বৃহস্পতিবার ● ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » অপরাধ » ” তবুও থামছেনা চোরাচালান অবৈধপথে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকার দেশীয় ইলিশ ও শিং মাছ!”
” তবুও থামছেনা চোরাচালান অবৈধপথে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকার দেশীয় ইলিশ ও শিং মাছ!”
” তবুও থামছেনা চোরাচালান অবৈধপথে
যাচ্ছে কোটি কোটি টাকার দেশীয় ইলিশ ও শিং মাছ!”
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বেশ কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে প্রতি রাতের আধারে ভারতে পাচার হচ্ছে কোটি কোটি টাকার দেশীয় ইলিশ ও শিং মাছ। ট্রাকের ড্রামে ভর্তি করে নিয়মিত মাছ পাচার করা হলেও স্থানীয় প্রশাসন রয়েছেন নীরব। আর দেশীয় ইলিশ ও শিং মাছ চোরাই পথে ভারতে পাচার হওয়ায় স্থানীয় বাজারগুলোতে দেখা দিয়েছে মাছের চরম সংকট। পাশাপাশি সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবির পক্ষ থেকে অভিযানের কথা বলা হলেও বাস্তবে চিত্র ভিন্ন। তবে মাছ পাচারের ঘটনায় থানা ওসি বদরুল আলমের নেতৃত্বে আইন-মন্ত্রীর লোক পরিচয় দিয়ে সুনামগঞ্জে আলফা ৩ রাজন কুমার দাশ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সীমান্ত এলাকায় কোটি কোটি টাকা চোরাচালান ব্যবসা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এ চোরাচালান ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করতো আওয়ামীলীগের নেতাকমীরা। সরকার পতনের পর আইন মন্ত্রী গ্রেপ্তার হলে ও দোয়ারাবাজার থানার ওসি রদরুল আলম এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। তবে এখনো তার চোরাচালান বন্ধ হচ্ছে না। প্রতি মাসে আয় হচ্চে ২০লাখ টাকা বেশী। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মদদেই ভারতে নিয়মিত পাচার হয়ে যাচ্ছেন এসব দেশীয় মাছ। জানাযায়, ছাতকে সড়ক ব্যবহার করে সুরমা নদীর সেতু পাড়ি দিয়ে দোয়ারাবাজার সীমান্তে প্রতিদিন কম-পক্ষে ৬০-৭০টি সাদা পিকআপ যোগে ড্রামের মাধ্যমে শিং ও ইলিশ মাছ অবৈধ ভাবে ভারতে পাচার করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলার খাল-বিল ও চাষ করা এসব মাছের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। ভারতের স্থানীয় বাজারেও বাংলাদেশী শিং মাছের রয়েছে চাহিদা। এসব দেশীয় মাছ ভারতে বিক্রি করে দামও ভালো পাওয়ায় পাচারের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। ভারতে পাচার হওয়ার কারণে স্থানীয় বাজাওে ইলিশ, শিং মাছের সঙ্কট দেখা দেয়। এলাকার বিক্রিতাদের অধিক মুনাফা লাভের প্রলোভন দেখিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে স্থানীয় সীমান্তবর্তী চোরাকারবারি একটি চক্র। ফলে উপজেলার গ্রামের স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে এসব মাছ পাওয়া গেলেও দাম চড়াও। দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা ইব্রাহিম, রুস্তুম আলী, আনোয়ার হোসেন, জিহান মিয়াসহ বেশ কয়েকজনের একটি বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে ওরা কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিং এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শিং মাছ ক্রয় করে প্রতি পিকআপে হাজার কেজি ইলিশ, শিং মাছ ড্রামে ভর্তি করে সিলেট থেকে গোবিন্দগঞ্জ হয়ে ছাতকে সুরমা সেতু পাড়ি দিয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজারের কয়েকটি গলিতে নিয়ে শিং ইলিশ মাছ হাউজে জমা রাখা হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতি রাত ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সাদা পিকআপ ভ্যানের ভেতরে বড় ড্রামে করে শিং বোঝাই করে বাংলাবাজারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয় শিং মাছ। পিকআপের একাধিক চালকরা বলেন, প্রতি পিকআপে এক হাজার থেকে ১১শ’ কেজি শিং মাছ বাংলাবাজারের আড়তে মজুত করা হয়। এরপর মাছগুলো এখান থেকে অবৈধ পথে পাচার করা হচ্ছে ভারতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিনই বিকেলে ও সন্ধ্যার পর সুবিদাজনক সময়ে বাংলাবাজার থেকে দেশীয় শিং মাছ পৌছানো হয় সীমান্তের বিভিন্ন জিরো পয়েট। মাছ পাচারের কাজে সীমান্তের কাঠা তারের বেড়া সংলগ্ন এপার-ওপার দুই পারের শ্রমিকরা এসব মাছ পাচার কাজে সংযোগিতা করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লোকজন জানান, একটি পিকআপ ভর্তি মাছ ভারতে পাচারে কিছু সোর্সকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। এরপরও প্রতি পিকআপ ভর্তি মাছে ১৫/২০ হাজার টাকা মুনাফা হয়। স্থানীয় গ্রাম্য বাজারের হাটে শিং মাছের পাইকারি দর প্রতি কেজি দেড়শ’ থেকে দুইশ’ টাকা। আর ভারতে পাচারের পর প্রতি কেজি শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে আড়াই শত থেকে তিনশত রুপিতে। মাছ পাচারে সব খরচের পরও বেশ ভালো টাকা লাভ করা যায় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনসহ সকল রাস্তা ম্যানেজ করেই এসব মাছ ভারতে পাচার করা হচ্ছে। তবে যারা ভারতে মাছ পাচার করছেন, এবিষয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও মাছ পাচারের বিষয়টি তারা সকলেই অস্বীকার করেন। দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুল হাসান বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন পিকআপ যোগে শিং মাছ ভারতে পাচারের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (ছাতক সার্কেল) রণজয় চন্দ্র মল্লিক বলেন, সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে থানা পুলিশ সব-সময় তৎপর রয়েছে। সীমান্ত দিয়ে ভারতে দেশীয় মাছ পাচারের বিষয়ে খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আ: হো: র:
বিষয়: #অবৈধপথ #ইলিশ #কোটি #চোরাচালান #টাকা #দেশীয় #মাছ #শিং