বৃহস্পতিবার ● ১১ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » লাইফস্টাইল » গলায় ভাঁজের কারণ ও প্রতিকার
গলায় ভাঁজের কারণ ও প্রতিকার
বজ্রকণ্ঠ নিউজ ডেস্ক:
মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহারে মুখ ঘাড় নিচু করে কাজ করলেও গলার ত্বকে দাগ হতে পারে। তবে বয়সের সাথে ত্বকে বলিরেখা পড়া স্বাভাবিক ঘটনা। এই কারণেও গলাতে হয় সমান্তরাল ভাঁজ। এই অবস্থা সম্পূর্ণভাবে দূর করা না গেলেও প্রক্রিয়া ধীর করা যায়।
“গলার সামনের দিকে ও দুই পাশে সমান্তরাল দাগ পড়াই হল ‘নেক রিঙ্কেলস’ বা গলার বলিরেখা। কোলাজেন উৎপাদন ও কোষকলার স্থিতিস্থাপকতা কমা এবং বয়সের সাথে পেশির সংকোচনের কারণে এরকম হয়, যা খুবই স্বাভাবিক বিষয়”।
যে কারণে হয়
বয়সের সাথে চামড়ায় ভাঁজ পড়া খুবই সাধারণ ঘটনা। কোলাজেন উৎপাদন ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে। এই প্রোটিনের উৎপাদন বয়স বৃদ্ধির সাথে কমতে থাকে বলে বলিরেখার সৃষ্টি হয়।
নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘শেইগার ডার্মাটোলজি গ্রুপ’য়ের ত্বক-বিশেষজ্ঞ ডা. নাভা গ্রিনফিল্ড বলেন, “এছাড়াও আমরা সাধারণত মুখের যত্ন নেই। গলার দিকে নজর দেওয়া হয় না। ফলে সূর্যের আলোর প্রভাবসহ পরিচর্যার অভাবে গলায় ভাঁজ পড়তে শুরু করে।”
এই কারণে মুখের পাশাপাশি গলাতেও ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন মাখার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
আর বর্তমান সময়ে গলায় ভাঁজ পড়ার আরেকটি কারণ হল প্রযুক্তির ব্যবহার, যাকে বলা হচ্ছে ‘টেক নেক’
এই বিষয়ে একই প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক’য়ের আরেক ত্বক বিশেষজ্ঞ আরাশ আখাভান বলেন, “মোবাইল বা ল্যাপটপ ঘন ঘন ব্যবহার করার সময় ঘাড় নিচু করে দেখার ফলে গলায় বলিরেখা পড়ে। আর সময়ের সাথে এর পরিমাণ বাড়তে থাকে।”
প্রতিরোধের উপায়
এখনও যাদের গলায় ভাঁজ পড়েনি বা অল্প হয়েছে তারা কিছু পন্থা অবলম্বন করে প্রক্রিয়া ধীর করতে পারেন।
ডা. আখাভান বলেন, “প্রথমত ত্বক পরিচর্যার মাত্রা গলা পর্যন্ত নিতে হবে। ক্লিঞ্জার, সেরাম, এক্সফিলিয়েশন, ময়েশ্চারাইজার- এসবই মুখের সাথে গলাতেও ব্যবহার করা প্রয়োজন। বিশেষ করে সানস্কিন।”
এছাড়া মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে চোখের সমান্তারালে রাখতে হবে। গলা ঘাড় নিচু করে কাজ করা যাবে না।
যদিও বলিরেখা পড়া প্রাকৃতিকভাবে স্বাভাবিক ঘটনা তারপরও কিছু উপায়ে গলার ভাঁজের দৃশ্যমান মাত্রা কমানো যায়।
মনে রাখতে হবে গলার ত্বক মুখের মতোই তবে একটু পাতলা। যে কারণে ভালোভাবে ত্বকের যত্ন নিলে সমস্যা অনেকটাই দূর করা যায়।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: বৈরী পরিবেশ, যেমন- সূর্যের আলোর অতিবেগুনি রশ্মি ও দূষণ থেকে ত্বক রক্ষায় এই উপাদান কাজ করে। ভিটামিন সি- পরিচিত একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। বাজারে নানান ধরনের ভিটামিন সি যুক্ত সেরাম পাওয়া যায়, যেগুলো মুখের পাশাপাশি গলায় ব্যবহার করলে ভাঁজ দূর করতে সহায়তা করবে।
রেটিনয়েডস: ডা. আখাভান বলেন, “অ্যান্টি-এইজিং’ পণ্য হিসেবে রেটিনয়েডস খুবই কার্যকর। এটা শুধু মুখে না শরীরেও ব্যবহার করা যায়। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে এই উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন প্রসাধনীতেও রেটিনয়েডস থাকে, যা ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়।”
তবে এই চিকিৎসক সাবধান করে দেন যে, সংবেদনশীল ত্বকে রেটিনয়েডস শুষ্কতা ও অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। তাই রাতের ত্বক পরিচর্যায় অল্প মাত্রায় এই পণ্য ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।
অন্যান্য চিকিৎসা: ‘এলইডি রেড লাইট’, ‘কসমেটিক ইঞ্জেকশন’ ও ‘লেজার ট্রিটমেন্ট’য়ের মাধ্যমেও গলার ভাঁজ দূর করা সম্ভব। তবে এসবের জন্য ত্বক বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।
একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, কোনো প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে গলার বলিরেখা দূর করা যায় না। তাই রান্নাঘরের উপকরণ গলায় ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দেন এই চিকিৎসকরা।
বিষয়: #কারণ #গলা #প্রতিকার #ভাঁজ