শুক্রবার ● ৫ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » সাহিত্য ডাইরি » তুমিতে_তুমিময়
তুমিতে_তুমিময়
-আমার স্বামী এক হাজার টাকার একটা কড়কড়ে নোট আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো এটা রাখেন ।
আপনি আমাকে অনেক সুখ দিয়েছেন, এজন্য।
আমি বললাম একি বলছেন,
আপনি আমার স্বামী, শরীয়তসম্মত ভাবে বিয়ে করা বৈধ বউ আমি আপনার।
আপনার সুখ দুঃখ সবই দেখা দায়িত্ব আমার।
-দেখেন মিস শারমীন এতো বৈধ অবৈধ বলবেন না।
আগে যখন মেয়েদের সাথে শয্যাসঙ্গী হতাম তখন দুই তিনশ দিতাম কিন্তু আপনি আমার বউ তাই একটু বেশি দিলাম।
থাকেন আমি পাশের রুমে ঘুমাতে গেলাম।
-জীবনে কি খুব পাপ করে ফেলেছিলাম।
যে এরকম একজন জুটলো আমার কপালে?
আব্বা বলছিলো ছেলে অনেক ভালো, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে।
আর এই কিনা তার চরিত্র।
যে বিয়ের প্রথম রাতেই তার বিয়ে করা বউকে পতিতালয়ের মেয়েদের মতো ভাবে।
কত স্বপ্ন কত আশা ছিলো।
সবই যেনো এক নিমিষেই মিশে গেলো।
আমি কান্না করেই যাচ্ছি।
কান্না করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানি না।
ফজর আযান কখন হয়েছে বলতে পারবো না।
-হঠাৎ কেউ একজন বললো কি ব্যাপার নামাজ পড়বেন না?
বেশি সময় নেই, গোসল সেরে তাড়াতাড়ি নামাজ পড়ে নিন।
এই আপনার কফি আমি নামাজ পড়ে কফি বানিয়েছি।
আমার হাতের বানানো কফি খেলে আপনি কফির প্রেমে পড়ে যাবেন।
আচ্ছা আপনি নামাজ পড়েই কফি খান, আমি আবার তৈরি করে দিচ্ছি।
-যিনি এতো সুন্দর করে কথাগুলো বললেন তিনি আমার স্বামী হাসিব।
এতো মিষ্টি মিষ্টি কথা বলার পরেও কেন জানি পৃথিবীর নিকৃষ্ট মানুষ মনে হচ্ছে তাকে।
ইচ্ছে না থাকা সত্বেও উঠে গোসল করে নামাজ পড়ে বারান্দায় দাড়িয়ে আছি।
-এই যে মিস শারমিন, আপনি হয়তো জানেন আমার মা-বাবা নেই, এতিম খানায় বড় হয়েছি দূর সম্পর্কের কয়েকজন চাচাচাচি-আর হাতে গুনা কয়েকজন মামামামী ছাড়া এই ধরনীতে আমার তেমন কেউ নেই বললেই চলে।
তাই বিয়ের দ্বিতীয় দিন আপনাকে কেউ কিছু করে দিবে না।
তাই আমি নিজেই আপনার প্রিয় খাবার গরুর মাংসের ঝুল আর রুটি বানিয়েছি।
-লোকটা রুটিও বানাতে পারে।
অবাক করা বিষয়।
আমার প্রিয় খাবার গরুর মাংসের ঝুল আর রুটি কেমনে জানলো?
জিজ্ঞেস করতে মন চাচ্ছে, কিন্তু কথাই বলতে ইচ্ছে করছে না।
-আবার পেছন থেকে বলে উঠলো , জানি আপনার অনেক মন খারাপ, বাড়িতে অনেককে ছেড়ে আসছেন তাই হয়তো।
পেটে খুদা রেখে মন খারাপ থাকলে শরীর আরো খারাপ করবে।
আসেন তো।
বলেই হাসিব হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে খাবার টেবিল এর দিকে।
আচ্ছা শুনেন আমি আপনাকে খাইয়ে দেই।
আপনি ভালো মেয়ের মতো চুপচাপ বসেন।
ভাবনায় অনেক কিছু আসছে।
এই মানুষটাই কি সেই মানুষটা যে রাতে আমাকে পতিতালয়ের মেয়েদের মতো ব্যবহার করছে৷
মানুষ কত রুপ, কত রং।
পেটে খুদা তাই দিচ্ছে আর গপাগপ গিলছি।
তাকে বারণ করতেও ইচ্ছে করছে না।
মানুষটার মন ভালো, ভালো মনের মানুষ।
মনে হচ্ছে ভালোবাসা দিয়ে তাকে নোংরা কাজগুলো থেকে বারণ করা যাবে।
-খালি আমাকে খাইয়ে দিবেন ?
নিজে খাবেন না ?
-খাবো কিভাবে ?
আমাকে তো কেউ খাইয়ে দিচ্ছে না।
-আমার লজ্জা করে।
কিছুদিন যাক তারপর খাইয়ে দিবো।
আর একটা কথা কোন আপনি চলবে না।
শুধু তুমি।
তুমি তে তুমিময়।
দুজনেই ফিক করে হেসে দিলাম।
লিখায়: মি. ফুয়াদ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
বিষয়: #তুমি #তুমিময়