বৃহস্পতিবার ● ২ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ছাতকে আওয়ামীলীগ নেতাকে হত্যার অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
ছাতকে আওয়ামীলীগ নেতাকে হত্যার অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ ছাতকে উপজেলায় বিএনপি নেতা-কর্মীরা আওয়ামীলীগ এক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দেশ বিদেশে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনার লন্ডন বিএনপি নেতা তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমেদ বিরুদ্ধে সন্দেহের তীর ছুড়ছে নিহতের পরিবার। সে উপজেলার সিংচাপইর ইউনিয়নের গহর পুর গ্রামের মৃত রইছ উল্লাহ ছেলে।গত ৮ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান নিখোজ হন। নিখোজের দুইদিন পর জিয়াউর রহমান (৫৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার বস্তাাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ১০ সেপ্টেম্বর উপজেলার সিংচাপইর ইউনিয়নের মহদী গ্রাম থেকে তার লাশটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। জিয়াউর রহমান ওই গ্রামের মৃত আলমাস আলী ওরফে ময়নার ছেলে। জাউয়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (ইনচার্জ) আকরাম হোসেনের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পৌছে বস্তাবন্দি লাশের হাত বাঁধা ছিল। মুখমন্ডলও পচে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পিটিয়ে হত্যার পর বস্তার ভেতর ঢুকিয়ে ফেলে রাখা হয়। স্থানীয়রা জানান, মহদী গ্রামের ছোট খালে সাদা একটি বস্তার মধ্যে লাশ সন্দেহে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ খাল থেকে বস্তা খুলে ভেতরে হাত বাঁধা অবস্থায় নিখোজ জিয়াউর রহমানের গলিত লাশটি উদ্ধার করেছে। জানা যায়,উপজেলা যুবলীগ নেতা ও নিহতের ভাতিজা সিংচাপইর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন মোহাম্মদ সাহেল ও একই গ্রামের লন্ডন বিএনপি নেতা তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে দীঘদিন ধরেই। এ বিরোধের জের ধরেই বিএনপির নেতা কমীরা জিয়াউর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১০ সেপ্টেম্বর রাজু ও লন্ডন বিএনপি নেতা তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদের আপন চাচাতো ভাই মইন উদ্দিনসহ দুজনকে আটক করে পুলিশ। সাবেক পরিদর্শক (ইনচার্জ) আকরাম হোসেন লন্ডন বিএনপি নেতা তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদের কাছ থেকে বড় অংকের খাম নিয়ে ঘুস নিয়ে জাউয়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে থেকে আসামীদের গভীর রাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী রানু বেগমকে বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে ও তার অভিযোগটি থানায় গ্রহন করেনি। পরে পুলিশ তার ভাই তাজ উদিন বুদুকে দিয়ে হত্যা মামলার বাদী বানিয়ে বিএনপি নেতা কমীদের নাম বাদ দিয়ে অঞ্জাত আসামী ক [email protected] রে থানায় একটি হত্যার মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তিনি পেশায় একজন মুদি দোকানদার এবং সিংচাপইর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ওয়াড কমিটির সহ সভাপতি ছিলেন।
নিহতের স্ত্রী রানু বেগম এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,তার স্বামী সঙ্গে লন্ডন বিএনপি নেতা তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদের বিরোধ আছে। এবিরোধের জের ধরেই জয়নাল,রাজু, গৌছ ও মইনউদ্দিনের নেতৃত্বে তার স্বামীকে তারা পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন। তাদের নাম উল্লেখ্য করে আমি থানায় অভিযোগ দিলে ও পুলিশ আমার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা নেননি। এঘটনার ৪ মাস অতিবাহিত হচ্ছে এখনো ও কোনো আসামী গ্রেপ্তার করা হয়নি। এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি বিভিন্নখাতে নিতে দুই মাসে লন্ডন থেকে বিএনপি নেতা তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমেদ তিনবার বাংলাদেশে এসেছে। গত আগষ্ট মাসে শেষ সপ্তাহ,অক্টোরর মাসে প্রথম সপ্তাহ ও ১২ ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশে আসে। গত ১৬ বছরের বিএনপির নেতা তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার একবার ও বাংলাদেশে আসেনি।গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর একাধিকবার লন্ডন থেকে বাংলাদেশে আসছে বিএনপির নেতা তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমেদ। সে বাংলাদেশে এসেছে ঢাকার জনৈক রাসেল নামে এক মামলাবাজ প্রতারকের মাধ্যমে এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় বিভিন্ন খাতে নিতে ছাতকের সাবেক পৌর মেয়র,দুইজন সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান,দুজন ইউপি চেয়ারম্যান,কাউন্সিল ১ ও জাউয়া বাজার এলাকার শিক্ষক নাসির উদ্দিন,সোয়েব আহমদ,মারুফ আহমদ ও লন্ডন প্রবাসী শহীদুজ্জামান সুজনসহ ৩৫জন নামে ঢাকায় আদাবর থানায় একটি নাশকতার মামলা করানো হয়। ঢাকার বিঞ্জ মুখ্য মহানগর হাকিম আদাবর আদালতে ফরিদপুর জেলা সদরপুর থানার মটুকচর গ্রামের চাদ মিয়ার পুত্র জোবায়ের ওরফে রাজিবকে বাদী বানিয়ে সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেথ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে ৪৬জনের নামে একটি সি,আর মামলা নম্বার ১২০৪। এ মামলায় সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকের ৩৫জন আসামীরা করা হয়। দেশ-বিদেশের প্রবাসী,জনপ্রতিনিধি,কৃষক,ব্যবসায়ি,শিক্ষকদের মামলা ডুকিয়ে তাদেও কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। গত ২৪ ডিসেম্বর পুলিশ বিএনপি নেতাকে তার মোবাইল ফোনে জাউয়াবাজার পুলিশ ক্যাম্পে আসার জন্য বলা হলে সে দেখা না করে মোবাইল বন্ধ করে গোপনে দেশ ছেড়ে লন্ডনে পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনার সুত্র ধরে গত ২৮ ডিসেম্বর থানায় একটি জিডি করেছেন তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ারের প্রধান সহযোগী কবির আহমেদ বিরুদ্ধে বাদী হয়েছেন সোয়ের আহমদ। এব্যাপারে জাউয়া বাজার পুলিশ ক্যাম্পের ইনচাজ ওসি আব্দুল কবির বলেন তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাবে না। তবে নতুন বছরে হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা হবে তিনি নিশ্চিত করেন।
বিষয়: #আওয়ামীলীগ #ছাতক #নেতা #হত্যা