

বৃহস্পতিবার ● ১০ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » মৌলভীবাজারে আইনজীবী সুজন হত্যার ৩দিন পর মুল রহস্য উদঘাটন
মৌলভীবাজারে আইনজীবী সুজন হত্যার ৩দিন পর মুল রহস্য উদঘাটন
জিতু তালুকদার, মৌলভীবাজার ::
মৌলভীবাজারে আইনজীবী সুজন মিয়াকে হত্যার ঘটনার ৩দিন পর রহস্যের জট উদঘাটন। ব্যাংকের এক সিকিউরিটি গার্ডকে মারার জন্য ‘ভাড়াটিয়া দুষ্কৃতিকারীরা’ নিযুক্ত করা চেহারার সাথে মিল দেখে হত্যা করেছে সুজনকে। এঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীকে আটকের পর সুজন হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়। এ পর্যন্ত হত্যাকা-ে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৫ জনকে আটক করেছে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ। এই হত্যাকা-ের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানাতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় পুলিশ সুপার এম.কে.এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং জনান।
পুলিশ সুপার জানান, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাসুদেবশ্রী এলাকার সামছুল হকের ছেলে নাজির মিয়া ওরফে মুজিবের সাথে অগ্রণী ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড একই এলাকার মিসবাহের পূর্ব বিরোধ ছিল। মুজিব তার প্রতিপক্ষ মিসবাহকে শায়েস্তা করতে চেয়েছিলেন। এজন্য রাজনগর উপজেলার মাথিউড়া চা বাগানের মনা নাইডুর ছেলে দুধ ব্যবসায়ী লক্ষণ নাইডুর সহযোগিতায় কয়েকজন লোক ভাড়া করা হয়। ভাড়াটে লোকজন ও লক্ষণ নাইডুর কাছে মূল পরিকল্পনাকারী মুজিব মুঠোফোনের মাধ্যমে মিসবাহ’র ছবি পাঠায়। ঘটনার দিন ভাড়াটে হত্যাকারীরা মৌলভীবাজার শহরে বানিজ্য মেলায় আইনজীবী সুজনকেজ দেখে তাদের ‘টার্গেট’ মিসবাহ মনে করে। তারা টার্গেটের ছবির ব্যক্তির সাথে মিল থাকার বিষয়টি মূল পরিকল্পনাকারী মুজিবকে জানালে ভিডিও কলের মাধ্যমে সুজনকে দেখে মিসবাহ ভেবে মারতে বলে মুজিব। নির্দেশ পেয়ে দুষ্কৃতিকারীরা সুজন মিয়ার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এসময় ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করলে গুরুতর আহত সুজন মিয়াকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে তার মৃত্যু হয় সুজন মিয়ার।
এদিকে হত্যাকা-ের পর পুলিশ আসামী শনাক্তের জন্য বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত করতে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নিহতের ভাই এনামুল হক সুমন মঙ্গলবার মৌলভীবাজার মডেল থানায় মামলা (নং-১৫, তাং-০৮/০৪/২০২৫) দায়ের করেন। তথ্যপ্রযুক্তির তথ্যপ্রযুক্তির ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ পর্যন্ত পুলিশ ৫ জনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলো- মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৩নং কামালপুর ইউনিয়নের বাসুদেবশ্রী এলাকার সামছুল হকের ছেলে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী নজির মিয়া ওরফে মুজিব (২৫), রঘুনন্দনপুর এলাকার মৃত সিজিল মিয়ার ছেলে মোঃ আরিফ মিয়া (২৭), দিশালোক ইটা সিংকাপন এলাকার আনসার মিয়ার ছেলে হোসাইন আহমদ ওরফে সোহান (১৯), রাজনগর উপজেলার মাথিউড়া চা বাগানের মনা নাইডুর ছেলে লক্ষণ নাইডু (২৩), নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার কাশিপুর পূর্বপাড়া এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রহিম (১৯)। এছাড়া পলাতক অন্য আসামীদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম.কে.এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হত্যাকা-ের বিষয়টিকে পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ইতোমধ্যে পুলিশ অফিসারদের নিরলস চেষ্টায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীদেরও গ্রেফতার করতে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই পলাতক আসামীদের নাম বলা যাচ্ছে না।
বিষয়: #আইনজীবী #উদঘাটন #পর #মুল #মৌলভীবাজার #রহস্য #সুজন #হত্যা
