বুধবার ● ৮ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বাষিক পরীক্ষায় দুটি ফলাফল প্রকাশ ছাতকে এসএসসি পরীক্ষার ফিস নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ
বাষিক পরীক্ষায় দুটি ফলাফল প্রকাশ ছাতকে এসএসসি পরীক্ষার ফিস নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ
ছাতক(সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ::
আগামী এপ্রিল মাসে সারাদেশে একযোগে শুরু হবে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা। এজন্য ছাতকের বিভিন্ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ শুরু হয়েছে। তবে ফরম পূরণের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগের ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড়। ৫হাজার ৮০০শত টাকা আদায় করেন চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।এসব দেখার কেউ নেই। ছাতক চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ মো. রবিউল ইসলামের নিদেশে বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনী থেকে নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের ২০২৪ সালে ২৯ ডিসেম্বর বাষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। এ ফলাফল প্রকাশের ৩দিনের ব্যবধানে গত এক জানুযারি সফটওয়্যার জনিত যান্ত্রিক ত্রুটি দেখিয়ে দ্বিতীয় বার নবম ¤্রণেীর বাষিক পরীক্ষা ফলাফলে প্রকাশ করেছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। বাষিক পরীক্ষার নবম শ্রেণীর দুটি ফলাফল প্রকাশের ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। এঘটনাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক –শিক্ষিকাদের কোচিং বানিজ্যি নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি মাসেও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন শিক্ষক সিন্ডিকেট চত্রুরা। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছে কোচিং না করলে তাদেরকে বাষিক পরীক্ষা ফেল করানো হয়। এভাবে চলছে চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের লেখা-পড়ার কার্যত্রুম নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ফরম পূরণের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ফির থেকে অতিরিক্ত তিন গুণ টাকা আদায় করেছেন ছাতকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ফলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের। আর অতিরিক্ত টাকা পরিশোধ করতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন নিম্ন, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অভিভাবকরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি পরীক্ষার ফিস ১৬শ’৫০টাকা সেন্টার ফিস ৪শ’৮০টাকাসহ ২হাজার ১শ’ ৩৯ টাকা নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৫ হাজার ৮০০ টাকা এবং বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগের জন্য ৫ হাজার ৬০০ টাকা তবে সুবিধাভোগীরা ম্যানেজিং কমিটির নাম ভাঙিয়ে এই নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত আদায় করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ না করা শতে জানায়, তাদের কাছ থেকে নির্ধারিত ফির চেয়ে ৩-৪ হাজার টাকা অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী প্রকৃত ফির পরিমাণ জানে না। ফলে না বুঝেই অনেকে অভিভাবকদের ফি পরিশোধের জন্য চাপ দিচ্ছে।
জানা যায়,ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ মো. রবিউল ইসলাম এ বিদ্যালয়ে যোগদানের দুনীতি অনিযম ভর্তির সময় অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় করা, অতিরিক্ত সেশন চার্জ আদায় করা, বাষিক পরীক্ষার শুরু হওয়ার একমাস আগে পরীক্ষা প্রশ্ন ফাসঁ করে ছাত্রীদের হাতে পৌছে যায়। এসএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম ফিলাফে কোচিং ফিসসহ ৫ হাজার ৬শ’টাকা অর্থ আদায় করা, উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্রীদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসিক বেতন আদায় করা, ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা আদায় করা, ইউনিক আইডি এন্টি করার নামে টাকা আদায়, উপবৃত্তি আবেদনের খরচ বাবদ টাকা আদায় করা,শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়, প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাৎ, উপবৃত্তি আবেদনের খরচ বাবদ টাকা আদায় । ইউনিক আইডি এন্টি করার নামে টাকা আদায়, টাকা পয়সা ভাগা-ভাগী ও অনৈতিক সুবিধা নিতে ব্যস্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের সিন্ডিকেট নিয়ে তাদের মধ্যে দলাদলি সৃষ্টি হয়। এ বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্র ছায়াই সরকারি নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কোন ছাত্রীর অভিভাবক প্রতিবাদ করলে সেই ছাত্রীকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া ও অভিভাবককে আওয়ামী লীগ নেতা শামীম আহমদ চৌধুরীসহ একধিক নেতাদের দিয়ে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেওয়া হত বলেও অভিযোগ ও রয়েছে। ২০২৩-২০২৪ সালে বাষিক পরীক্ষা ৬ষ্ট,৭ম,৮ম ,নবম ও দশম শ্রেণীর প্রশ্ন পত্র ও নিবাচনী পরীক্ষা শুরু এক মাস আগে শিক্ষার্থীদের কাছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম ও সহকারি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা বেগম বন্টন করে দেয়।এসব অনিয়মের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের গোপনে প্রশ্ন করলে ভাতের নিচে ডিমের রহস্য বের হয়ে আসবে জনস্মুখে। এঘটনার সত্যতা যাচাই জন্য বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষিকার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত সহকারি প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা বেগম,নবমশ্রেনীতে দুইবাব পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের কথা সত্যতা স্বীকার করে বলেন সফটওয়্যার জনিত যান্ত্রিক ত্রুটি দেখিয়ে এসব করা হয়। এব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ মো.রবিউল ইসলামকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলে রিং হচ্ছে কেউ রিসিভ করেনি। মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা পুলিন চন্দ্র রায়,শিক্ষা বোডের নিধারিধ ফিস ছাড়া অতিরিক্ত টাকা আদায় করা অন্যায়,এছাড়া নবমশ্রেনী বাষিক পরীক্ষার দুটি ফলাফল প্রকাশ করতে পারে না। এসব ঘটনার খোজ খবর নিয়ে আইনানুগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন,এস এসসি পরীক্ষা নিধারিত ফিস ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নেয়ার প্রশ্ন উঠে না। এছাড়া এ বিদ্যালয়ে বাষিক পরীক্ষা দুটি ফলাফল প্রকাশের ঘটনার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগত ব্যবস্থা নেবেন।
বিষয়: #বাষিক পরীক্ষায় দুটি ফলাফল প্রকাশ ছাতকে এসএসসি পরীক্ষার