বুধবার ● ২০ নভেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ১দিনের জিজ্ঞাসাবাদ জেলগেটে রেখাছ মিয়া…
১দিনের জিজ্ঞাসাবাদ জেলগেটে রেখাছ মিয়া…
” হবিগঞ্জের বানিয়াচং ৪ নং ইউপি’র চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন নাইন মার্ডার মামলায় গ্রেফতার।।কারাগারে রেখে চাওয়া হবে রিমান্ড”
আকিকুর রহমান রুমন:-
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বৈষম্য বিরোধী এক দফা ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগষ্টের ঘটনায় পুলিশ ও আন্দোলনকারীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে পুলিশের গুলিতে ৮ জন এবং আন্দোলনকারীদের হাতে এক সাংবাদিক ও এক পুলিশ সদস্য সহ ১০ জনের প্রানহানীর ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন শতাধিক এর উপরে।
এদিকে এই ঘটনার ১৬ দিন পর পুলিশের গুলিতে নিহত শিশু হাসান এর পিতা ছানু মিয়া অন্যান্য নিহত ৮ জনের দায়িত্ব নিয়ে ৯টি হত্যা কান্ডের সত্য ঘটনার বিষয়টি আড়াল করে ২২ আগষ্ট আওয়ামীলীগের সাবেক দু’এমপিকে হুকুম দায়ী আসামী করে ১৬০জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৩০০ জনসহ ৪৬০ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে দেখা যায়,সাবেক দুই উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান এবং আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দগন এসব হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন।
নিহত ৮ জনকে গুলি করে তারা ৩৬জন হত্যা করেন।
এছাড়াও সাংবাদিক সোহেল আখঞ্জিকে হত্যা করেন ১২জন মিলে।
এমনকি এই মামলার ৬জন সাক্ষীকে গুলি করে আহত করেন ৬জন।
আন্দোলনে এতোসব হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থলকে ককটেল ও প্রেট্রল বোমা মেরে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেন বড়বাজার ব্যবসায়ী কল্যান সমিতির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব জয়নাল আবেদিন ও তার এক সহযোগী মিলে ২জন।
তাদের এমন হাস্যকর সত্য ঘটনার মিথ্যা মামলাটি জানাজানি হয়ে পড়লে এক রসালো আলোচনার জন্ম নেয়।
আর গত ৫ আগষ্টের ঘটনার পূর্বের দিন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে কেউ কেউ আত্নগোপনে চলে যান।
এমনকি আন্দোলনে সরকার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সাথে সাথে নেতাকর্মীগন গা-ঢাকা দেন।
এর মধ্যে এমন মামলার আসামী হওয়াতে অনেকেই গ্রেফতার এড়াতে যার যার মতো করে আত্নগোপনে গিয়ে অবস্থান নেন।
আর এদিকে গত ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে র্যাব এর অভিযানের মাধ্যমে শুরু হয় ৯ মার্ডার মামলার পলাতক থাকা আসামীদেরক গ্রেফতার।
প্রথম ঢাকা উত্তরায় র্যাব-১ এর অভিযানে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আহাদ মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব এর চলমান ২য় অভিযানে ১৭ অক্টোবর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান মিয়াকে ঢাকা র্যাব-১ উত্তরা থেকে গ্রেফতার করেন।
এভাবেই একে একে শুরু হয় মামলার পলাতক থাকা আসামীদেরকে গ্রেফতার অভিযান।
অন্যদিকে এই মামলার আইও এসআই জাহাঙ্গীর আলম বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)কবির
হুসেনের নির্দেশে হবিগঞ্জ সদর থানার একটি মামলায় পুকড়ার যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতারকৃত অবস্থায় বানিয়াচংয়ের ৯ মার্ডার মামলার আসামী হওয়ায় শোন এরেস্ট করে তাকেও এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে জানান আইও।
যদিও গ্রেফতারকৃত ৩ জনের মধ্যে আহাদ চেয়ারম্যান ও শাহজাহান মিয়াকে আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করলে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার আইও।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৮ অক্টোবর গোপন সংবাদের মাধ্যমে এই মামলার আসামীদের অবস্থান জানতে ওসি কবির হুসেন এর নির্দেশে মামলার আইও এসআই জাহাঙ্গীর আলম এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ গ্যানিংগঞ্জ বাজার
(নতুন বাজার)
এলাকা থেকে এক গণমাধ্যমকর্মী দৈনিক সমকাল পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার সাবেক বার্তা সম্পাদক রায়হান উদ্দিন সুমনকে গ্রেফতার করা হয়।
পরদিন ১৯ অক্টোবর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার আইও এসআই জাহাঙ্গীর আলম এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ
(নতুন বাজার)এলাকা থেকে আওয়ামীলীগ নেতা আরজু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর সকল আসামীদেরকে নিয়ম অনুযায়ী আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হয়।
