শুক্রবার ● ৩১ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » রাজশাহী » পুনঃনির্বাচনের দাবি পরাজিত ৪ প্রার্থীর
পুনঃনির্বাচনের দাবি পরাজিত ৪ প্রার্থীর
২৯ মে অনুষ্ঠিত গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন পরাজিত ৪ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা।
৩১ মে, শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার কাছিকাটায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে ঘণ্টাব্যাপি ওই কর্মসূচি পালন করা হয়।
এতে নেতৃত্ব দেন চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন।
এসময় পরাজিত দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রোকসানা আক্তার লিপি এবং হুমায়ন কবির প্রিন্স উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে একই দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন পরাজিত দুই চেয়ারম্যান ও তিন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী।
এদিকে নির্বাচনের ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কারচুপিসহ নানা অভিযোগ এনে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করেন পরাজিত প্রার্থীদের দুই কর্মী। গতকাল শুক্রবার দুটি পৃথক অভিযানে ইকবাল তালুকদার ও নাদিম পারভেজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বুধবার শান্তিপূর্ণভাবে গুরুদাসপুর উপজেলার ৭২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়। প্রাথমিক ফলাফলে চেয়ারম্যান পদে আহম্মদ আলী, ভাইস চেয়ারম্যান পদে শরিফুল ইসলাম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাহিদা আক্তার মিতা এগিয়ে থাকার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নেতাকর্মীরা উপজেলা চত্বরে স্লোগান দিতে থাকেন। রাত আটটার দিকে চূড়ান্ত ফল ঘোষণার সময় পরাজিত প্রার্থীরা লোকজন নিয়ে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ফলাফলের তালিকা উন্মুক্তের দাবি তোলেন। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা তা না মানলে চেয়ারম্যান প্রার্থী এমদাদুল হক মোহাম্মদ ও আতিয়ার রহমান বাঁধনের সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলীর ছেলে রাসেদ ও অপর প্রার্থী আতিয়ার রহমান বাঁধন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্যে করে রাগান্বিত ভাবে কথা বলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজিবি কয়েক দফা লাঠি চার্জ করে। সব মিলিয়ে টানা আড়াই ঘন্টা উৎতপ্ত অবস্থার পর রাত প্রায় সাড়ে ১০টার দিকে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আহম্মদ আলীকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তার হিসেব মতে, আহম্মেদ আলী মোল্লা ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ২০ হাজার ৩৫৯ পেয়ে ৪৫৬ ভোটে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রার্থী আতিয়ার রহমান বাঁধন আনারস প্রতীকে ১৯ হাজার ৯০৩ এবং এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী মোটরসাইকেল প্রতীকে ১৯ হাজার ৭৫৯ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।
পরাজিত প্রার্থী সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন বলেন, নির্বাচনে পেশিশক্তি ব্যবহার এবং অথনৈতিক লেনদেন করা হয়েছে। এ কারণে আহম্মদ আলী মোল্লাকে ঘোষণার মাধ্যমে বিজয়ী করেছেন রির্টানিং কর্মকর্তা। তারা এই নির্বাচনের ফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানান।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী প্রার্থী আহম্মদ আলী মোল্লা বলেন, মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাকে ভোট দিয়েছেন বলেই তিনি নির্বাচিত হতে পেরেছেন। ফল ঘোষণা বা ভোট গ্রহন এবং গণনায় কোনো অনিয়ম হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ায় নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন বলেন, শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠানের পর পরাজিত প্রার্থীর কিছু অতিউৎসাহি কর্মী-সমর্থকরা উস্কানিমূলক পোস্ট করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিষয়: #পুনঃনির্বাচন