

শুক্রবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » আল্লার দর্গায় দখল ও দূষনে হিসনা নদী দেখার কেউ নেই
আল্লার দর্গায় দখল ও দূষনে হিসনা নদী দেখার কেউ নেই
খন্দকার জালাল উদ্দীন :
কুষ্টিয়া দৌলতপুরে আল্লার দর্গায় দখল দূষন ও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত পরিস্কার পরিছন্ন হিসনা নদী চাই এলাকাবাসী। পদ্মা নদী থেকে উৎপন্ন দীর্ঘ্য প্রায় ৫০ কিঃমিঃ হিসনা নদীর দুই তীর এলাকার ভূমিদস্যুদের দখলে থাকায় প্রতিনিয়ত নদী সরু খালে পরিনত হতে যাচ্ছে, এমন চলতে থাকলে কিছুদিন পর হিসনা নদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। নদীটি দূষনের মূলকারণ এই নদী তীরে এলাকার বসবাসরত পরিবার গুলির পয়নিঃস্কাশন, মাদ্রাসা ও মসজিদের পয়নিঃস্কাশন, শিল্পপতিদের কারখানার বর্জ্য ও দূষিতপানি নিঃস্কাশন, বাজারের দূষিত পানির ড্রেনসহ বাজারের যাবতীয় ময়লাবর্জ্য ফেলার একমাত্র স্থান হিসণানদী। নদীটি ভাগাড়ে পরিনত হওয়ায় বায়ুদূষন চরমে উঠেছে। এক শিল্পপতি বর্জ্য ফেলার জন্য ও কিছু লোক মাছ চাষের জন্য হিসনা নদী নাম মাত্র মূল্যে লিজ নিয়ে সাধারন মানুষের ব্যবহার নিশিদ্ধ বলে জানাগেছে।
গ্রামের এক কবি মনের কষ্ঠে লিখে ছিলেন ”হিসনা ঐ নামে আর ডাকিস না, নীচে পানি উপরে পানা জীব জানোয়ার নামতে মানা।
এই নদীর তীরে অবস্থিত কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র নামে পরিচিত আল্লার দর্গা। এখানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বসবাস। আল্লার দর্গা বাজারের ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম একটি সেতু। এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় তিনটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত।
দৌলতপুর উপজেলায় হিসনা নদীর ওপর দিয়ে যতগুলো সেতু আছে, তার মধ্যে আল্লার দর্গা বাজারের সেতুর নিচের অবস্থা সবচেয়ে বেশি দূষিত। দৌলতপুরের বিভিন্ন এলাকার মায়লা ফেলা হয় সেতুর নিচে হিসনা নদীতে ফেলা হচ্ছে মুরগির দোকানের ময়লা ফেলা হয় গরুর হাটের ময়লা, পচা সবজি ও ফল দুর্গন্ধের তীব্রতায় সেতুর ওপর দিয়ে হাঁটা দায়। বাজারের একটি কমিটি থাকলেও তাদের ভ’মিকা প্রশ্নবিদ্ধ।
একদিকে ফেলা হচ্ছে পচা সবজি, পচা ফল, ময়লা-আবর্জনা; অন্যদিকে দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাজারের ময়লা ট্রাকে করে এনে ফেলা হয় সেতুর নিচে। সবমিলিয়ে সেতুর ওপর দাঁড়াতেই যেন দম বন্ধ হওয়ার জোগাড়। প্রয়োজন ছাড়া কেউই যেন আসতে চান না সেতুর আশপাশে। অথচ একসময় এ সেতুর ওপর ছাত্র ও যুবকেরা আসতেন বিসোদন-অবকাশ যাপনে!
সেতুর পাশে ব্যবসা করা আব্দুস সালাম বলেন, ‘এখানকার দোকানি ও ব্যবসায়ীরা অনেকেই নদীতে ময়লা ফেলেন। এটা ঠিক না। ফলে দুর্গন্ধে আমাদের কষ্ট হয়। তবুও মানুষ বুঝতে চায় না।’
সেতুর ওপর কথা হয় পথচারী আলমগীর হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শুনেছি সন্ধ্যার পর মানুষ চায়ের আড্ডা দেওয়ার জন্য ব্রিজের ওপরে আসতো। এখন আমরা প্রয়োজন ছাড়া এদিকে আসি না। দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে। কোনোমতে মাস্ক লাগিয়ে ব্রীজ পাড় হয়ে বাড়ি যাচ্ছি।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘দেখেন তো কা-! বাজারের মধ্যে ব্রিজের নিচে নদীটা এখন আস্ত একটা ভাগাড় হয়ে গেছে। দিনের পর দিন এত নোংরা আবর্জনা পড়ছে কিন্তু কারও কোনো হেলদোল নেই। প্রশাসন কি ঘুমিয়ে আছে? নাকি তারা চোখ বুজে সব দেখেও না দেখার ভান করছে?’
ব্যবসায়ী মাহামুদুল হাসান মাহি বিশ্বাস বলেন, ‘এটা তো অন্যায়! শুধু এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে না। আমরা শারীরিক ও মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে যাচ্ছি। মাস্ক ছাড়া ব্রিজ পার হওয়া কঠিন। দূরের নোংরা ময়লা এনে এখানে ফেলা হচ্ছে। এই নদীর ওপর কত মানুষের জীবন নির্ভর করে আছে। সেটা কি ওরা একবারও ভাবে না? যারা অন্য জায়গা থেকে এনে ময়লা ফেলছেন, তাদের তো আরও কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।’
নদীটি খনন করে দখল, দূষন ও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত পরিস্কার পরিছন্ন হিসনা নদী চাই সাধারণ মানুষ। বিষয়টি যথাযথ কর্র্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করছে এলাকাবাসী।
বিষয়: #আল্লার #কেউ #দখল #দর্গায় #দূষন #দেখার #নদী #নেই #হিসনা
