শুক্রবার ● ৭ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বজ্রপাতে প্রাণ গেল ১১ জনের
বজ্রপাতে প্রাণ গেল ১১ জনের
জ্রপাতে দেশের ছয় জেলায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে নাটোরে দুই, নওগাঁয় তিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে তিনজন, দিনাজপুরে একজন, ঠাকুরগাঁওয়ে একজন ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পাঁচজন।
নাটোর: জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের কবরস্থান সংলগ্ন বারনই নদীতে দুপুরের দিকে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে মো. কামরুল হোসেন (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন মো. মজনু (৪০) নামে একজন। নিহত কামরুল একই উপজেলার কোমরপুর গ্রামের মো. লুৎফর রহমানের ছেলে। আর আহত মজনু একই গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেওয়ান আকরামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে, জেলার গুরুদাসপুরে বজ্রপাতে আবেরা বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে পৌর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবেরা গুরুদাসপুর পৌরসভা শহরের আনন্দ নগর মহল্লার সাদ্দাদ হোসেনের স্ত্রী।
গুরুদাসপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফজলুর রহমান ফজল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জেলার শিবগঞ্জ পৌরসভার আলিডাঙ্গা গ্রামে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ববি বোকত (২২) নামে এক গৃহবধূ। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ববি ওই গ্রামের সুভাষ বোকতের স্ত্রী।
একই উপজেলার পাকা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাকা গ্রামের ইসমাইল মাস্টারের পাড়ায় নিজ বাড়ির আঙিনায় বৃষ্টির মধ্যে গোসল করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই কবিতা খাতুন নামে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। কবিতা চরপাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
পাকা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মালেক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অন্যদিকে, জেলার ভোলাহাট উপজেলায় বৃষ্টির মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে আমেনা খাতুন (১০) নামে আরেক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আমেনার বাবা এসলাম আলী জানান, আমেনা বাড়ির পাশের আম কুড়াতে গেলে বজ্রপাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় মেয়েকে উদ্ধার করে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নওগাঁ: জেলার মান্দা উপজেলার নাগরগোলা গ্রামে খাদেমুল (৫০) ও গাহন গ্রামে মনিকা (৩৫) নামে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিকেলে বৃষ্টির সময় বাড়ির পাশে আম কুড়াচ্ছিলেন খাদেমুল। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এছাড়া বাড়ির উঠানে ধানের খড় তোলার সময় বজ্রপাতে মনিকার মৃত্যু হয়।
এদিকে একই উপজেলার ভোলাম গ্রামে বিকেলে ধান শুকানোর কাজ করছিলেন শামসুল আলম। এ সময় ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে, জেলার বদলগাছী উপজেলার ঘাবনা গ্রামের মাঠে বিকেলে গবাদি পশুকে ঘাস খাওয়াচ্ছিলেন আব্দুল খালেক ও হবিবুর রহমান নামে দুই ব্যক্তি। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলে তারা সড়কের পাশে গাছের নিচে আশ্রয় নেন। তখন বজ্রপাতে গাছের ডাল পড়ে তারা দুজনই গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় তাদের সঙ্গে থাকা দুটি ছাগল মারা গেছে। স্থানীয়রা আহত দু’জনকে উদ্ধার করে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন ও মান্দা থানার ওসি মোজ্জামেল হক এবং বদলগাছী থানার ওসি মাহবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
দিনাজপুর: জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নের লালঘাট এলাকায় বজ্রপাতে জুয়েল (১৯) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত জুয়েল ওই এলাকার গোলজার হোসেনের ছেলে। তিনি আফতাবগঞ্জ সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে বাড়ির পাশের একটি কালভার্টের ওপরে বসে ছিলেন জুয়েল। এ সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন তিনি। তাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আফতাবগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসাই) সিরাজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে বজ্রপাতে লিপি আকতার নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে উপজেলার রনশিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। লিপি রনশিয়া গ্রামের ফিরোজ জামানের স্ত্রী।
জাবরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, দুপুরে ঝড়-বৃষ্টি আসছে দেখে লিপি আক্তার বাড়ির পাশে শুকাতে দেয়া ভুট্টা গাছ তুলতে যান। এ সময় বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পীরগঞ্জ থানার ওসি খায়রুল আলম। তিনি বলেন, বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে বজ্রপাতে মো. রাফি (১৪) নামে এক মাদরাসাছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টায় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। রাফি সন্দ্বীপের গাছুয়া ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাদিয়ার গো মধ্যের বাড়ির মো. জামালউদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, বজ্রপাতের সময় রাফি অন্যান্য ছেলেদের সঙ্গে চরের মাঠে ফুটবল খেলছিল।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গাছুয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সোহেল মেম্বার।
তিনি বলেন, নিহত রাফি স্থানীয় খান সাহেব নুরানী হাফেজীয়া মাদরাসার হিফজুল কোরআন বিভাগের ছাত্র ছিল। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ছেলেকে হারিয়ে রাফির বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে গেছে।
বিষয়: #বজ্রপাত