শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২
---

Bojrokontho
বুধবার ● ২৬ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » কবি ও কবিতা » শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা
প্রথম পাতা » কবি ও কবিতা » শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা
৬৪ বার পঠিত
বুধবার ● ২৬ মার্চ ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা

-বিচিত্র কুমার
শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা
১৯৭১ সালের এক গভীর রাত। ঢাকার আকাশে তখন ভয় আর আতঙ্কের অন্ধকার। বাতাসে বারুদের গন্ধ, চারদিকে গুলির শব্দ আর মানুষের আর্তনাদ। রফিক সাহেব জানালার ফাঁক দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলেন, পাক হানাদার বাহিনীর গাড়িগুলো একে একে ঢুকে পড়ছে শহরের অলিগলিতে। কিছুক্ষণ পরেই পাশের বাড়ির করুণ চিৎকার শোনা গেল। তাঁর বুক কেঁপে উঠল। এই কি সেই দেশ, যে দেশের জন্য লক্ষ প্রাণ আত্মাহুতি দিচ্ছে? এই কি সেই স্বাধীনতা, যার জন্য তার বড় ছেলে আনোয়ার অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে?

রফিক সাহেব একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। বয়স ষাটের কোঠায়। স্বাধীনতার আন্দোলনের প্রতি তার প্রবল আগ্রহ ছিল, কিন্তু একমাত্র সন্তান আনোয়ার যখন যুদ্ধে যাওয়ার কথা বলেছিল, তখন তার মন সায় দেয়নি। তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, “তোর মা খুব অসুস্থ, আমি বৃদ্ধ মানুষ, তুই যদি যুদ্ধে চলে যাস, আমরা কীভাবে বাঁচব?” কিন্তু আনোয়ার চোখে অদম্য আগুন নিয়ে বলেছিল, “বাবা, দেশটাই যদি না থাকে, তাহলে আমাদের বেঁচে থাকাটা কী অর্থ বহন করবে?”

এরপর একদিন আনোয়ার বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি। শুধু একটা চিঠি রেখে গিয়েছিল—

“বাবা, আমায় ক্ষমা করো। মা’কে বলো আমি দেশের জন্য লড়াই করতে গেছি। যদি বেঁচে থাকি, একদিন বিজয়ের পতাকা হাতে ফিরে আসব।”

সেই থেকে রফিক সাহেব শুধু ছেলের অপেক্ষায় দিন কাটাতে লাগলেন। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে দোয়া করতেন, যেন আনোয়ার সুস্থ থাকে, যেন সে ফিরে আসে। কিন্তু সময় গড়িয়ে যেতে লাগল, কোনো খোঁজ মিলল না।

অন্যদিকে, আনোয়ার তখন মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। প্রথমে মিরপুরের এক গোপন ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়েছে, তারপর সীমান্ত পেরিয়ে চলে গেছে আগরতলা। সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছে। রাইফেল চালানো, গ্রেনেড নিক্ষেপ করা, শত্রুর ঘাঁটিতে হানা দেওয়া—সব কিছুরই হাতেকলমে শিক্ষা পেয়েছে সে। তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে সে একদল মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে ফিরে আসে ঢাকায়। এবার তাদের লক্ষ্য ছিল মিরপুরের রাজাকারদের ঘাঁটি ধ্বংস করা।

নভেম্বরের এক শীতল রাতে তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। অতর্কিত আক্রমণে রাজাকারদের পরাস্ত করতে সক্ষম হয় তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্য, পাক সেনারা পাল্টা হামলা চালায়। প্রচণ্ড গোলাগুলির মধ্যে আনোয়ার গুলিবিদ্ধ হয়, কিন্তু সে পিছু হটেনি। গুলির আঘাত উপেক্ষা করে সে সামনে এগিয়ে গিয়ে শত্রুর বাংকার লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়ে মারে। মুহূর্তেই বিকট বিস্ফোরণে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। শত্রুরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়, কিন্তু আনোয়ার আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি। রক্তাক্ত শরীর নিয়ে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

তার সহযোদ্ধারা তাকে বাঁচানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে, কিন্তু পাক সেনাদের অতর্কিত গুলিবর্ষণে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। শেষ মুহূর্তে আনোয়ারের ঠোঁটে একটুখানি হাসি ফুটে ওঠে। তার কানে যেন অনাগত বিজয়ের জয়ধ্বনি বাজছিল।

পরদিন, পাকিস্তানি বাহিনী তাকে আটক করে নিয়ে যায়। অকথ্য নির্যাতনের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

১৬ ডিসেম্বর—সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, যেদিন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাক সেনারা আত্মসমর্পণ করল। চারদিকে উল্লাসের জোয়ার। “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু!” স্লোগানে আকাশ-বাতাস কেঁপে উঠল। রফিক সাহেব রেডিওর খবর শুনে কেঁদে ফেললেন। দেশ স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু তার আনোয়ার আর ফিরে আসবে না!

