বৃহস্পতিবার ● ৪ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রবাসে » যুক্তরাজ্যে নির্বাচন আজ : লড়ছেন ৭ সিলেটি
যুক্তরাজ্যে নির্বাচন আজ : লড়ছেন ৭ সিলেটি
বজ্রকণ্ঠ নিউজ ডেস্ক:
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ (৪ জুলাই)। এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিলেটি বংশোদ্ভূত ৭ প্রার্থী। এরমধ্যে চারজনই সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের। ৭ প্রার্থীর মধ্যে নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রীও রয়েছেন। জগন্নাথপুর উপজেলায় জন্ম হওয়া চার বাংলাদেশি প্রার্থী হলেন, আফসানা বেগম, এহতেশামুল হক, নুরুল হক আলী ও রুফিয়া আশরাফ। সিলেটি বংশোদ্ভুত অন্য প্রার্থীরা হলেন, রুশনারা আলী, রুবিনা খান ও হালিমা খান।
লেবার পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন আফসানা বেগম। তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এহতেশামুল হক। তাঁরা প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রীও। আর লেবার পাটি থেকে নির্বাচনে লড়ছেন নুরুল হক আলী।
এদিকে লন্ডনের গর্ডন ও বুকান আসন থেকে লেবার পার্টি থেকে নুরুল হক আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি উপজেলার সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নের শাহারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কয়েকবার কাউন্সিলরও নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বাকিদের মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটের (লিব-ডেম) প্রার্থী রুবিনা খান, ওয়ার্কার্স পার্টির হালিমা খান ভোটের লড়াইয়ে আছেন।
জনমত জরিপ অনুযায়ী, এ নির্বাচনে বিরোধী দল লেবার পার্টির জয়ী হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। ইতোমধ্যে সব জনমত জরিপে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি থেকে ২০ পয়েন্ট এগিয়ে আছে বিরোধী দল। লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই নারীদের মধ্যে কেউ মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন।
বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার অন্তত ছয় মাস আগে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ৪ জুলাই একযোগে ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে ভোট হবে।
রুশনারা আলী
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা আলী। লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনে ২০১০ সাল থেকে তিনি টানা চারবার এমপি নির্বাচিত হন। ২০১০ থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রুশনারা। ২০১৩ সালের অক্টোবরে তিনি ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
সিলেটে জন্ম নেওয়া রুশনারা আলীর পরিবার তার সাত বছর বয়সে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। তিনি অক্সফোর্ডের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
আফসানা বেগম
পূর্ব লন্ডনের পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন আফসানা বেগম।
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন এমপি আফসানা বেগম।
লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকায় আফসানার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। বাংলাদেশে তাদের আদি বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে। তার বাবা মনির উদ্দিন টাওয়ার হ্যামলেটসের সিভিক মেয়র ছিলেন। তিনি ছিলেন জগন্নাথপুর পৌরসভার লুদুরপুর এলাকার বাসিন্দা।
আফসানা লেবার পার্টির লন্ডন রিজিয়ন শাখার সদস্য। দলটির টাওয়ার হ্যামলেটস শাখার সহসভাপতিরও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তিনি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের আবাসন বিভাগে কর্মরত।
রুফিয়া আশরাফ:
এই ব্রিটিশ বাংলাদেশি নারী নর্থাম্পটন টাউন কাউন্সিলের মেয়র ও কাউন্সিলর। তিনি প্রথম লেবার পার্টির মনোনয়নে সাউথ নর্থাম্পটন আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন। তার বাবার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলায়। তার স্বামী আবু তাহের মোহাম্মদ আশরাফ সিলেটের সাবেক মেয়র আ ফ ম কামালের ছোট ভাই।
রুবিনা খান
রুবিনা খান বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি আসন থেকে লিব–ডেম দলের হয়ে লড়ছেন। তিনি টাওয়ার হেমলেটসে ১২ বছরের কাউন্সিলর এবং আবাসন বিষয়ক কেবিনেট সদস্য ছিলেন।
রুবিনা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস ও গার্ডিয়ানে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন। এ ছাড়া পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউজ লর্ডসে কাউন্সিলর ও বিশেষ উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
রুবিনা খানের বাবা কেন্টের চাথাম ডকইয়ার্ডে মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তিনি বিয়ে করতে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সিলেটেই রুবিনার জন্ম হয়। তিন বছর বয়সে সপরিবারে ইংল্যান্ডে চলে যান তিনি। কেন্টের রচেস্টারে তিনি বড় হয়েছেন। তিনি লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেলে থাকেন।
হালিমা খান
হালিমা খান স্টার্টফোর্ড অ্যান্ড বো আসন থেকে ওয়ার্কার্স পার্টি জিবির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি লেবার পার্টির গভর্ন্যান্স অ্যান্ড লিগ্যাল ইউনিটের তদন্তকারী ছিলেন।
রাজনীতিতে প্রবেশের আগে তিনি শিক্ষকতা করতেন। পরে শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে নিউহ্যাম এবং টাওয়ার হ্যামলেটসের মানুষের জন্য কাজ শুরু করেন তিনি।
হালিমা খান মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের বিশিষ্ট সমাজ হিতৈষী ব্যক্তি মরহুম আব্দুল হামিদ খানের নাতিন, যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মো. জালাল আহমদ খানের বড় মেয়ে। তিনি রাজনগরের ৬ নম্বর টেংরা ইউনিয়নের টানা ৩ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ টিপু খানের ভাতিজি।
বিষয়: #নির্বাচন #যুক্তরাজ্যে #সিলেটি