

সোমবার ● ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ছাতকে জিয়াউর রহমান হত্যার মামলা পিবিআইতে স্থানান্তর ও বাদী পরিবর্তনের দাবীতে স্মারকলিপি
ছাতকে জিয়াউর রহমান হত্যার মামলা পিবিআইতে স্থানান্তর ও বাদী পরিবর্তনের দাবীতে স্মারকলিপি
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
ছাতকে মুদি ব্যবসায়ি জিয়াউর রহমান হত্যাকান্ডের রহস্য ৫মাস অতিবাহিত হলে ও আজ ও উদঘাটন করতে পারেনি থানা পুলিশ। আলোচিত
মামলার তদন্তভার থানা পুলিশের পরিবর্তে পিবিআইতে স্থানান্তর এবং মামলার বাদী নিহতের স্ত্রীকে গ্রহণের দাবী জানিয়ে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি বরাবরে স্মারকলিপি দায়ের করেছেন ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামের নিহতের স্ত্রী রানু বেগম। গত রোববার বিকালে (২৩ ফেরুয়ারি) নগরীর দক্ষিণ সুরমার আলমপুরে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে তিনি স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে এ স্মারকলিপি জমা দেয়। স্মারকলিপিতে তিনি উল্লেখ করেন, ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপির নেতা তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদ, জয়নাল আবেদিন, রাজু মিয়া, গৌছ উদ্দিনের সঙ্গে গ্রামে আধিপত্য বিস্তার এবং জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তার স্বামী জিয়াউর রহমানের গোষ্ঠীগত বিরোধ ছিল। বিগত সময়েও তারা নানা ভাবে তার স্বামীর ক্ষতি করতে চেষ্টা করেছিল। সর্বশেষ গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদ তার স্বামী জিয়াউর রহমানকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে নানা রকমের হুমকী-ধমকী দেয়। এ ঘটনার পর দিনে গত ৮ সেপ্টেম্বর সকালে তার স্বামী মুদি দোকানের মালামাল কিনতে বেশ কিছু টাকা নিয়ে সিলেট শহরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। কিন্তু ওইদিন সন্ধ্যায় রাতে তিনি বাড়িতে ফিরে না আসায় রানু বেগম ও তার ছেলে সালমান আহমদ জিয়াউর রহমানকে অনেক খোঁজাখুজি করতে থাকে। কিন্তু তাঁর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এর পর গত ১০ সেপ্টেম্বর সকালে পাশ্ববর্তী মহদী গ্রামের মন্দিরের নিকটবর্তী খাল থেকে পুলিশ তার স্বামী জিয়াউর রহমানের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে। তার স্বামীর এ অবস্থা দেখে তিনি পাগলপ্রায় হয়ে যান। পিতৃশোকে একই অবস্থা ছিল তার সন্তানদেরও। পরিবারের সবার হতাশাজনক এবং অনেকটা উন্মাদপ্রায় অবস্থার সুযোগে তার স্বামীর সৎভাই তাজিজুর রহমান বুদুর প্রতিপক্ষের যোগসাজশে তাড়াহুড়ো করে ভিকটিমের পরিবারের সাথে পরামর্শ ছাড়া বিএনপির নেতা তাজ উদ্দিনের নাম বাদ দিয়ে নিহতের সৎ ভাই তাজিজুর রহমান বাদী হয়ে থানায় একটি অঞ্জাত নামা হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১২/২৪) ওই তাজিজুর রহমান বুদুর বেশ কয়েক বছর আগে থেকে তার গ্রামে নিজের পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে অন্তর ১৫ কিলোমিটার দূরে দেবেবগাও গ্রামে বসবাস করছেন। কিন্তু তার স্বামী হত্যার পরের দিন থেকে প্রতিদিন দরখাস্তকারীর সৎ দেবর তাজিজুর রহমান বুদুরকে গ্রামে দেখা যায় এবং প্রতিপক্ষের সাথে সন্দেহজনক সখ্যতা পরিলক্ষিত হতে থাকে। পাশাপাশি পুলিশও মামলার বিষয়ে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেয়নি বা সন্দেহভাজন তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল থেকে মইন ও রাজুসহ দুজনকে পুলিশ আটক করে। বিএনপি নেতা তাজ উদ্দিনের মাধ্যমে বড় অংকের টাকার বিনিময় জাউয়াবাজার পুলিশ ফাড়ি থেকে গভীর রাতে আসামীদের ছেড়ে দেয় সাবেক ইনচার্জ আকরাম উদ্দিনের নেতৃত্বে। আসামী ছেড়ে দিয়েছে নিহতের সৎভাইকে বাদী বানিয়ে অঞ্জাতনামা হত্যা মামলা থানায় দায়ের করেছেন।পরে নিহতের স্ত্রী রানু বেগম গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ জেলা আমলগ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদ, তাজিজুর রহমান বুদুর, জয়নাল আবেদিন, রাজু মিয়া, গৌছ উদ্দিনসহ ব্যক্তিদের্রকে তার স্বামীর হত্যকারী হিসেবে দায়ী করে একটি পিটিশন মামলা (মামলা নং-৪৮৮/২৪) দায়ের করেন। বিজ্ঞআদালত তাৎক্ষণিক তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন এবং ছাতক থানায় একই ঘটনায় মামলা থাকায় যথাযথ তদন্তপূর্বক পুলিশকে দ্রুত প্রতিবেদন পেশ করার নির্দেশ দেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, হত্যা মামলার তদন্তে থানা পুলিশের গড়িমসি ও স্বামী হত্যা মামলার কথিত বাদীর সন্দেহজনক আচরণ এবং হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত প্রধান সন্দেহভাজন যুক্তরাজ্য প্রবাসী চিহ্নিত দুস্কৃতিকারী বিএনপির নেতা তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদের সঙ্গে অস্বাভাবিক উঠা বসা করছে। এসব ঘটনায় তার স্বামী হত্যার ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিয়ে নানা শংকিত হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় পরিপ্রেক্ষিতে রানু বেগম সিলেট প্রেসক্লাবে গত বছরের ১৩ অক্টোবর একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মামলার বাদী পরিবর্তন এবং সন্দেহভাজন আসামীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। এদিকে হত্যার মামলার আসামী বিএনপি নেতা তাজ উদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদ তার উপর থেকে মামলা প্রত্যাহার না করলে সহপরিবার হত্যার করার হুমকি একাধিবার দেয়া হয়েছে। গত ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ সন্ধ্যায় তার ছেলে সালমান আহমদকে রাস্তায় একা পেয়ে হত্যার হুমকী দেয়। এঘটনায় গত ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে ছাতক থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-১৫৬২/২৫) দায়ের করেছে। তিনি স্বামীর প্রকৃত খুনীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতার, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কথিত বাদী তাজিজুর রহমান বুদুরকে পরিবর্তন করে তাকে প্রকৃত বাদী হিসেবে গ্রহণ এবং থানা পুলিশের পরিবর্তে পিবিআই-এর মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত করে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন পেশ করার জন্য তিনি ডিআইজি বরাবওে আকুতি মিনতি জানিযেছে।
বিষয়: #ছাতক #জিয়াউর #রহমান