কয়েকদিন পর এক মুক্তিযোদ্ধা এসে জানাল, আনোয়ারকে ধরা হয়েছিল, নির্যাতন করা হয়েছিল, তারপর হত্যা করা হয়েছিল। শহরের অজ্ঞাত কোনো গণকবরে তার দেহ সমাধিস্থ হয়েছে।

রফিক সাহেব ছেলের রক্তমাখা খাকি পোশাকটি বুকে চেপে ধরলেন। চোখ দিয়ে অবিরাম জল ঝরছে, কিন্তু তার হৃদয়ের গভীরে তখন একটাই প্রতিজ্ঞা—এই দেশের মাটির জন্য যে জীবন উৎসর্গ করেছে, সে কখনো হারিয়ে যাবে না। আনোয়ারের রক্ত বৃথা যায়নি।

বছর ঘুরে আসে বিজয়ের দিন। আনোয়ারের কবরের পাশে মানুষ ফুল রেখে যায়, শিশুরা আসে তার আত্মত্যাগের গল্প শুনতে। দেশ এগিয়ে যায়, সূর্য ওঠে, সময় বদলায়। কিন্তু শহিদদের স্মৃতি অমলিন থাকে চিরকাল।

শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।

দুপচাঁচিয়া,বগুড়া।



বিষয়: #  #  #  #


---

আর্কাইভ

--- --- --- --- --- --- আমি কয়েকটি লাইভ স্ট্রিমিং টক শো করব এবং আপনাদের সবাইকে আমার “কারেন্ট” অ্যাফেয়ার্সে অতিথি হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে চাই! আপনি কি আমার টক শোতে থাকতে আগ্রহী হবেন? --- বাঙ্গালী সাজে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বিদেশিনী! ???? --- ফেনী ও হবিগঞ্জে ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে কোস্টগার্ড। যোগাযোগ করুন ::- ফেনী:- ০১৭৬৯৪৪২৯৯৯,০১৭৬৯৪৪২৫৯১ , হবিগঞ্জ: - ০১৭৬৯৪৪১৯৯৯,০১৭৬৯৪৪১৩৩৩ --- আপনাদের লেখা আমাদের অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশ বা প্রচার করতে চান ? ই-মেইল ঠিকানা:: [email protected] ---

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
আল্লার দর্গায় দখল ও দূষনে হিসনা নদী দেখার কেউ নেই
হবিগঞ্জের মাধবপুরে ট্রাকের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে ৪জন নিহত আহত ৫
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে মাঠ থেকে ষাটোর্ধ বৃদ্ধের মৃতদেহ উদ্ধার।।
কোস্টগার্ডের অভিযানে দেশি-বিদেশি মাদক ও দেশীয় অস্ত্র জব্দ
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই করে চক্রটি, পলাতকরাও শনাক্ত
লতা সমাদ্দারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে সেই কনস্টেবলের মামলা
সারাদেশে একযোগে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট ৩৫টি সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান
রাণীনগরে খাস পুকুর খনন করে ১৪ লাখ টাকার মাটি বিক্রির অভিযোগ
পুলিশ পরিদর্শক হত্যা: আরাভ খানসহ ৮ জনের যাবজ্জীবন
মোংলায় ২০০ জনকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তা দিলো কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন
পুনঃরায় সংঘর্ষের আশংকা।
ঢাকাসহ ১৭ অঞ্চলে ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের শঙ্কা
বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ভোলায় কোস্টগার্ডের চিকিৎসা সহায়তা পেল ৩৬০ অসহায় মানুষ
ছাতকে সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের সিবিএ সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস গ্রেফতার
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে যুবলীগ নেতা জুয়েল বাহিনীর তান্ডবে বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটপাট! দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্থশতাধীক- এলাকায় টানটান উত্তেজনা
হাওরে থে‌কে হাস আন‌তে গি‌য়ে বজ্রপাতে খামারি মৃত্যু
মায়ানমারে ত্রাণ হস্তান্তর শেষে দেশে ফিরেছে নৌবাহিনীর জাহাজ ‘সমুদ্র অভিযান’
‘নির্বাচনী সামগ্রী ছাপা ব্যয় হবে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা’
শেখ হাসিনাসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
মোহাম্মদপুরে সাঁড়াশি অভিযান, গ্রেফতার ১৭
৭১ টিভির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
মাদারীপুরের রাজৈরে সংঘর্ষ–ভাঙচুর–ককটেল বিস্ফোরণ, ১৪৪ ধারা জারি
সুনামগঞ্জে পুত্রহত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সোলেমান কর্তৃক বাদিনী মাকে হুমকীর অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
আবারও রণক্ষেত্র শরীয়তপুর
মিয়ানমার থেকে ২০ বাংলাদেশিকে ফেরত
ছোট সাজ্জাদের স্ত্রীকে ৭ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
খুলনায় নৌ অঞ্চলিক স্কাউটস-এর ১৩ তম সমাবেশ অনুষ্ঠিত
লিটারে ১৪ টাকা বাড়লো সয়াবিন তেলের দাম
শিল্পে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, বাধাগ্রস্ত হবে নতুন বিনিয়োগ