বুধবার ● ৬ নভেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » সাহিত্য ডাইরি » ডি’র্ভোস পেপার - “সংসার”
ডি’র্ভোস পেপার - “সংসার”
ফু’ল’শ’র্য্যার রাতে রাজ যখন মৌকে বলল ‘এই নাও ডি’র্ভোস পেপার সাইন করে দাও। ‘
রাজের কথাটা মৌ এর ক’লিজায় গিয়ে বিঁধল।মা ম*রা মেয়েটার ফু’ল’শ’র্য্যার রাতে ডি’র্ভোস পেপারে সাইন করতে হবে এটা কখনো ভাবে নাই সে। হাতের কাঁচা মেহেদীর সাজ! অপরুপা লাগছে মেয়েটাকে। ডি’র্ভোস পেপারে সাইন করতে গিয়ে এক ফোঁ’টা চোখের পানি টপ করে কাগজটার উপর পরল। জীবনটা সত্যিই অদ্ভূত চার ঘন্টা আগে যেমন একটি কাগজে সাইন করে নতুন সম্প’র্ক আবদ্ধ হয়েছিল। আর এখন একটা সাইনে সে সম্প’র্কটা প্রাণহীন হয়ে গেল। এদিকে সাইন করা কাগজটা হাতে নিয়েই, রাজ বলল’ সরি মৌ আমার কিছু করার নেই।’ পরে যদি তুমি আমাকে ডি’র্ভো’স না দেও। তাই ঝা’মেলা আগেই মিটিয়ে নিলাম।আর হ্যাঁ আমার সাইনটা বাকি রাখলাম। চু’ক্তি যখন শেষ হবে আমার সাইনটা দিয়ে কাগজটা প’রিপূ’র্ণ করব। মৌ কিছু না বলে মাথাটা নিচু করে আছে। বু’কের ভেতরটা যেন কেমন কেমন করছে। জীবনে কাউকে কোনদিন ভালোবাসেনি। নিজের স্বামীকে সবটা দিবে বলে। কিন্তু আজ স্ব’প্নগুলো স্ব’প্নই থেকে গেল।
রাজ মৌ এর পাশে থাকা বা’লিশটা নিয়ে যখনি খাঁট থেকে নামতে যাবে তখনি খেয়াল করল বিছানায় র*ক্ত! র*ক্ত দেখে খানিকটা আঁচ করতে পারল সে বিষয়টা কি। মৌকে বসে থাকতে বলে বের হয়ে গেল।
.মৌ বিছানায় বসে বসে ভাবছে, জীবন নামক বহতা নদীর কথা। এ নদীর শেষ কোথায়। বান্ধবীদের কাছে শুনেছি বা’সর রাতে এ হয় সে হয়। আর আমার! রাজকেই আর কি বা দোষ দিব। আমি নিজে ইচ্ছায় চু’ক্তির বিয়ে করেছি। যদিও রাজ আর আমি ছাড়া দ্বিতীয় কেউ জানে না। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে যায় খেয়াল নেই।
রাজ ফা’র্মেসি থেকে প্যা*ড নিয়ে এসে রুমে ডু’কতেই দেখে মৌ ঘুমাচ্ছে। জানালা দিয়ে চাঁদের জো’ছনা এসে মৌ এর চাঁদমাখা মুখটাতে ভর করছে। মনে হচ্ছে অ’ষ্টাদশী কোন রাজকন্যা। রাজ মৌকে ডাক না দিয়ে বালিশ’টা নিয়ে সুফায় শুয়ে পড়ে। সুফায় শুয়ে থাকতে থাকতে রাজ সুমাইয়াকে ফোন দেয়। দু’বার রিং হতেই সুমাইয়া ফোন ধরে বলে’ হ্যালো জান, তুমি কেমন আছো?’
হ্যাঁ আমি ভালো। আর হ্যাঁ তোমার কথা মতো মা’কে খুশি করার জন্য বিয়ে করেছি। মেয়েটাও রাজি হয়েছে। আচ্ছা ছয়মাসের মাঝেই কিন্তু দেশে ফিরবে।
-আচ্ছা! সুই’র্ট হা’র্ট আমাকে ভুলে যেয়ো না। এখন রাখছি বাই।
আচ্ছা। টেক কেয়ার।
২.
