বৃহস্পতিবার ● ২১ নভেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » সুনামগঞ্জ » জামালগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে সব পুড়ে ছাই : খোলা আকাশের নিচে দুই পরিবার
জামালগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে সব পুড়ে ছাই : খোলা আকাশের নিচে দুই পরিবার
জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে অগ্নিকাণ্ডে সব পুড়ে ছাই।
ঘর হারিয়ে অসহায় পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করেছেন। মঙ্গলবার রাত ৯ টায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রামের মো. হানিফ মিয়া এবং তার ভগ্নিপতি মো. রাশেদ মিয়ার ঘরে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ইউপি সদস্য মো. মমিন মিয়া বলেন, বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা ছুটে আসি। সবাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও পারিনি। আগুনের তাপের কারনে আমরা কেউ কাছে যেতে পারিনি। এতে পরিবারগুলোর ঘরের আসবাবপত্র, টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকারসহ কিছুই উদ্ধার করা যায়নি। এছাড়াও ২ টা গরু, ২ টা ছাগলসহ বাড়ির দলিল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ১ হাজার টাকা নোটের প্রায় ৫ লক্ষ টাকা পুড়ে গেছে। তবে আংশিক কিছু পোড়া টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এগুলো চালানো সম্ভব নয়। আমি দেশ বিদেশের স্বহৃদয়বান ব্যাক্তিবর্গের নিকট অনুরোধ করছি, সামর্থ অনুযায়ী সাহায্য করার জন্য।
ক্ষতিগ্রস্ত হানিফ মিয়া বলেন, কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে জানিনা। আমার ঘরের বিদুৎতের লাইন ৬ মাস পূর্বে কেটে দিয়েছে। আমি সৌর বিদুৎ দিয়ে চলি। আমি আমার পরিবারসহ আমার ছেলের সাথে কুমিল্লা থাকি। আমার ভগ্নিপতি রাশেদ মিয়ার কোনো ঘর না থাকায় দুই বছর যাবত আমার ঘরে থাকে। কয়েকদিন আগে কুমিল্লা থেকে এসেছি। আমার ঘরটিতে থাকা ভগ্নিপতির সারা জীবনের রোজগার শেষ হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত রাশেদ মিয়ার স্ত্রী কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, আমি আমার ছোট মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলাম। আমার স্বামী আরেক বাচ্চাকে নিয়ে দোকানে গিয়েছিলেন। ঘরে কেউ না থাকায় কিভাবে আগুন লেগেছে জানিনা। হঠাৎ জানতে পারি আমার ঘরে আগুন লেগেছে। তাড়াতাড়ি হাসপাতাল থেকে এসে দেখি আমার সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার মেয়ের বিয়ে এবং বাড়ি কেনার জন্য ৫ লাখ টাকা ও ৩ ভরি স্বর্ণ গরু বাছুরসহ সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। সারা জীবন কষ্ট করে যা রোজগার করেছিলাম তা এক মুহুর্তেই শেষ হয়ে গেলো। নিজের কোনো বাড়ি না থাকায় ভাসুরের ঘরে থাকতাম। এখন মেয়ের বিয়েও হলোনা, বাড়িও কেনা হলো না।
জামালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কমান্ডার বিজয় শিং জানান- খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিটের চেষ্টায় এই আগুন নিভাতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আসার পূর্বেই ২ টি বসতঘরের ভিতরে থাকা সমস্ত মালমাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
এবিষয়ে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীন নূর জানান, দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রামে হানিফ মিয়ার বাড়িতে আগুনে পুড়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।
বিষয়: #অগ্নিকাণ্ড #জামালগঞ্জ