শনিবার ● ১ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » বিশেষ » তদন্তে গতি আনতে ভারতের ‘বিশেষ টিম’, নেপালেও যাচ্ছেন তারা
তদন্তে গতি আনতে ভারতের ‘বিশেষ টিম’, নেপালেও যাচ্ছেন তারা
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ড খতিয়ে দেখতে ‘বিশেষ তদন্ত দল’ গঠন করেছে ভারতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এই তদন্ত দলের নাম দেয়া হয়েছে ‘এসআইটি’ (স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম)। এটি একজন আইজির নেতৃত্বে তিনজন ডিআইজি এবং বিভিন্ন পর্যায়ের ১০-১২ জন কর্মকর্তা নিয়ে গঠিত হয়েছে। এ ব্যাপারে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দলটি আনার হত্যার বিস্তারিত তদন্ত করবে।
এদিকে, তদন্ত দলটি দ্রুততার সঙ্গে প্রযুক্তিগত তথ্যপ্রমাণ ও ফরেনসিক রিপোর্ট সংগ্রহের কাজটি নিশ্চিত করবে। এ হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত আখতারুজ্জামান শাহীনকে ধরতে ঢাকার পুলিশ ও ইন্টারপোলের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে এমপি আনার খুন হন। পরে ঢাকা থেকে দিল্লি হয়ে কাঠমান্ডু, সেখান থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান শাহীন। অন্যদিকে, খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, নেপালে শাহীনের সহযোগী সিয়াম হোসেন পালিয়ে আছেন। তা তদন্তের জন্য সিআইডির বিশেষ দলটি শিগগির নেপালেও যাবে।
আজ শনিবার তদন্তের অংশ হিসেবে নেপালের কাঠমান্ডু গেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল। আজ সকালেই ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের দলটি ঢাকা ছেড়ে যায়।
কাঠমাণ্ডু যাওয়ার আগে হারুন বলেন, ঝিনাইদহের মাননীয় সংসদ সদস্য- ওনার হত্যাকাণ্ডের কয়েকজন আসামি কাঠমান্ডুতে গিয়ে কেউ চলে গেছে, কেউ থাকতে পারে। সেই বিশ্বাসে আমরা সেখানে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ইন্টারপোলকেও আমরা চিঠি দিয়েছি। ইন্টারপোলের মাধ্যমে আমরা কাঠমান্ডু পুলিশকে জানিয়েছি, এখানে সিয়ামসহ বেশ কয়েকজন আসামি, তারা কেউ চলে গেছে, কেউ আছে।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, সিআইডির একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। দলটি এরই মধ্যে নেপাল সীমান্তে পৌঁছে গেছে। তারা সিয়ামকে ধরার বা হাতে পাওয়ার চেষ্টা করছে। তদন্তকারীদের একটি অংশের দাবি, বাংলাদেশ পুলিশও সিয়ামকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে।
সংসদ সদস্য আনার হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বাংলাদেশে তিনজন ও কলকাতায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কলকাতার সিআইডি ঢাকায় এসে ও ঢাকার ডিবি কলকাতায় গিয়ে সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এর মধ্যে, বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনকে প্রথম দফায় রিমান্ড শেষে শুক্রবার আরও ৫ দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পায় ডিবি।
ভারত ও বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আনারকে খুনের বিষয়টি নির্দিষ্ট করে জানালেও তার মরদেহের হদিস দিতে পারছিলেন না। তদন্তের অংশ হিসেবে কলকাতায় গিয়ে সঞ্জিভা গার্ডেনসের সেপটিক ট্যাংকে কয়েক কেজি মাংসের টুকরা উদ্ধারের কথা জানায় হারুনের নেতৃত্বাধীন ডিবির প্রতিনিধি দল। সেগুলোর সঙ্গে আনারের স্বজনদের ডিএনএ পরীক্ষার বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, আনার ও শিলাস্তির মধ্যকার পুরো কথাবার্তা হাতে পেয়েছে কলকাতা সিআইডি। তাদের ধারণা, হত্যার পর আনারের ফোন থেকে যে ব্যক্তি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ চালাচালি করেছিলেন, তিনিই সিয়াম হোসেন।
খবরে আরও বলা হয়েছে, সিআইডির কাছে তথ্য রয়েছে, চলতি বছরের প্রথম দিকে শাহীনের সহযোগী হিসেবে আরেক নারী কলকাতায় এসেছিলেন। সেই নারীকে খুঁজে বের করতে ঢাকার পুলিশকে অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিআইডি। শিলাস্তির সঙ্গে ওই নারী মেসেজ আদান-প্রদান করেছে এমন তথ্য তাদের কাছে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ মে আনোয়ারুল আজীম আনার চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর স্থানীয় থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। ২২ মে সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, নিউ টাউনের এক বাড়িতে খুন হয়েছেন এমপি আনার।
বিষয়: #গতি #টিম #তদন্ত #নেপাল #বিশেষ #ভারতে