

মঙ্গলবার ● ২৫ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বম্ভরপুরের মিয়ারচরে পিতাপুত্রের দ্বারা দেদারছে চলছে বালি ও মাটি লুটতরাজের মহোৎসব
বিশ্বম্ভরপুরের মিয়ারচরে পিতাপুত্রের দ্বারা দেদারছে চলছে বালি ও মাটি লুটতরাজের মহোৎসব
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তারা মিয়া ও তার ছেলে ইকরাম মিয়ার বিরুদ্ধে যাদুকাটা নদীকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দেদারছে বালি ও মাটি লুটতরাজের মহোৎসব চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী জানান,সারাদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কমপক্ষে ২০টি অবৈধ সেইভ মেশিন দ্বারা যাদুকাটা নদী হতে বালি উত্তোলনের পাশাপাশি ঐ নদীর পূর্বপাড় কাটার মাধ্যমে মাটি ও বালি বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই পিতাপুত্র। মিয়ারচর পাচগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে মিয়ারচর স্কুল ও বাজারের পাশ থেকে ব্যাপকভাবে মাটি ও বালি উত্তোলন করে লাভবান হচ্ছেন তারা। মিয়ারচর গ্রামের কালা মিয়ার পুত্র শাহাবুদ্দিন (২২) তাদের বাড়ীর সামনে যাদুকাটা নদীতে সেইভ মেশিন চালিয়ে বালি উত্তোলন করলে বালিখেকো ইকরাম মিয়া ও তার পিতাকে নিষেধ প্রদান করলে উত্তেজিত এই পিতাপুত্র তাকে খুন করার লক্ষ্যে তার বাড়ীতে আক্রমণ চালান। এতে নিজ বাড়ীতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে শাহাবুদ্দিন বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। দিনে সেইভ মেশিন দিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে বালি লুটতরাজ করলেও রাতের বেলা কমপক্ষে ৫টি ড্রেজার মেশিন দ্বারা একাধারে নদীর পূর্বপাড় কাটার পাশাপাশি বালি ডাকাতির মহোৎসবও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এলাকাবাসী এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অফিসার ইনচার্জকে অবগত করলেও নানা অজুহাতে এ চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন থেকে বিরত থাকে প্রশাসন। তবে গত সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুর ১২টায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শিল্পী রানী মোদক ও ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা এ.কে.এম ছাব্বির সরজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে সেইভ মেশিন ব্যবহারকারী তারা মিয়া ও তার ছেলে ইকরাম মিয়া এবং তাদের বাহিনীকে যাদুকাটা নদীতে শেইভ ও ড্রেজার মেশিন দ্বারা বালি উত্তোলন,নদীর পাড় কাটা বন্ধ এবং পরিবেশ বিপর্যয় রোধ করা থেকে বিরত থাকার জন্য নিষেধ প্রদান করেন। তারপরও বন্ধ হয়নি এ চক্রের বালি উত্তোলন ও মাটি কাটা। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মিয়ারচর নিবাসী মৃত আব্দুল জব্বারের পুত্র মোঃ তারা মিয়া তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ও হাই স্কুলের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধসহ বিদ্যালয়ের তহবিলের জন্য আমরা আমাদের নিজস্ব জায়গা থেকে মাটি ও বালি উত্তোলন করেছি। কিন্তু এ ব্যাপারেও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিষেধ প্রদান করায় আমরা তার নির্দেশ মেনে বালি ও মাটি উত্তোলন থেকে বিরত রয়েছি। তিনি আরো বলেন,যারা ড্রেজার ও সেইভ মেশিন চালায় আমি নিজে অভিযান চালিয়ে তাদের সেইভ ও ড্রেজার বোমা মেশিন আটক করে ধ্বংস করে দেই। এ কারণে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে কুচক্রীমহল আমরা পিতাপুত্রের বিরুদ্ধে অসদুদ্দেশ্যে অভিযোগ উত্থাপন করে যাচ্ছে। অন্যদিকে মিয়ারচর-পাটানপাড়া গুদারাঘাটের যাত্রী সাধারণ বলেন,তারা মিয়া ও ইকরাম মিয়া এ দুই পিতাপুত্র প্রতিদিন প্রকাশ্য দিবালোকে এবং রাতের আধারে সেইভ ও ড্রেজার মেশিন দিয়ে বেআইনীভাবে মাটি বালি উত্তোলন করে যাচ্ছেন। তাদের উত্তোলিত বালি,পাথর ও মাটি এখনও ঘটনাস্থলে স্টেকিং করে রাখা আছে। সরজমিনে অভিযান চালিয়ে এগুলো এখনও জব্দ করলে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হবে। গত ১৮ জুলাই এ ব্যাপারে পত্র পত্রিকা ও অনলাইন ওয়েবপোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রকাশিত সংবাদগুলো উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নজরে আসে। তারপরও বন্ধ হচ্ছেনা বালি উত্তোলন ও নদীর পাড় কাটা। এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর থানার (ওসি) মুখলেছুর রহমান বলেন,আমি প্রস্তুত আছি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিযান পরিচালনা করলে পুলিশ প্রশাসন তাদেরকে সাপোর্ট দেবে।
বিষয়: #দেদারছ #দ্বারা #পিতাপুত্র #বালি #বিশ্বম্ভরপুর #মহোৎসব #মাটি #মিয়ারচর #লুটতরাজ
