মঙ্গলবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সংঘর্ষ সামাল দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন হুজুরগন!
সংঘর্ষ সামাল দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন হুজুরগন!
” হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে জামাই শশুরের ধন্ধের জেরে প্রশাসনের উপস্থিতিতে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে বাড়িঘর ভাংচুর আহত অর্ধশতাধিক ”
আকিকুর রহমান:-
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা সদরের মজলিসপুর গ্রামে জামাই শশুরের ধন্ধের জেরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে শশুর জামাইয়ের লোকজনের মধ্যে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে বাড়িঘর ভাংচুর ও অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষের খবর পাওয়ার সাথে সাথে একদল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সামাল দিতে প্রানপ্রন চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে ব্যর্থ হয়ে মজলিসপুর মসজিদ এর সামনে দর্শকের ভূমিকায় অবস্থান নেওয়ার খবর পাওয়া যায়।
জানাযায়,৩০ নভেম্বর শনিবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে মুনসুর মেম্বারের লোকজনকে দেখে গতকাল আহত হওয়া নূর মোহাম্মদ মিয়ার লোকজন হামলার উদ্যেশে দাওয়া করেন।
এসময় ভয়ে দৌড়ে গিয়ে প্রান বাঁচাতে মজলিসপুর দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দা মখলিছউর রহমানের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন কয়েকজন।
এসময় এই বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য হাক ডাক শুরু করেন হামলাকারীরা।
এক প্রকার এই বাড়িতে হামলা চালিয়ে কেউ কেউ বাড়ির ভেতরে ডুকে পড়েন এবং ঘরের ভিতরে গিয়ে আশ্রয় নেওয়াদের উপরে হামলা চালান।
এসময় বাড়িঘর ভাংচুর করার অভিযোগ করেন বাড়ির লোকজন।
এই খবরটি মুনসুর মেম্বারের লোকজনের মধ্যে জানাজানি হয়ে পড়লে তারাও পুকুরের চারদিক থেকে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
আস্তে সংঘর্ষটি বিরাট আকার ধারণ করে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার সর্দার প্রধানগন চেষ্টা করেন এবং এক পর্যায়ে মসজিদের মাইকে মাইকিং করে তাদেরকে অনুরোধ করেন সংঘর্ষ সামাল দেওয়ার জন্য।
এমন পরিস্থিতিতে মাগরিবের আজানের পূর্বে বানিয়াচং দারুল কোরান মাদ্রাসা থেকে একদল হুজুর নারায়েতকবির আল্লাহু আকবর ধ্বনি আওয়াজ তুলে সরাসরি সংঘর্ষের মধ্যেস্হলে গিয়ে ডুকে পড়েন এবং তাদের প্রানপ্রন চেষ্টা ও সাহসিকতার কারনে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ সামাল দিতে সক্ষম হন।
বর্তমানে হুজুরদের এমন কর্মকার্নডের ভূমিকায় প্রশংসায় ভাসছেন তারা।
উল্লেখ্য,গতকাল হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং উত্তর পূর্ব ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মজলিসপুর গ্রামের ভিতরে ২৯ নভেম্বর(শুক্রবার)রাত আনুমানিক ৮টার দিকে জামাই মুনসুর মিয়ার লোকজনের হামলার শিকার হয়ে আপন চাচা শশুর আহত হয়ে সিলেট চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই ঘটনার জের ধরে ঐ গতরাত থেকে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তপ্ত বিরাজ করছিলো।
জানাযায়,
মজলিসপুর গ্রামের মৃত বাছির উল্বার পুত্র নূর মোহাম্মদ মিয়া(৬৬) মোটরসাইকেল যোগে বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন।
বাড়ি ফেরার পথে মাতাপুর মহল্লার ব্রীজ পাড় হয়ে মজলিসপুর গ্রামের ভিতরে পৌঁছা মাত্র ঐ পতি পক্ষ তার জামাতা ইউপি সদস্য মুনসুর মিয়ার লোকজন মোটরসাইকেল এর গতিরোধ করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে থাকে আহত করে পালিয়ে যায়।
