিনি থেকে কিছু তোমার কাছে (মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে) সত্যিকারভাবে বিবৃত করছি বিশ্ববাসী সম্প্রদায়ের উদ্দেশে। বস্তুত ফেরাউন দেশে উদ্ধত হয়ে গিয়েছিল আর সেখানকার অধিবাসীদেরকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করে তাদের একটি শ্রেণিকে দুর্বল করে রেখেছিল, তাদের পুত্রদেরকে সে হত্যা করত আর তাদের নারীদেরকে জীবিত রাখত; সে ছিল ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী। দেশে যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল আমি তাদের প্রতি অনুগ্রহ করার ইচ্ছা করলাম, আর তাদেরকে নেতা ও উত্তরাধিকার করার (ইচ্ছা করলাম)। আর (ইচ্ছা করলাম) তাদেরকে দেশে প্রতিষ্ঠিত করতে, আর ফেরাউন, হামান ও তাদের সৈন্য বাহিনীকে দেখিয়ে দিতে যা তারা তাদের (অর্থাৎ- মূসা আ.-এর সম্প্রদায়ের) থেকে আশঙ্কা করত। আমি মূসার মায়ের প্রতি ওহি করলাম যে, তাকে (মূসাকে) স্তন্য পান করাতে থাক। যখন তুমি তার সম্পর্কে আশঙ্কা করবে, তখন তুমি তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ করবে, আর তুমি ভয় করবে না, দুঃখও করবে না, আমি তাকে অবশ্যই তোমার কাছে ফিরিয়ে দেব আর তাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করব। অতঃপর ফেরাউনের লোকজন তাকে উঠিয়ে নিল যাতে সে তাদের জন্য শত্রু ও দুঃখের কারণ হতে পারে। ফেরাউন, হামান ও তাদের বাহিনীর লোকেরা তো ছিল অপরাধী। ফেরাউনের স্ত্রী বলল- এ শিশু (মূসা) আমার ও তোমার চক্ষু শীতলকারী, তাকে হত্যা করো না, সে আমাদের উপকারে লাগতে পারে অথবা তাকে আমরা পুত্র হিসেবেও গ্রহণ করতে পারি আর তারা (ফেরাউন ও তার সাথীরা) কিছুই বুঝতে পারল না (তাদের এ কাজের পরিণাম কী)।

মূসা আ.-এর মায়ের অন্তর বিচলিত হয়ে উঠল। সে তো তার পরিচয় প্রকাশ করেই ফেলত যদি না আমি তার চিত্তকে দৃঢ় করতাম, যাতে সে আস্থাশীল হয়। মূসা আ.-এর মা মূসা আ.-এর বোনকে বলল, ‘তার (মূসার) পেছনে পেছনে যাও।’ সে দূর থেকে তাকে দেখছিল কিন্তু তারা (ফেরাউনের লোকজন) টের পায়নি।’ আল্লাহর বাণী- ফেরাউন বলল- ‘হে পারিষদবর্গ! আমি ছাড়া তোমাদের অন্য উপাস্য আছে বলে আমি জানি না। হে হামান! তুমি আমার জন্য ইট পোড়াও এবং একটি সুউচ্চ প্রাসাদ তৈরি করো; হয়তো আমি তাতে উঠে মূসার মাবুদকে দেখতে পাব। তবে আমি অবশ্য মনে করি যে, সে মিথ্যাবাদী’ (সূরা আল কাসাস-৩৮)।

আল্লাহর বাণী- ‘ফেরাউন ও তার বাহিনী অকারণে পৃথিবীতে অহঙ্কার করেছিল আর তারা ভেবেছিল যে, তাদেরকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনা হবে না’ (সূরা আল কাসাস-৩৯)। এ আয়াতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত ফেরাউন অহংকারী বা দাম্ভিক ছিল।

আল্লাহর বাণী- ফেরাউন বলল, ‘হে মূসা তাহলে কে তোমার রব? মূসা আ. বললেন, ‘আমাদের প্রতিপালক তিনি যিনি সব (সৃষ্ট) বস্তুকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর পথনির্দেশ করেছেন।’ ফেরাউন বলল ‘তাহলে আগের যুগের লোকদের অবস্থা কী (সূরা ত্ব-হা : ৪৯-৫১)? অর্থাৎ প্রতিপালক বা আল্লাহ সম্পর্কে ফেরাউনের কোনো জ্ঞান ছিল না তাই সে আলোচ্য প্রশ্ন রেখেছিল।

আল্লাহর বাণী- সে (ফেরাউন) বলল ‘হে মূসা, তুমি কি আমাদের কাছে এ জন্য এসেছ যে, তোমার জাদুর দ্বারা আমাদেরকে আমাদের দেশ থেকে বের করে দেবে? তাহলে আমরাও অবশ্যই তোমার কাছে অনুরূপ জাদু হাজির করব, কাজেই একটি মধ্যবর্তী স্থানে আমাদের ও তোমার মিলিত হওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ কর, যার খেলাফ আমরাও করব না আর তুমিও করবে না’ (সূরা ত্ব-হা : ৫৭-৫৮)।

