

মঙ্গলবার ● ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » তথ্য-প্রযুক্তি » ২০২৪ সালে দেশের অর্থনীতিতে উবারের অবদান ৫৫০০ কোটি টাকা
২০২৪ সালে দেশের অর্থনীতিতে উবারের অবদান ৫৫০০ কোটি টাকা
রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম উবার ২০২৪ সালে বাংলাদেশে তাদের অর্থনৈতিক প্রভাববিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাবলিক ফার্স্ট পরিচালিত এ গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মোট ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সমমূল্যের অবদান রেখেছে উবার।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এক অনুষ্ঠানে এ প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শহরের ব্যস্ত জীবনে সহজ ও সাশ্রয়ী মূল্যের পরিবহন হিসেবে উবারের সার্ভিসগুলো অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। উবার ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের যাত্রীরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সময় সাশ্রয় করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, উবার ব্যবহারকারীদের ৮২ শতাংশ যাত্রী অফিসে যাতায়াতের জন্য উবার ব্যবহার করেছেন। এতে প্রতিবছর আনুমানিক ১১ লাখ কর্মঘণ্টা সাশ্রয় হয়েছে, যা ৯৪ কোটি টাকার সমপরিমাণ।
অর্থনীতিতে ভূমিকা
উবার চালকরা তাদের অন্যান্য বিকল্প কর্মসংস্থানের তুলনায় ৪২ শতাংশ বেশি আয় করছেন। ২০২৩ সালে উবার বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পে অতিরিক্ত ২৯০ কোটি টাকার অবদান রেখেছে। ২০২৪ সালে উবার ২১ লাখ ৪০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। এছাড়া ২০২৪ সালে উবারের মাধ্যমে বাংলাদেশের যাত্রীরা মোট ৬৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকার ভোক্তা উপযোগিতা লাভ করেছেন।
বেড়েছে উপার্জন-সুযোগ
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ৫০ শতাংশ চালক মনে করেন উবার প্ল্যাটফর্ম না থাকলে তাদের জন্য কাজের সুযোগ কমে যেত। এছাড়া ৭৬ শতাংশ চালক বলেছেন যে, উবার তাদের প্রথম আয়ের প্ল্যাটফর্ম।
পরিবহন ব্যবস্থার রূপান্তর
৮১ শতাংশ যাত্রী একমত হয়েছেন যে উবারের মাধ্যমে রাইড বুক করা রাস্তা থেকে গাড়ি নেওয়ার চেয়ে অনেক সহজ। এছাড়া ৮৬ শতাংশ যাত্রী উবার অ্যাপকে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবহন উদ্ভাবন হিসেবে মনে করেন।
নিরাপত্তা ও সহজলভ্যতা
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৯৫ শতাংশ নারী যাত্রী বলেছেন নিরাপত্তাই তাদের উবার ব্যবহারের অন্যতম প্রধান কারণ। ৮৯ শতাংশ যাত্রী উবারকে রাতে বাড়ি ফেরার সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম বলে মনে করেন। ৮৭ শতাংশ যাত্রী উবারের কারণে শহরে যাতায়াত সহজ হয়েছে বলে মনে করেন। এছাড়া ৭৮ শতাংশ যাত্রী বলেছেন উবারের মতো রাইড শেয়ারিং সার্ভিস না থাকলে রাতে নিরাপদ যাতায়াত কঠিন হতো।
অনুষ্ঠানে বিআরটিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, সরকার দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ প্রেক্ষাপটে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা, কর্মসংস্থান তৈরি ও পর্যটন খাত এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে উবারের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। রাইড শেয়ারিং শিল্প, যার মধ্যে উবারও অন্তর্ভুক্ত- প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করে পরিবহন খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে যা ইতিবাচক অবদান রাখছে।
উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল বলেন, ২০২৪ অর্থনৈতিক প্রভাব প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কীভাবে উবার দেশের পরিবহন ব্যবস্থা বদলে দিচ্ছে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। আমরা আমাদের ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে গর্বিত ও ভবিষ্যতে আরও উন্নত সেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এর আগে পাবলিক ফার্স্টের টেক, মিডিয়া ও টেলিকম প্রধান এমি প্রাইস প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়।
প্যানেল সদস্যরা ছিলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, পিডব্লিউসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং পার্টনার শামস জামান ও উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল। তারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচকরা একটি টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন। যা দেশের প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত প্রেক্ষাপটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম।
বিষয়: #অবদান #অর্থনীতি #উবার #দেশ #সাল #২০২৪
