বৃহস্পতিবার ● ১৪ নভেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে অন্যর জমি নিজের বলে বিক্রি!
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে অন্যর জমি নিজের বলে বিক্রি!
” সাবরেজিস্টারকে ধোকা দিয়ে রেজিস্ট্রারি করিয়ে নেয় দলিল লেখক মাসুক! ”
আকিকুর রহমান রুমন:-
হবিগঞ্জের বানিয়াচং সাবরেজিস্টার অফিসে অন্যর জমি নিজের বলে প্রতারণার মাধ্যমে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে এই প্রতারককে জায়গা বিক্রির কাজে সহযোগীতা করেন এই অফিসে কর্মরত দূর্নিতীবাজ অনিয়মকারী দলিল লেখক মাসুক মিয়া।
তিনি জায়গাটি বিক্রিকালে রেজিস্ট্রারি করতে গিয়ে তার স্যারকে ধোকা দিয়ে রেজিস্ট্রারী করিয়ে নেন।
বানিয়াচং উপজেলার সাবরেজিস্টার মোঃ জাকির হোসেনকে সঠিক তথ্য না দিয়ে ভূয়া মালিককে প্রকৃত মালিক বুঝিয়ে অন্যর জমি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে প্রতারক সুনীল চন্দ্র গোপ ও দলিল লেখক মাসুক মিয়ার বিরুদ্ধে।
জানাযায়,১৩ নভেম্বর বুধবার হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার সাবরেজিস্টার অফিসে এ-ই জাল জালিয়াতি করে দলিল রেজিস্ট্রারী করার ঘটনাটি ঘটে।
আর এই কাজটি করেন এই অফিসের কর্মরত লাইসেন্সধারী এক দলিল লেখক মাসুক মিয়া।
তিনিও ১৩নং মন্দরী ইউনিয়নের দক্ষিণ সাঙ্গর এলাকার বাসিন্দা।
আর ভূয়া মালিক ও একই ইউনিয়নের বাসিন্দা।
অন্যর জমি নিজের করেন বিজন বিহারী চৌধুরীর নাম করনে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দলিলের কাজটি সম্পন্ন করেন প্রতারক সুনীল চন্দ্র গোপ।
আর তাকে সর্বোপরি সহযোগীতা করে যান দলিল লেখক মাসুক মিয়া।
তাদের এমন দুই নাম্বারির কর্মকান্ডটি ফলো করেন,অফিসে আসা তাদেরই এলাকার এক বাসিন্দা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই ব্যক্তি জানান,সুনীল চন্দ্র গোপ আমার এলাকার।
এমনকি তাকে আমি চিনি এবং জানিও।
হঠাৎ দেখি আমার চোখের সামনে তার নিজের ছবি ব্যবহার করে এটার মধ্যে নাম লেখা রয়েছে বিজন বিহারী চৌধুরী!
তখন আমার সন্দেহ হয় এবং আমি এই বিষয়টি নিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করি।
এক পর্যায়ে তাদের সাথে আমার তর্ক বিতর্ক হয় এবং জানতে পারি সুনীল চন্দ্র গোপ বিজন বিহারী চৌধুরী সেজে অন্যজনের জমি নিজের বলে বিক্রি করে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন,আজ আমি নিজেও আমার পিতার একটি জমি বিক্রি করার জন্য রেজিস্ট্রারী অফিসে আসি।
এবং আমার কাজকর্ম শেষ করার এক ফাঁকে তাদের দুই নাম্বারির কর্মকান্ড গুলো দেখে অবাক হয়ে পড়ি।
কিছু সময় তাদের এমন কর্মকান্ড দেখে ও তাদের জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রারী করে দেওয়ার বিষয়টি আমি নিজে উপস্থিত থেকে অবগত হই।
পরে এই বিষয়টি অফিসের এক,দুইজনকে অবগত করে আসি এবং সাবরেজিস্টার স্যারকেও জানাতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু তিনি দুপুরের খাবারের জন্য বাহিরে থাকায় স্যারের সাথে আর দেখা হয়নি।