এসময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এই হামলার ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে গ্রামে উত্তপ্ত বিরাজ করছে।
যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
অভিযোগে জানাযায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আপন ভাতিজীর জামাই এই ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মুনসুর মিয়া এই হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
মুনসুর মেম্বার তার আপন চাচা শশুর নূর মোহাম্মদ মিয়াকে হত্যার উদ্যেশেই এই হামলাটি চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন নূর মোহাম্মদ মিয়ার লোকজন।
এই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য জালাল মোহাম্মদ মিয়ার কন্যাকে বিয়ে করেন বর্তমান ইউপি সদস্য মুনসুর মিয়া।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে বলে মনে করেন আশপাশের মহল্লার লোকজন।
এই ঘটনার পর পর এলাকার একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছেন,
আজ রাত হওয়ায় সংঘর্ষ হবেনা তবে সকাল বেলা সংঘর্ষ হবে যে এটা নিশ্চিত করেই বলেন তিনি।
এই ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত করে নিজেদেরকে তৈরী করে হামলার পরিকল্পনার ছক তৈরী করে যাচ্ছেন বলেও সূত্রটি জানায়।
এছাড়াও এই ঘটনা নিয়ে সর্বশেষ রিপোর্ট লেখা কালীন সময় রাত ১১টা ৪০ মিনিটে জানাযায়,
আহত নূর মোহাম্মদ মিয়াকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তবে হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন।
উল্লেখ্য,
কিছুদিন পূর্বে মজলিসপুর গ্রামের মসজিদের মুতাওয়াল্লী নিয়ে এই দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।
এবং উভয় পক্ষের নারী-পুরুষসহ অনেকেই আহত হন।
পরে এই ঘটনাটি সালিসের মাধ্যমে বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের হলরুমে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও দেশের কিছু সর্দার প্রধান উপস্থিত থেকে উভয় পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছিলেন বলেও খবর পাওয়া যায়।
এদিকে সমাধানের কিছুদিন পর এক পক্ষ অন্য পক্ষের উপর সংঘর্ষের ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেন বলে খবর পাওয়া যায়।
এব্যাপারে ইউপি সদস্য মুনসুর মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার কোন সাড়া না পাওয়ায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে প্রশাসন এই হামলার ঘটনাটি অবগত হওয়ার পর পর মজলিসপুর গ্রামে সেনাবাহিনীর টহল টিম ও থানা পুলিশের টহল টিম পর্যবেক্ষন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রশাসন।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)কবির হোসন এর সাথে মুঠোফোনে রাত ১১টা ৫৩ মিনিটে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,ঘটনার পর পরই আমার থানা পুলিশ কয়েকবার এলাকা গিয়ে টহল দিয়েছেন।
এছাড়াও এই মুহূর্তে আমি নিজে পুলিশ নিয়ে মজলিসপুর গ্রামে রওয়ানা দিচ্ছি।
এ ব্যাপারে হামলার শিকার আহত নূর মোহাম্মদ মিয়ার সাথে থাকা তার ছেলে শুভ’র সাথে মোবাইল ফোনে সর্বশেষ রাত ১২ টার পর যোগাযোগ করা হলে,সে জানায় তার পিতাকে প্রথমে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে,
তারপর হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল নেওয়া হলে সেখান থেকে উনাকে রেফার করা হয় সিলেটে।
তার আব্বুকে নিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল হাসাপাতালের উদ্যেশে রওয়ানা দিয়েছেন এবং বর্তমানে নবীগঞ্জ অতিক্রম করেছেন বলে জানান।
আজ ৩০ নভেম্বর শনিবার সংঘর্ষের ব্যাপারে থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সামাল দিতে ঘটনাস্থলে রয়েছেন বলে জানান তারা।
বিষয়: #সংঘর্ষ #সামাল