

বৃহস্পতিবার ● ২০ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » সুনামগঞ্জ » ছাতকে ভাতগাও ইউপি চেয়ারম্যান শুন্য থেকে কোটিপতি ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার,কারাগারে
ছাতকে ভাতগাও ইউপি চেয়ারম্যান শুন্য থেকে কোটিপতি ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার,কারাগারে
ছাতক সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ::
আত্নগোপন থেকেই রক্ষা পায়নি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার কৃষকলীগের আহবায়ক ও ভাত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন। অবশেষে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি উপজেলার ভাতগাঁও গ্রামের মৃতঃ আব্দুল মান্নানের পুত্র। গত বুধবার রাতে থানার পুলিশ অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযান পরিচালনা করে তার নিজ বাড়ি সংলগ্ন হায়দরপুর বাজার এলাকা থেকে ইউপি চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অল্প দিনের ব্যবধানে শুন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন।
পুলিশ জানায়, এমপি মানিকের কৃপায় বেকার থেকে ইউপি চেয়ারম্যান বনে যান তিনি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আত্নগোপন পালিয়ে গিয়ে ও শেষ রক্ষা হয়নি ইউপি চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১১ সালের নির্বাচনে ভাত গাও ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওলাদ হোসেন। এক সময় বেসরকারি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ছিলেন। তার এলাকায় মাষ্টার হিসাবে পরিচিত।এজন্য এলাকার মানুষের কাছে তিনি মাষ্টার নামে পরিচিত ছিলেন।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষকতার পেশার পাশাপাশি থানার দালালি শুরু করেন তিনি। ২০১১ সালে ইউপি চেয়ারম্যান নিবাচিত পর রাজনীতিতে সাবেক এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের চাচাতো ভাই উপজেলার যুবলীগের সাধারন সম্পাদক প্রভাব শুরু হলে তিনি বিল্লাল আহমদের পেছনে অর্থ লগ্নি করা শুরু করেন। এরপর সাবেক এমপি মানিক পরিবারের আস্থাভাজন হিসাবে এলাকায় প্রচার চালাতে থাকেন তিনি। ২০১৮ সালে উপজেলা কৃষকলীগের আহবায়ক পদ বাগিয়ে নেন আওলাদ হোসেন। এর আগে কখনো তাকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত দেখেনি এলাকার মানুষ। ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন । সাবেক এমপি মানিকের সরাসরি হস্তক্ষেপে উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের পেছনে ফেলে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে যান আওলাদ হোসেন।
আওলাদ হোসেন চেয়ারম্যান নিবাচিত হয়ে কয়েক বছরের ব্যবধানে শুন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন।
তার টাকার উৎস ছিল ভুয়া প্রকল্প থানা দালাল জমি দখল ও বেচাকেনা। অবৈধভাবে উপার্জিত টাকার সিংহভাগই লন্ডনে পাঠিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অথচ দেশের প্রশাসন এখনো তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার তার গ্রামের বাড়ির হাওরের ভাতগাও মৌজায় প্রায় ৩০ একর জমি কিনেছেন তিনি।সিলেটের আখলিয়া এলাকায় আব্দুল মান্নান ভিলা তার বাবা নামে আলিশান বাসা রয়েছে।
যা তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এসব করেছেন। এছাড়া তার ছেলে ৩০ লাখ টাকার বিনিময় লন্ডনে পাঠিয়েছে। আওলাদ হোসেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর নিজেকে সাবেক এমপি মানিকের চেয়ারম্যান হিসাবে পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। কাজ না করেই টিআর, কাবিখা, জিআর, কাবিটার টাকা ও চাল উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আওলাদ হোসেন ভিজিডি, ইউপি ট্যাক্স, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ফি, ১% খাতের টাকা খেয়ালখুশিমতো ব্যবহার করতেন। এছাড়া নিজের লোকদের বিভিন্ন সরকারি কার্ড ও বরাদ্দ দিতেন এবং নিজের মনোনীত লোক দিয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করাতেন। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড, বিভিন্ন প্রকার ভাতা, আশ্রয়ণ প্রকল্প ও মুজিব বর্ষের ঘর, সরকারি মাটি বিক্রি, ওয়ারেশ কায়েম বাণিজ্য, জমির সালিশসহ নানাভাবে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা।
এব্যাপারে ওসি মোঃ মোখলেছুর রহমান আকন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মাষ্টার আওলাদ হোসেনকে গ্রেফতারের এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন গত বৃহস্পতিবার সকালে আসামিকে সুনামগঞ্জ আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম গত ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা হবে।
বিষয়: #ছাতক #ভাতগাও