শনিবার ● ১৯ অক্টোবর ২০২৪
প্রথম পাতা » ইতিহাস ও ঐতিহ্য » মেয়েদের হাতে তৈরী মুর্তা বেতের আদি
মেয়েদের হাতে তৈরী মুর্তা বেতের আদি
মিজানুর রহমান মিজান ::
অতীতে আমাদের দেশের অধিক সংখ্যক যুবতি শিক্ষিত/অশিক্ষিত মেয়েরা তৈরী করতেন নামাজ পড়া,বসে ভাত খাওয়া,গল্প-স্বল্প,আলাপ আলোচনা,ছাত্রছাত্রীরা বসে করতেন লেখাপড়া ইত্যাদিতে ব্যবহার করতেন অধিক পরিমাণে তৈরীকৃত এ সকল উপকরণ।আবার মুর্তার বেত দ্বারা তৈরী করতেন নানান রকমের দ্রব্যাদি।যেমন আদি,চাটি(চাটাই)ইত্যাদি।অনেকে এ সকল দ্রব্য তৈরীর মাধ্যমে আয়-রোজগার করে পরিবার পরিজন প্রতিপালন করতেন।অর্থ্যাৎ আয়-রোজগারের একটি উৎস হিসাবে হত পরিগণিত।আমার এলাকার বাজারে প্রতি হাঠবারে পৃথক একটি স্থান নির্ধারিত ছিল,যেখানে প্রচুর আদি-চাটাই ক্রয়বিক্রয় হতো নিয়মিত।এ সকল ক্রয়বিক্রয় হতো প্রচুর পরিমাণে এবং শুধু আদি চাটাইয়ের পৃথক একটি বেশ বড় গলি ছিল।এ সকল দ্রব্যাদি সিলেট শহরে এবং রসুলগঞ্জ নামক বাজারে নিয়ে ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতেন।অনেক মেয়েরা শখের বসে সৌখিন উপকরণ হিসাবে তৈরী করতেন, রাখতেন গৃহে সাজিয়ে।অতিথি বা আত্মীয়-স্বজন কারুকার্যময় উপকরণ দর্শনে হতেন অভিভুত।তৈরীর সময় ঐ বেতদ্বারাই আঁকতেন সুনিপুন শিল্পীর ছোঁয়ায় বাংলাদেশের মানচিত্র,পশু-পাখি,জীবজন্তু,বিভিন্ন প্রকারের নকশা সমৃদ্ধ নিখুত,অতি সুন্দর ও সুন্দর্যময় দ্রব্য।গ্রামের মেয়েরা একেকজন সুদক্ষ কারিগর নকশা সম্বলিত আদি-চাটাই বুনতেন কত না মাধুর্য মিশ্রিত মন-মননশীলতায়।ছিলেন একেকজন বুনন প্রক্রিয়ার আকর্ষিক কারিগর।সে সময় প্রত্যেক পরিবারে দেখা যেত এ সকল দ্রব্যাদি।মানুষ কাজকে ভালবাসত অন্তর থেকে লালিত স্বপ্ন নিয়ে।কোন কোন কাজ দেখে মানুষ প্রেমে(পিরিতি নয়,কাজের দক্ষতার হার্দিক প্রেমে) পড়ে যেত।ঐ মেয়ের বিয়ে-শাদি হত ত্বরান্বিত।আজ মুর্তা যেমন গিয়েছে হারিয়ে,বুনন কাজ ও চলে গেছে পর্দার আড়ালে।কোথাও গেলে ঘরের দেয়ালে দেখা যায় না লটকানো আদি-চাটাই।আজ হয়েছে সবকিছুই যান্ত্রিক।বেশ কিছুদিন ঘুরে ঘুরে আমি এ চিত্রটি পেয়ে আনন্দে আপ্লুত হয়ে সংগ্রহ করি।পাঠককে উপহার দিতে পেরে আমার বেশ ভালই লাগছে।
বিষয়: #আদি #তৈরী #বেতের #মুর্তা #মেয়েদের #হাতে