সোমবার ● ১০ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » খেলা » রাতে নিউইয়র্কে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি বাংলাদেশ
রাতে নিউইয়র্কে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি বাংলাদেশ
নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। নিউইয়র্ক শহর থেকে ২৫ মাইল পূর্বে লং আইল্যান্ডে অবস্থিত। এবার বিশ্বকাপের জন্য ৫ মাসেরও কম সময়ের পরিশ্রমে এটি তৈরি করা হয়েছে।
অস্থায়ী এই স্থাপনা আশপাশের পরিবেশ এবং স্টেডিয়ামের সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছে। কিন্তু খেলতে নামার পর এর ভেতর থেকে যেন ‘গরল’ বেরিয়ে আসছে এবং হতাশায় নীল করে দিচ্ছে। ব্যাটারদের বধ্যভূমি হিসেবে ইতোমধ্যেই রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে সবার।
ম্যাচের আগের রাতে দুশ্চিন্তা ভর করেছে বাংলাদেশের টাইগারদের। এখানে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় ম্যাচটি শুরু হবে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ এটি। সম্প্রতি ব্যাটারদের যে দুর্গতি আর দুর্দশা বাংলাদেশ দলের জন্য আরও বড় পরীক্ষা নিঃসন্দেহে অপেক্ষা করছে। কঠিন এই উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রামে থাকা ব্যাটারদের নিয়েই বড় দুশ্চিন্তা।
তবে আশার কথা হলো এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় দিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়াম নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। সেখানেও উইকেট খুব একটা সুবিধাজনক ছিল না। সেই রহস্যময় উইকেটে লো-স্কোরিং ম্যাচে তীব্র শীতল যুদ্ধের পর শেষ পর্যন্ত ২ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ।
দীর্ঘদিন ধরে রানের খরায় থাকা লিটন কুমার দাস ওয়ান ডাউনে নেমে ভালো ইনিংস খেলেন। তবে ৩৮ বলে ৩৬ রান করার সময়, যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে তিনি ক্রিজে ফেরার লড়াই করছেন। তবে লিটন রানে ফিরেছেন, এটা বাংলাদেশ দলের জন্য বড় স্বস্তির খবর।
কিন্তু তাওহিদ খেলেছেন হৃদয় বিদারক ইনিংস। জোয়ারের বিরুদ্ধে ব্যাটিং করে প্রশংসিত হলেও উইকেটে থাকতে পারেননি। নিউইয়র্কের উইকেট ডালাসের চেয়ে কঠিন হবে, এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।
এখানে প্রথম ৪টি ম্যাচই ভয়ঙ্কর হয়েছে ব্যাটসম্যানদের জন্য। এই উইকেটে টিকে থাকতে পারছেন না বিশের সেরা ব্যাটসম্যানরা। তারা বলছেন, এটা কোনোভাবেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য আদর্শ উইকেট নয়।
কিন্তু সেখানে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার মতো তিনটি বড় দল এখানে খেলেছে এবং ব্যাটিং ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। তিনটি দলেই বিশ্ব ক্রিকেটের তারকা ব্যাটসম্যান আছেন যারা ভালো ফর্মে আছেন।
কিন্তু নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে এর কোনোটাই কাজে আসে না। তাই বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের জন্য আজ বড় পরীক্ষা। বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী শনিবার সকালে প্রথম ম্যাচ খেলেন শান্তরা। সেই ম্যাচ খেলার পর, ক্রিকেটাররা রোববার ভোরে নিউইয়র্কের ভেন্যু এলাকা লং আইল্যান্ডে উড়ে যান। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে খুব একটা প্রস্তুতির সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ দল।
মাত্র দেড় দিনের বিরতির পর কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে এমন একটি মাঠে যেখানে মঞ্চটি অদৃশ্য কাঁটা দিয়ে ঢাকা। উইকেটে অসম বাউন্স নিয়ে ব্যাটসম্যানরা যেমন সমস্যায় পড়ছেন, তেমনি আউটফিল্ডে ফিল্ডারদের জন্যও সমস্যা তৈরি করছে। যে বল নিশ্চিতভাবে চার হওয়ার কথা, মাঠের নিচে উড়ে যাওয়ার পরে নড়ে না, থেমে যায়।
আবার কিছু শট মাঠে পড়ে আচমকা লাফ দিয়ে উঠছে, যা ফিল্ডারদের সমস্যা তৈরি করছে। এমন মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার পরই ভারতের পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ করা হয়। সে জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে কিছুটা ভালো করা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আইসিসি।
বাংলাদেশের ম্যাচে কেমন উইকেট ব্যবহার করা হবে নিশ্চিত নয়। কারণ রবিবার ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ব্যবহার করা হয়েছে অব্যবহৃত উইকেট। সেটি যদি ভালো হয়, তাহলে হয়তো বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ সেখানেই অনুষ্ঠিত হতে পারে।
ইতোমধ্যে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে প্রোটিয়াদের, দুই ম্যাচ খেলে জিতেছে তারা এখানে। পরীক্ষা যা দেয়ার বাংলাদেশকেই দিতে হবে। প্রোটিয়াদের দুর্দান্ত পেস আক্রমণের সামনে দাঁড়াতে হবে বাংলাদেশি ব্যাটারদের।
বিশ্বকাপের এই ম্যাচে বাংলাদেশ অবশ্য নামবে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্য নিয়ে। এখন পর্যন্ত দুই দলের মধ্যে মুখোমুখি ৮ দেখায় কখনোই দক্ষিণ আফ্রিকাকে টি-টোয়েণ্টি ফরম্যাটে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। উল্টো সবশেষ আসরে লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল। সেই অধরা জয়ের লক্ষ্যেই আজ খেলবে টিম টাইগাররা।
এই ম্যাচে অবশ্য মূল লড়াই হবে দুই দলের বোলারদের মধ্যে। এনরিখ নরকিয়া এরইমাঝে নিজের বিধ্বংসী রূপ দেখিয়েছে। ওটনিয়েল বার্টম্যানও আছেন দারুণ ছন্দে। অন্যদিকে মুস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদরাও মুখিয়ে আছেন নিজেদের সেরাটা দেখাতে। সবমিলিয়ে নাসাউ কাউন্টিতে জমাট এক লড়াইয়ের অপেক্ষায় বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিষয়: #বাংলাদেশ