বুধবার ● ২৯ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ধারের টাকা চাওয়ায় ইমামের স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, গ্রেফতার ১
ধারের টাকা চাওয়ায় ইমামের স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, গ্রেফতার ১
নড়াইলের সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের ইমাম শফিকুল ইসলামের স্ত্রী ইতি বেগম (৪২) হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৮মে) রাতে নড়াইল জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার (২৭ মে) রাতে জিয়াউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত
জিয়াউর রহমান সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের মৃত নেছার বিশ্বাসের ছেলে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নড়াইল সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের ইমাম শফিকুল ইসলাম লোহাগড়া উপজেলার মোচড়া বায়তুল নূর জামে মসজিদে ইমামতি করেন। তার স্ত্রী ইতি বেগম বাড়িতে একা থাকতেন। শফিকুল ইসলাম ও ইতি দম্পত্তি নিঃসন্তান ছিলেন। ২১এপ্রিল সন্ধ্যায় ইমাম শফিকুল ইসলামের আত্মীয় জুয়েল বিশ্বাস শফিকুলের বাড়ির ভাড়াটিয়া মনিরুল ইসলামের ঘরে গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানায়। পরে জুয়েল প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে ভাড়াটিয়া মনিরুল ইসলামের ঘরের তালা ভাঙেন। এসময় ঘাটের নিচে বস্তা দিয়ে ঢাকা অবস্থায় শফিকুলের স্ত্রী ইতি বেগমের গলাকাটা লাশ ও পাশে একটি কাঁচি দেখতে পান। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
গত ২০ এপ্রিল রাত থেকে ইতি বেগমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে শফিকুল ইসলামকে ফোন করে জানায় তার ভাগ্নে ফেরদৌস মোল্যা। পরে তারা সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি।
এ ঘটনার ইমাম শফিকুল ইসলাম নড়াইল সদর থানায় তার বাড়ির ভাড়াটিয়া মনিরুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা ১/২ জনকে আসামি
করে হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে সোমবার (২৭ মে) রাতে অভিযান চালিয়ে হত্যার সাথে জড়িত অভিযোগে আসামি জিয়াউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত মনিরুল হত্যার ঘটনা স্বীকার করে জানান, ইতি বেগমের কাছ থেকে ৫ মাস পূর্বে ২০ হাজার টাকা এবং ৩ মাস পূর্বে ৩০ হাজার টাকা ইট কিনে দেওয়ার কথা বলে নেয়। কিন্তু মনিরুল ইট কিনে না দিয়ে তাকে ঘোরাতে থাকে। পরে ইতি বেগম জমি ক্রয়ের জন্য ব্যাংক থেকে ২ লাখ টাকা লোন করে যা আসামি মনিরুল ও জিয়াউর রহমান জানতে পারে। আসামিরা ইতি বেগমের ওই লোনের টাকা আত্মসাত করতে গোবরা বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে পরিকল্পনা করে। ওই সময় তারা স্পিড, চানাচুর, চকলেট, কেক ও ঘুমের ওষুধ ক্রয় করে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়। মনিরুল একটি স্পিডের বোতলে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে রাখে এবং রাতে জিয়াউর রহমানকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে তার ঘরে একত্রিত হয়। এর কিছুক্ষণ পর মনিরুল ভিকটিম ইতিকে ডেকে চানাচুর, চকলেট ও কেক খাওয়ানোর এক পর্যায়ে কৌশলে ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত স্পিড খাওয়ায়। কিছু সময় পরে ইতি বেগম অচেতন হয়ে পড়লে মনিরুল ও জিয়াউর রহমান তাকে ধর্ষণ করে।
রাতে জিয়াউর ইতির দুই পা চেপে ধরে রাখলে মনিরুল তার ঘরে থাকা ধারালো কাঁচি দিয়ে তার বুকের ওপর বসে গলা কেটে হত্যা করে। পরে ঘরের ভিতর থাকা কাঁথা, কম্বল ও কাপড় দিয়ে রক্ত মুছে রাখে। পরে জিয়াউর রহমান তার বাসায় চলে যায়। এবং ভোরে ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায় মনিরুল।
আসামি জিয়াউর রহমানকে মঙ্গলবার (২৮ মে) আদালতে প্রেরণ করা হলে তিনি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এছাড়া পালাতক আসামি ভাড়াটিয়া মনিরুলকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
বিষয়: #ইমাম