সকালবেলা পাখির কিঁচির মিচিরে, রাজের ঘুম ভে’ঙে যায়। ঘুম থেকে যখনি উঠতে যাবে ঠিক তখনি কে যেন বারবার দরজায় ন’র্ক করছে। রাজ তাড়াহুড়া করে বালিশ আর চাদর বিছানায় রাখে। মৌ এর দিকে তাকিয়ে দেখে মৌ এখনো ঘুমাচ্ছে।
রাজ মৌকে ডাক না দিয়ে,দরজা খু’লতেই দেখে রি’ত্ত চা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আজকে চাঁদ কোনদিকে উঠল যে আমার বোন আমার জন্য চা নিয়ে আসল?
এ্যা চা দেখলেই মনে হয় তোমার জন্য নিয়ে আসছি। আসলে আমি চা তো ভাবীর জন্য নিয়ে আসছি।
রি’ত্ত চা নিয়ে দেখে মৌ উঠে পড়েছে। মৌ এর কাছে চা টা রেখে বলল’ ভাবী তোমার চা।’
- তুমি চা নিয়ে আসছ কেন? আর আমি সকালে চা খায় না।
- তো কি হয়েছে এখন থেকে খাবে।
আচ্ছা।
চা খেয়ে মৌ যখন শাওয়ার নিতে যাবে এমন সময় রাজ মৌ এর হাতটা ধরে ফেলল। মৌ রাজের হাতের স্প’র্শে কেমন যেন কেঁ’পে ওঠলো। ল’জ্জামা’খা দৃষ্টিতে রাজের দিকে তাকালো। রাজ প্যা’ডটা মৌ এর হাতে দিয়ে বলল’ আমি তোমার স্বামী। আশা করি এসব কিছু গো’পন রাখার দরকার নেই। আমি কাল রাতেই বুঝতে পেয়েছি তোমার সমস্যা হচ্ছে।
- মৌ রাজের মুখে এমন কথা শুনে ল’জ্জায় জড়োসরো হয়ে গেল। মনে মনে ভাবতে লাগল, মানুষটাকে যতটা খারাপ ভেবেছিলাম ততটা খা’রাপ না। ‘ ভালোবাসায় যায়। মৌ রাজকে যতই দেখে ততই মু’গ্ধ হয়। ঠিক তার ক’ল্পনায় পু’রুষটার মতো। মৌ ঘুমালেই একজনকে স্বপ্ন দেখতে। আর সেই স্বপ্নটা যে এভাবে সত্যি হবে সে কোনদিন ভাবতে পারে নাই।
মৌ শাওয়ার শেষ করে। গো’লাপী রঙের একটা শাড়ি পড়ে যখন রুম থেকে যখন বের হবে। তখন পিছন থেকে রাজ ডেকে বলল ‘ কি সবাইকে তোমার মেদহীন পে’ট দেখাবে নাকি?
- নাকি তোমার না’ভি দেখিয়ে আমাকে মু*গ্ধ করতে চাইছো? এসব বা*জে মেয়েরা করে।
- মৌ রাজের কথা শুনে কাঁদো কাঁদো ভাবে বলল, কি কর’বো আমি শাড়ি পরতে পারি না। ‘ একটু পরিয়ে দিবে?
- কাছে আসো। শাড়ি পরাটাও পারো না। কি পারো? রাজ ধ’ম’ক দিয়ে মৌকে শাড়ি পরানো শিখিয়ে দিল। শাড়ি পড়া শেষ হলে
-মৌকে দেখেি রাজের মা বলে’ বউমা তুমি রান্না ঘরে আসছ কেন?’
-কেন মা আপনি আসতে পারলে আমি কেন পারবো না? মা আমি আপনার মেয়ের মতো, আপনি এসব আর করবেন না।
- ধূর পা*গলী। আসই একসাথে রান্না করি। মৌ খুশি হয়ে যায়। সত্যিই মায়ের আদর বোধহয় এমনি হয়।
.
এদিকে দেখতে দেখতে দু’মাস হয়ে যায়। দু’মাসে মৌ রাজের পরিবারের একজন হয়ে যায়। পরিবারের প্রতিটা মানুষ মৌকে ভালোবাসে। শুধু রাজ ছাড়া। মৌ জানে রাজের হৃদয়ে শুধু সুমাইয়ার বসবাস। আর তাকে বিয়েটাও করেছে শুধু তার মায়ের জীবন বাঁ’চাতে। ওসময় যদি ওর মায়ের কথা না শু’নতো তা হলে অনেক বড় বি’প’দ হয়ে যেত।
লেখাঃরাইসা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
বিষয়: #থেকে #ফেসবুক #মাধ্যম #যোগাযোগ #সংগৃহীত #সামাজিক