যার কারনে সাবরেজিস্টার স্যারকে অবগত করতে পারিনি।
আমি মনে করি এখানে স্যারের কোন দুষ নেই,কারণ তার অফিসের কর্মচারীগন যদি এমন দুই নাম্বারি কর্মকান্ডের সাথে জড়িত হয়ে পড়েন তাহলে তিনি কি করবেন।
পরে এই বিষয়টি আমি আমার পরিচিত সাংবাদিক ভাইদেরকে অবগত করি এবং রেজিস্ট্রারি দলিল নাম্বারসহ বেশকিছু তথ্য প্রদান করার বিষয়টিও নিশ্চিত করেন।
দলিল লেখক মাসুক মিয়া প্রতারকের সাথে হাত মিলিয়ে অন্যজনের জায়গা ভূয়া মালিক সাজিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে লাখ,লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া যায়।
অফিসে আসা লোকজনকে এই দলিল লেখক ও প্রতারকের কর্মকান্ড শুনে অনেকেই আলাপ আলোচনা করেন,
দলিল লেখক মাসুক মিয়া যিনি নিজের পরিবার পরিজন নিয়ে এই অফিস থেকে জীবীকা নির্বাহ করে জীবন পরিচালনা করে আসছেন।
তিনি কিভাবে সামান্য টাকার লোভে পড়ে তার সাবরেজিস্টার স্যারকে এভাবে ধোঁকা দিয়ে প্রতারকের সাথে হাত মিলিয়ে সহযোগীতা করে গেলেন।
দলিল লেখক এক প্রকার ব্যাকমেইলের মাধ্যমে এই দলিলটি রেজিস্ট্রারী করিয়াছেন বলেও কেউ কেউ আলোচনা করেন।
যাহার রেজিস্ট্রারী দলিল নাম্বার - ৫৯৭১। দলিল লেখক মাসুক মিয়া প্রতারকের নিজের নাম গোপন করে, বিজন বিহারী চৌধুরী ভূয়া নাম ব্যবহার করে অণ্য জনের জায়গাটি নিজের মালিকানা দেখিয়ে রেজিস্ট্রারী করিয়ে বিক্রি করেন অন্যত্র সুনীল চন্দ্র গোপ।
যিনি ভূয়া নাম হিসাবে বিজন বিহারী চৌধুরী নাম ধারণ করে মালিক সেজে জায়গাটি বিক্রি করেছেন।
তার এলাকার জনপ্রতিনিধি তার নাগরিক কার্ডের মধ্যেও সুনীল চন্দ্র গোপ নামটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এমনকি ভোটার লিস্টের মধ্যেও ওরিজিনাল নাম হিসাবে সুনীল চন্দ্র গোপ রয়েছে বলেও জানাযায়।
প্রতারক সুনীল চন্দ্র গোপ বানিয়াচং উপজেলার ১৩ নং মন্দরী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের উত্তর সাঙ্গরের আখড়া হাঁটির বর্তমান বাসিন্দা।
প্রতারক সুনীল চন্দ্র গোপ মৃত মহেন্দ্র চন্দ্র গোপ এর সন্তান।
সুনীল চন্দ্র গোপ সম্পর্কে আরও জানাযায়,তারা জন্মসূত্রে ১৪ নং মুরাদপুর ইউনিয়নের গানপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বলেও জানাযায়।
বর্তমানে সুনীল চন্দ্র গোপ ১৩ নং মন্দরী ইউনিয়নের উত্তর সাঙ্গর আখড়া হাঁটিতে বসবাস করে আসছেন।
এই জাল জালিয়াতির কাজে অপরাধীকে সহযোগীতা করে অফিসে কর্মরত দূর্নিতীবাজ দলিল লেখক মাসুক মিয়া ও প্রতারক সুনীল চন্দ্র গোপকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোরদাবী জানিয়েছেন অফিসে উপস্থিত থাকা সচেতন মহল।
এছাড়াও এই দলিল লেখকের লাইসেন্স বাতিল করে তারা দু’জনকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন কেউ কেউ।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলার সাবরেজিস্টার মোঃ জাকির হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে,তার কোন সাড়া না পাওয়ায় উনার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
বিষয়: #অন্য #বানিয়াচং #হবিগঞ্জ