

সোমবার ● ১৭ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ছাতকে জানাযায় দোয়া না পড়ায় লাশ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে টানাটানি, এঘটনায় প্রতিবাদ করায় এক ঘরী করার অভিযোগ
ছাতকে জানাযায় দোয়া না পড়ায় লাশ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে টানাটানি, এঘটনায় প্রতিবাদ করায় এক ঘরী করার অভিযোগ
ছাতক সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ::
ছাতকে জানাযায় দোয়া না পড়ায় লাশ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে টানাটানি এঘটনায় প্রতিবাদ করায় মাওলানা খালেদ আহমদের পরিবারকে এক ঘরী করার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের গণিপুর গ্রামে জানাযার পর দোয়া না পড়ায় লাশ দাফনে বাধা দেয়ার এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, গত১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার গণিপুর গ্রামের কাজি নজরুল ইসলাম দোলু ও মাওলানা কাজি খালেদ আহমদের মায়ের জানাযার নামাজের পর দোয়া না পড়ায় লাশের খাটিয়া নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে টানাটানি করে ফুলতলি ও কওমী মসলকের মুসল্লীদের মধ্যে । ফুলতলী মসলকের দাবি জানাযার পর দোয়া করতে হবে, দোয়া না করলে লাশ দাফন করা যাবেনা। কওমি আলেমদের মতে জানাযার পর লাশ দাফন করে দোয়া করা। নজরুল ইসলাম দোলু ও মাওলানা কাজী খালেদ কওমি অনুসারী। জানায়ার পর দোয়া করতে শক্তি প্রদর্শন করে ফুলতলী মসলকির মুসল্লীরা। লাশ বহনকারী খাটিয়া কবরস্থানের দিকে গেলে কিছু মুসল্লী খাটিয়া বাধা প্রদান করে, লাশ বহনকারী খাটিয়ায় ধরে আটকানোর চেষ্টা করা হয়।
এসময় বিভিন্ন গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় লাশ দাফনের জন্য রওনা হলে সাদারাই গ্রামবাসীর কারনে লাশ দাফন করা হয়। গণিপুর গ্রামের ইউপি মেম্বার রুমেল আহমদের বাবার নিদেশে লাশের খাটিয়া ধরে আটকানোর চেষ্টা করে এবং গ্রামের যুবকরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ ঘটনা নিয়ে গ্রামের দুপক্ষের মধ্যে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়। এমন পরিস্থিতিতে মৃত মহিলার আত্মীয় স্বজন ও পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় দাফন শেষ করেন মাওলানা খালেদ ও তার পরিবারের সবাইকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে এলাকাবাসীর লোকজন। ইতিমধ্যে লাশের খাটিয়া ধরে টানাটানির ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেই একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছেন। এনিয়ে এলাকার পরিস্থিতি টান টান উত্তেজনা ও উত্তপ্ত উঠে।
গত শুক্রবার মৃত মহিলার আরেক ছেলে কাজি খুর্শিদ মিয়া জুম্মার নামাজে মসজিদে গেলে, গ্রামের মাতব্বর মনির মিয়া তাকে ডেকে বলেন তোমরা আর এই মসজিদে আসবে না, তোমাদেরকে পঞ্চাইত থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে। এ গ্রামের পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এক ঘরী করে রাখা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কাজী খুর্শিদ মিয়ার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। মাওলানা খালেদ আহমদের ছোট ভাই প্রবাসী কাজি নজরুল ইসলাম দোলু এ প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন সারা বিশ্বে তথা বাংলাদেশের হকপন্হী সব আলেমগণের মতামতের ভিত্তিতে জানাযার পরে দোয়া করা বিদায়াত।
জানাযার পরে লাশ দাফন করে দোয়া করা ইসলামের বিধান। কিছু দুষ্কৃতকারীরা বারবার ইসলামের অনুশাসন মতো চলতে বাধা দেয়। কয়েক বছর আগে তার এক ভাতিজি, তার পর একজন চাচা মারা গেলে জানাযায় গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন ফুলতলি মসলকরা। জানাযার পর দোয়া করার বিধান মানতে হবে,না মানলে আমাদের বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিচ্ছে। রাস্তা ঘাট হাটবাজার যেতে দেবে না। সবসময় আমাদের পরিবারের সাথে এমন জঘন্য আচরন করে আসছে একদল নামধারী মুসল্লীরা। আমরা ধর্মীয় অনুশাসন মেনে আল্লাহ ও রাসুলের নির্দেশিত পথে চলতে চাই, জেনে শুনে কোন বিদায়াত করতে চাই না।
এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গত সোমবার দুপুরের গনিপুর গ্রামে এলাকাবাসির উদ্দ্যোগে সভা অনুষ্টিত হয়। মাওলানা মুফতি আবু সাঈদ আহমদের সভাপতিত্বে ও জাউয়াবাজার দারুল হাদিস মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা মনজুর আহমদের পরিচালনায় অনুষ্টিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, মাওলানা খালিদ আহমদ, কাজি নজরুল ইসলাম, সাবেক মেম্বার ফয়সল আহমদ, জোবায়ের আহমদ খান, সুরুক মিয়া, আমির আলী, নুরুজ আলী, ধন মিয়া, মখদ্দুস আলী খান, আব্দুস ছমির, আব্দুল জাহির, রমিজ উদ্দিন, আব্দুল্লাহ, জামাল খা, আব্দুর রউফ, নুরুল আমিন, নুর মিয়া, জহুর উদ্দিন, আতাউর রহমান, মোক্তাদির আহমদ প্রমুখ। বক্তারা বলেন এমন বর্বরতা আইয়ামে জাহিলিয়াতকে হার মানায়। এঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য রুমেল আহমদ এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আপোষের নিম্পতি চেষ্টা করছেন তিনি।
এব্যাপারে ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দ জানান, লাশ দাফন নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে টানাটানি,বাধার ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। কোন ব্যক্তিকে পঞ্চায়েত এক ঘরে করে রাখার নিয়ম নেই। খবর শুনে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
বিষয়: #আনোয়ার #রনি #হোসেন