অন্যদিকে আসামী গ্রেফতারের চলমান অভিযানে গত ৯ নভেম্বর উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও ৪ নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রেখাছ মিয়াকে দুপুর আনুমানিক আড়াইটার দিকে যাত্রাপাশা থেকে এসআই জাহাঙ্গীর আলম এর নেতৃত্বে গ্রেফতার করা হয়।
পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করেন।
এবং রেখাছ মিয়াকে রিমান্ডে আনার জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে একটি আবেদন করেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন মামলার আইও এসআই জাহাঙ্গীর আলম।
এই ৯ মার্ডারের চলমান আসামী গ্রেফতারের অভিযানের ধারাবাহিকতায় ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আনাস হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ২৪নং আসামী ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের নেতা বাসিয়া পাড়ার বাসিন্দা মৃত আবুল কালাম চেয়ারম্যান এর পুত্র আনোয়ার হোসেনকে রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে তার বাড়ি থেকে এসআই জাহাঙ্গীর আলম এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন অফিসার ইনচার্জ(ওসি)কবির হুসেন।
এব্যাপারে মামলার আইও এসআই জাহাঙ্গীর আলম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,আগামীকাল ২০ নভেম্বর
(বুধবার)
হবিগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হবে।
এছাড়াও রিমান্ডে আনার জন্য আদালতে আবেদন করবেন বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে রেখাছ মিয়ার রিমান্ড মঞ্জুর এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,আদালত রেখাছ মিয়াকে ১দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার আদেশ দিয়েছেন।
তাই সময় সাপেক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান।
অপরদিকে আনোয়ার চেয়ারম্যান গ্রেফতার পর পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই ৯ মার্ডার মামলার আরেক আসামী ৬নং কাগাপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এরশাদ আলীকে পুলিশে গ্রেফতার করেছে এমন সংবাদ জানতে পেরে,মামলার আইও এসআই জাহাঙ্গীর আলম এর সাথে মুঠোফোনে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান,চেয়ারম্যান এরশাদ আলী গ্রেফতারের বিষয়টি সঠিক নয়।
এটা সম্পূর্ণ গুজব ও ভূয়া খবর।
উল্লেখ্য,বৈষম্য বিরোধী এক দফা ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগষ্টে পুলিশ ও আন্দোলনকারীর সংঘর্ষ বাঁধে।
এক পর্যায়ে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের গুলিতে কয়েকজন নিহত ও আহতের ঘটনা ঘটে।
তারপর সংঘর্ষটি ভয়াবহ
আকার ধারণ করে এবং আন্দোলনকারীগন চারদিক দিকে থানা ঘেরাও করে সকল পুলিশ সদস্যদেরকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন।
এসময় আন্দোলনকারীগন থানার আগ্নেয়াস্ত্র গুলাবারুদ লুটপাট করেন,এমনকি আগুন ধরিয়ে দিয়ে সরকারি সবকিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে,ভাংচুর,লুটপাটের তান্ডবলীলা চালিয়ে এক ধ্বংস যঞ্জে পরিনত করেন।
আন্দোলনকারীদের এমন মারমুখী অবস্থায় থানার ভিতর থেকে বের হওয়া সুহেল আখঞ্জি নামের এক সংবাদকর্মীকে হবিগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক ও সেনাবাহিনীর সামনে হত্যা করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন জেলা প্রশাসক নিজেই।
এছাড়াও দীর্ঘ ১৩ ঘন্টা থানার ছাঁদ এর উপরে সকল পুলিশ সদস্য অবরুদ্ধ থাকার পর সেনাবাহিনী সবাইকে রাত দেড়টার দিকে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন।
সারাটি দিনভর আন্দোলনকারীগন সন্তুশ চৌধুরী দাস নামের এক পুলিশ সদস্যর নামে স্লোগান দিয়ে যাচ্ছিলেন।
আর ১৩ ঘন্টা পর এই উদ্ধার কার্যক্রমের এক ফাঁকে সেই পুলিশ সদস্য থানার ভিতরে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীগন ভিতরে ডুকে পড়েন।
এবং সবাই একযোগে তাকে আঘাত করতে থাকেন।
আর এই সুযোগে সকল পুলিশ সদস্যকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে উঠিয়ে থানা ত্যাগ করে চলে যান সেনাবাহিনী।
পরে এই নাইন মার্ডারের পর পর থানার ওসি(তদন্ত)
আবু হানিফ ৬ হাজার অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এই এজাহারে দেখা যায়,ঐ দিন আন্দোলনকারীগন ঐ সবকিছু করেছে।
থানা জ্বালাও পুড়াও লুটপাটসহ সাংবাদিক ও পুলিশ হত্যার মতো ঘটনা গুলো ঘটিয়েছে।
যাহা দেশবাসী তথা বিশ্ববাসীও কিছুটা হলেও দেখেছেন।
কিন্তু এই মিথ্যা মামলায় একের পর এক আসামীদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
কিন্তু পুলিশের দায়ের করা মামলার নেই কোন অগ্রগতি এবং নেই কোন গ্রেফতার।।
বিষয়: #জিজ্ঞাসাবাদ #জেলগেট #মিয়া #রেখাছ