আল্লাহর বাণী- ফেরাউন বলল, ‘তোমরা প্রত্যেক বিজ্ঞ জাদুকরকে আমার কাছে নিয়ে এসো (মূসাকে পরাজিত করার জন্য)। জাদুকররা যখন এসে গেল, তখন মূসা আ. (সে নিজে তার লাঠি নিক্ষেপ না করে) তাদেরকে বলল, ‘নিক্ষেপ করো তোমরা যা নিক্ষেপ করবে’ (সূরা ইউনুস : ৭৯-৮০)।

আয় আল্লাহ! আমাদের কে অহংকারমুক্ত নেক হায়াত ও জীবন দান করুন। আমিন।

লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।



বিষয়: #  #  #


আর্কাইভ

--- --- --- --- --- আমি কয়েকটি লাইভ স্ট্রিমিং টক শো করব এবং আপনাদের সবাইকে আমার “কারেন্ট” অ্যাফেয়ার্সে অতিথি হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে চাই! আপনি কি আমার টক শোতে থাকতে আগ্রহী হবেন? --- বাঙ্গালী সাজে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বিদেশিনী! ???? --- ফেনী ও হবিগঞ্জে ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে কোস্টগার্ড। যোগাযোগ করুন ::- ফেনী:- ০১৭৬৯৪৪২৯৯৯,০১৭৬৯৪৪২৫৯১ , হবিগঞ্জ: - ০১৭৬৯৪৪১৯৯৯,০১৭৬৯৪৪১৩৩৩ --- আপনাদের লেখা আমাদের অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশ বা প্রচার করতে চান ? ই-মেইল ঠিকানা:: [email protected] ---

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
নতুন প্রেরণা বুকে নিয়ে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ঘুরে দেখলেন দর্শনার্থীরা
ড. ইউনূসের ৬ মামলা বাতিল করলেন হাইকোর্ট
ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র বিজয়নগর থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ জন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও মাধবপুর এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও গাঁজা সহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে র‌্যাব-৯ এর খাঁচায়
রানীগঞ্জ সেতুতে আলোচিত সিএনজি চালক সুজিত হত্যা মামলার ৩ আসামীকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে গাড়ি চালক হত্যা-কান্ডে জড়িত তিনজন গ্রেফতার,সিএনজি উদ্ধার।।
সিমেন্ট কারখানায় সিবিএ নেতা আব্দুল কদ্দুছ টাকার মেশিন!
১দিনের জিজ্ঞাসাবাদ জেলগেটে রেখাছ মিয়া…
সশস্ত্র বাহিনী দিবসে মোংলায় উন্মুক্ত রাখা হবে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ
দৌলতপুরে র‌্যাবের অভিযানে বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার।
দৌলতপুরে প্রবাসীর স্ত্রীর জমি দখলের অভিযোগ
“বুড়ি ডাকুয়া বিল’ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ইউএনও বরাবর দরখাস্ত
সিলেটের ওসমানীনগরস্থ সৈয়দপুর থেকে ১১,২৩৫ পিস ইয়াবা ও একটি কার সহ ১ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯
‘কথায় কথায়’ ঘুষ নেন বিদ্যুতের প্রকৌশলী, টাকা ছাড়া এখানে সেবা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা
সুনামগঞ্জে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা
চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে কোস্টগার্ডের অভিযানে ১৬ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ
রাণীনগরে বিএনপি নেতার ইন্তেকাল
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অফ গভর্ণর মনোনীত
নিষিদ্ধ সংগঠন সিলেট ছাত্রলীগের রাকিবুল ও মিঠুনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯
ব্রিকলেন মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে পূর্বলন্ডনের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহ মদরিছ আলী গার্ডেন অব পিসে সমাহিত
শাহপরীর দ্বীপে কোস্টগার্ডের অভিযানে ২ লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ
দৌলতপুরে বিদ্যুৎস্পর্শে শ্রমিকের মৃত্যু
দৌলতপুরে স্থায়ী বাধ নির্মানের দাবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মানববন্ধন
নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর প্রাণেশ দেব এর ভাই ও মা এর বিদ্যুৎ পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু।।
হবিগঞ্জের চাঞ্চল্যকর পান্না হত্যা মামলার প্রধান আসামী মান্নাকে ঢাকা থেকে র‌্যাব-৯ ও র‌্যাব-৪ এর যৌথ অভিযানে গ্রেফতার
ছাতকে ফেন্সিডিল ব্যবসায়ি জেল-হাজতে
দেশীয় অস্ত্রসহ কুখ্যাত ডাকাত জিয়া বাহিনীর প্রধানসহ দুইজন আটক
জামালগঞ্জে আগাম লাউ চাষে সফল নারী মর্জিনা
হ্নীলা ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান
পূর্বলন্ডনের আপটন পার্ক এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী সমাজ হিতৈষী শাহ মদরিছ আলীর ইন্তেকাল