

বৃহস্পতিবার ● ১৭ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সারাদেশে একযোগে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট ৩৫টি সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান
সারাদেশে একযোগে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট ৩৫টি সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান
খন্দকার জালাল উদ্দীন :
দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে গতকাল ১৬ এপ্রিল সারাদেশে একযোগে ৩৫টি সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছে।
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, চিরিরবন্দর, দিনাজপুর -এ অভিযান পরিচালনাকালে একজন নকলনবিশের নিকট হতে ২৪,০০০/- টাকা ও একজন অফিস সহকারীর নিকট হতে ১১,৫০০/- টাকা হাতেনাতে উদ্ধার করা হয়। উক্ত টাকার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় নকলনবিশকে সাময়িক বরখাস্ত এবং অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে মর্মে জেলা রেজিস্ট্রার টিমকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, খোকসা, কুষ্টিয়া -তে নাইট গার্ডের নিকট হতে ৪০,০০০/- টাকা পাওয়া যায়, যার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি। এছাড়াও অফিস কার্যক্রমে অনিয়ম ও অসঙ্গতির সত্যতা পাওয়া যায়।
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ -এ সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ আদায়, ৫২(খ) রশিদ বহিতে গরমিল এবং মোহরাদের দ্বারা দলিল প্রতি ১,৯০০/- থেকে ২,০০০/- টাকা পর্যন্ত আদায়ের প্রমাণ পাওয়া যায়।
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, গোয়াইনঘাট, সিলেট -এ আবাসিক ভূমি রেজিস্ট্রেশন, নকল উত্তোলনসহ প্রতিটি ধাপে ঘুষ লেনদেনের তথ্য সেবাগ্রহীতাদের সাক্ষ্যে উঠে আসে। একজন ভুক্তভোগী জানান, একটি দলিল সম্পন্ন করতে তাকে ৪০,০০০/- টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে।
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, যশোর সদর –এ এক অফিস সহকারীর টেবিল থেকে ৫,১০০/- টাকা উদ্ধার করা হয় যার উৎস সম্পর্কে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এছাড়া, এক নকলনবিশ পূর্বে আত্মসাতের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন।
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, খুলনা সদর -এ ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে ঘুষ গ্রহণ, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, রেকর্ডপত্রে অসঙ্গতি এবং দালালদের সক্রিয়তা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। কয়েকজনকে জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সোপর্দ করা হয়।
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, গৌরীপুর, ময়মনসিংহ -এ একজন উমেদার সরকারের নির্ধারিত ফি’এর অতিরিক্ত অর্থ দাবি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, চট্টগ্রাম -এ সাবেক এক অফিস সহকারীকে অনুমোদন ব্যতিরেকে বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাখ্যান এবং ১৯ জন নকলনবিশ নিয়োগে অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা রেজিস্ট্রারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এছাড়া, এক পদোন্নতিতে সিনিয়রদের উপেক্ষা ও দূরবর্তী কর্মকর্তা দ্বারা অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদানের প্রেক্ষিতে রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে।
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, লাহিড়ী, ঠাকুরগাঁও –এ বায়না ও কবলা দলিল সম্পাদনে অনিয়ম এবং নকল পেতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, বরিশাল সদর -এ চর বদনা মৌজায় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও দলিল সম্পাদন এবং উৎস কর জমা না দিয়েই দলিল সম্পাদনের তথ্য পাওয়া যায়, যা পরবর্তীতে প্রমাণ ছাড়াই সমন্বয় করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, কালিহাতী, টাঙ্গাইল -এ সাবেক সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে অসাধু উদ্দেশ্যে হয়রানি ও সামান্য তথ্যগত অমিল দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়।
সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, শরীয়তপুর সদর –এ শ্রেণি পরিবর্তনের মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রেশন করে ৩৮,৮৩,৫০৫/- টাকা রাজস্ব ক্ষতির তথ্য প্রমাণসহ উদঘাটিত হয়।
এছাড়াও সাব-রেজিস্ট্রারের অফিস, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, সরিষাবাড়ি, জামালপুর, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, কাহালু, বগুড়া, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, মোরেলগঞ্জ, বাগেরহাট, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, রাজাপুর, ঝালকাঠি, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, ইটনা, কিশোরগঞ্জ, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, গাজীপুর সদর, গাজীপুর, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, কালিহাতী, টাঙ্গাইল, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, নওগাঁ সদর, নওগাঁ, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, পাবনা সদর, পাবনা, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ সদর, নারায়ণগঞ্জ, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, নোয়াখালী সদর, নোয়াখালী, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, গোদাগাড়ী, রাজশাহী, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, গঙ্গাচড়া, রংপুর, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, বালিয়াডাঙ্গী, ঠাকুরগাঁও, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, বাউফল, পটুয়াখালী, এবং সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, মিরপুর (বিশিল), ঢাকা–এ অভিযান পরিচালনা করে সরকার নির্ধারিত ফি’এর অতিরিক্ত অর্থ আদায়, হয়ারানি, দালাল চক্রের সক্রিয়তা এবং রেকর্ডপত্রে অসঙ্গতির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।
সকল অভিযানসমূহে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত এনফোর্সমেন্ট টিমসমূহ কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
বিষয়: #সারাদেশে একযোগে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট ৩৫টি সাব-রেজিস্
