শনিবার ● ৩ আগস্ট ২০২৪
প্রথম পাতা » রংপুর » আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় ২ পুলিশ বরখাস্ত
আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় ২ পুলিশ বরখাস্ত
দেশব্যাপী কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও পুলিশ কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে সাসপেন্ড করে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
৩ আগস্ট, শনিবার রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে গুলি করার হুকুমদাতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত মেট্রোপলিটান পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফ হোসেন ও ইমরানকে এখনও সাসপেন্ড বা তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বেরোবির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয় একজন সহকারী কমিশনারকে তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, যারা অতি উৎসাহী হয়ে গুলি করে আবু সাঈদকে হত্যা করেছে তাদের দুজনকে সাসপেন্ড করলেই সব দায়িত্ব শেষ হয় না। যিনি বা যারা গুলি করার হুকুম দিয়েছেন তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।
এর আগে, সাঈদের মৃত্যু বিক্ষোভকারীদের ছোড়া গুলি ও ইট-পাটকেলের আঘাতে হয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ। মামলার এজাহারে এ তথ্য দেয় তারা। তবে এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তাতে কোনো পুলিশ সদস্যের দায় পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর এজন্য ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে বলছে তারা।
এদিকে আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাসপেন্ড করার খবর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
শিক্ষার্থী মুনতাসীর, তাসনুভা অভিযোগ করেন, আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে ভিডিও ফুটেজ দেখেছি সেখানে আবু সাঈদকে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে। সেখানে সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফ হোসেন নিজেই পুলিশের কাছ থেকে বন্দুক নিয়ে দুই দফা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছেন। এ ভিডিও সারা বিশ্বের ১০০ কোটি মানুষ দেখেছে, তারপরেও কেন সহকারী পুলিশ কমিশনার এখনও চাকরিতে বহাল তবিয়তে থাকেন? তাকে এখনই সাসপেন্ড করলে চলবে না তাকে গ্রেফতার করতে হবে। কারণ, তিনি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুই পুলিশ সদস্যকে সাসপেন্ড করে তাদের পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি কাজ করছে। পুরো বিষয়টি জানার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ ও ছাত্রলীগ। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন সাঈদ। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আবু সাঈদ (২৫) রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছোট ছেলে।
বিষয়: #আবু #ঘটনা #নিহত #পুলিশ #বরখাস্ত #সাঈদ