

সোমবার ● ১০ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » খুলনা » দেশের উপকূলীয় নদী তীরবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক কোস্টগার্ড
দেশের উপকূলীয় নদী তীরবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক কোস্টগার্ড
মনির হোসেন
বাংলাদেশের সুবিশাল সমুদ্র এদেশের সমৃদ্ধির স্বর্ণদ্বার। সূচনালগ্ন হতে সমুদ্র ও সমুদ্রে নিহিত সম্পদকে যে কোন মূল্যে নিরাপদ রাখার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কোস্ট গার্ডের যাত্রা শুরু। সকল প্রতিকূলতা পেরিয়ে কালের পরিক্রমায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের জনগোষ্ঠী তথা দেশের আপামর জনগণের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষা, জলদস্যুতা ও বনদস্যুতা দমন, চোরাচালান, মাদক পাচার ও মানবপাচার রোধ, যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে নিবেদিত প্রাণ কোস্ট গার্ডের প্রতিটি সদস্য।
কোস্ট গার্ড দেশের সমুদ্র বন্দর সমূহ, বহিঃনোঙরে অবস্থানরত বৈদেশিক বাণিজ্যিক জাহাজসমূহ এবং অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলরত নৌযান সমূহের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ৭ খুনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে উক্ত এলাকা সমূহে ২৪ ঘণ্টাব্যাপী টহল প্রদানের ফলে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভবপর হয়েছে।
অভ্যন্তরীন নৌ রুটে চলাচলরত নৌযান সমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি নিয়মিত রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস ইত্যাদি যাচাই বাছাই করার মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়কে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ লাইটার/ট্যাংকারসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী ও ভোজ্য তেলবাহী জাহাজ সমূহকে নোঙ্গর এলাকায় ৭২ ঘন্টার বেশি অবস্থানের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসকল জাহাজ যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারে তা নিশ্চিতকরণে কোস্ট গার্ড সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ হতে অদ্যাবধি ১০৮৫ টি বাণিজ্যিক ও লাইটার জাহাজে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কোস্ট গার্ড কর্তৃক এধরনের অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে পবিত্র রমজান মাসে অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের ন্যায় ভোজ্য তেলের সংকট ও বাজার মূল্য হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।
বহিঃনোঙ্গরে ছিঁচকে চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক পাচার এবং বানিজ্যিক জাহাজে অবৈধভাবে ক্রয় বিক্রয় বন্ধের নিমিত্তে বছরব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বহিঃনোঙ্গর এবং বাণিজ্যিক জাহাজসমূহ হতে চোরাইকৃত মালামাল বিক্রয়ের স্থানে নিয়মিত যৌথ অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে এসকল অপরাধমূলক কার্যক্রম শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল নৌ রূটে চলাচলকারী যাত্রিবাহী জাহাজসমূহের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে যাত্রীগণ।
ঢাকা-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম নৌ রূটে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজের নিরাপত্তার অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করছে কোস্ট গার্ড। বাণিজ্যিক জাহাজসমূহে চুরি, ডাকাতিসহ অপরাধমূলক কার্যক্রম শূন্যের কোঠায় নেমে আসায় অভ্যন্তরীণ নৌ রুটে নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত হয়েছে।
এছাড়াও কোষ্ট গার্ড, সুন্দরবন ও সেন্টমার্টিনে ট্যুরিস্ট জাহাজের নিরাপত্তায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গহীন সুন্দরবনে ট্যুরিস্টদের জরুরি সেবা প্রদান এবং অসুস্থ ট্যুরিস্টদের দ্রুততার সাথে হাসপাতালে প্রেরণের মাধমে সুচিকিৎসা নিশ্চিত কল্পে অসামান্য অবদান রেখেছে কোস্ট গার্ড। যার ফলে পর্যটকগণ সুস্থ ও নিরাপদে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যেতে সক্ষম হচ্ছে।
সুনীল অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশীল করার লক্ষ্যে সমুদ্র, উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছে কোস্ট গার্ড। ভবিষ্যতেও কোস্ট গার্ডের উক্ত কার্যক্রমসমূহ অব্যাহত থাকবে।
বিষয়: #অঞ্চলে #উপকূলীয় #ও আস্থার #কোস্টগার্ড #তীরবর্তী #দেশের #নদী #নিরাপত্তা #প্রতীক