বৃহস্পতিবার ● ৬ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল আর নেই
কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল আর নেই
সিলেটের বিশ্বনাথের বাসিন্দা সিলেট লেখক ফোরাম এবং মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম সভাপতি সাংবাদিক কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল আর নেই । আজ বৃহস্পতিবার( ৬ জুন) সকালে ওসমানী হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্নালিল্লাহি —— রাজিউন। তিনি কয়েক মাস থেকে অসুস্থ ছিলেন।
আজ বাদ আছর অলংকারী-পৌদনা পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
নাজমুল ইসলাম মকবুল জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭। এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে তিনটি গ্রন্থ। লেখকের নিজের লেখা ও সুর করা একক সঙ্গীতের অ্যালবামও বের হয়েছে এ পর্যন্ত বারোটি।
তিনি সম্পাদনা করেছেন অনেক স্মারক ম্যাগাজিন ও পত্রপত্রিকা। সঙ্গীত লিখেছেন হাজারেরও অধিক। এসবের প্রকাশনা উৎসব হয়েছে বাংলাদেশ ছাড়াও লন্ডন, সৌদি, আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ ও পূঁথিগ্রন্থ এবং অ্যালবাম।
কবি নাজমুল শুধু লেখালেখিতেই নয়। সমাজসেবায়ও রেখে আসছেন অসামান্য অবদান। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তাঁর নিপূণ হাতের ছোঁয়া। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ ভরাট, শ্রেণীকক্ষ ও গেইট নির্মাণ, মাইক, ইউনিফর্ম ও টিপিন বক্স প্রদান, কমপিউটার ও সেলাই মেশিন প্রদান থেকে শুরু করে প্রদান করেছেন শিক্ষা সামগ্রীও।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অসহায়দের ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থা ও ঔষধপত্র প্রদান করেছেন। পাশাপাশি সাংবাদিকতার জগতে তিনি একজন সৎ দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন সাংবাদিক হিসেবে অর্জন করেছেন ঈর্ষণীয় খ্যাতি।
সাংবাদিক কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। লেখালেখির পাশাপাশি সাহিত্য সংস্কৃতি, সামাজিক ও সেবামুলক বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও দৃঢ় মনোবল থাকলে জনপ্রতিনিধি না হয়েও স্বীয় যোগ্যতাবলে সমাজের সেবা করা যায়, সমাজের সর্বক্ষেত্রে রাখা যায় অবদান, যার জ্বলন্ত প্রমাণ কবি নাজমুল। অসহায়দের চিকিৎসা সহায়তা, বিবাহ সহায়তা, গৃহ নির্মাণ, হুইল চেয়ার বিতরণ, কমপিউটার ও সেলাই মেশিন বিতরণ, টিউভওয়েল স্থাপন, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ফ্রি ঔষধপত্র বিতরণ, বৃক্ষরোপন, ফুডপ্যাক বিতরণ, বন্যা ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তাসহ আরও অনেক ভালো কাজ করেছেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে যে কাজ করেছেন তা আরও প্রশংসনীয়। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করেছেন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ ভরাট, মাইক প্রদান, ইউনিফর্ম প্রদান, শিক্ষার্থিদের মধ্যে টিপিন বক্স ও শিক্ষা সামগ্রী প্রদান, মেধাবীদের সম্মাননা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা, রত্মগর্ভা মা-বাবা সম্মাননা, শিক্ষাবিদদের সম্মাননাসহ করেছেন আরও অনেক অনেক কাজ।
অলংকারী ইউনিয়ন ওয়েলফেয়ার এন্ড ডেভোলপমেন্ট ট্রাষ্ট, ইউ.কের সাবেক সাধারন সম্পাদক গয়াছ মিয়া গিয়াস লিখেছেন, সিলেট লেখক ফোরাম এবং ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংগঠন মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম সভাপতি আন্তর্জাতিক অঙ্গণে সুপরিচিত সাংবাদিক কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল এর তৃতীয় একক গ্রন্থ দেখা থেকে লেখা এখন দেশ বিদেশের পাঠকদের হাতে। সংবাদটি আমাদের জন্য পরম আনন্দের। নাজমুল ইসলাম মকবুল শুধু একজন কবি নয় একজন শেকড়সন্ধানী লেখক গীতিকার ছড়াকার পূঁথিকার ও কলামিষ্ট। সিলেটি ভাষায়ও লিখেছেন অবিরাম। তাঁর লেখায় আছে রস এবং কষ। একসময় আমাদের ঘরে ঘরে রাত বিরাতে আয়োজন হতো মশাল, কুপি বাতি কিংবা লন্টন জ্বালিয়ে রসে ভরা মনোমুগ্ধকর পূঁথি পাঠের আসরের। কালের পরিক্রমায় তা হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের অতীত ঐতিহ্যকে ধারন ও লালন করতে কবি নাজমুল পূঁথি লিখছেন এবং তাঁর লেখা পূঁথি লন্ডনের জনপ্রিয় চ্যানেল এস এ তাঁরই কন্ঠে প্রচারিত হয়েছে কয়েক বছর পূর্বে। সাংবাদিকতায়ও তিনি অর্জন করেছেন ঈর্ষনীয় খ্যাতি। প্রিন্ট ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইনসহ সকল ধারার মিডিয়ায় কাজ করেছেন সমানতালে দক্ষতার সাথে।
কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল এর মৃত্যুতে দৈনিকসিলেটডটকম এর পক্ষ থেকে গভীর শোক সমবেদনা জানাচ্ছি। মহান আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন।
বিষয়: #ইসলাম #কবি #নাজমুল #মকবুল